ভাঙচুর: ধনেখালির গুড়াপে তৃণমূলের দলীয় কার্যালয়ে। —নিজস্ব িচত্র
নির্বাচনের ফল প্রকাশের পর থেকে হুগলি লোকসভা কেন্দ্রের নানা প্রান্তে তৃণমূলের কার্যালয়ে ভাঙচুরের অভিযোগ উঠল বিজেপির বিরুদ্ধে। কোনও ক্ষেত্রেই অবশ্য বিজেপি অভিযোগ মানেনি। সব ক্ষেত্রেই অভিযোগ খতিয়ে দেখা হচ্ছে বলে পুলিশ জানিয়েছে।
বৃহস্পতিবার রাত থেকেই তৃণমূলের ধনেখালির খাজুরদহ, গুড়বাড়ি-১ এবং শিবাইচণ্ডী এলাকার দলীয় কার্যালয়ে বিজেপি সমর্থকেরা হামলা চালায় বলে অভিযোগ। খাজুরদহের কার্যালয় থেকে টিভি খুলে নেওয়া হয় এবং কাঁকরাকুলি এলাকায় এক তৃণমূল নেতার মোটরবাইকে আগুন লাগিয়ে দেওয়া হয় বলে অভিযোগ। ধনেখালি-২ পঞ্চায়েতের উপপ্রধান তৃণমূলের সুপ্রভাত বিশ্বাস আক্রান্ত হন। ধনেখালি বিধায়ক অসীমা পাত্রের বাড়ির কাছেও বিজেপির সর্মথকেরা জমায়েত করে বলে অভিযোগ।
ধনেখালির তৃণমূল বিধায়ক অসীমা পাত্র বলেন, ‘‘এতদিন বিজেপি-র লকেট চট্টোপাধ্যায় বলছিলেন, তৃণমূল অত্যাচার করছে। আর জেতার ২৪ ঘণ্টার মধ্যে বিজেপি ধনেখালিতে অত্যাচার শুরু করে দিল। আমাদের দলীয় কার্যালয় থেকে টিভি পর্যন্ত খুলে নিয়ে গেল। মোটরবাইকে আগুন দেওয়া হল।’’ সদ্যজয়ী বিজেপি প্রার্থী লকেটের দাবি, ‘‘অসীমাদেবীর বাড়ির কাছে আমাদের দলের লোকজনের জমায়েত বা পার্টি অফিস ভাঙচুরের বিষয়টি আমার কাছে আসেনি।’’
চন্দননগরেও কুণ্ডুঘাট, বক্সিগলি, চুঁচুড়া, ব্যান্ডেল এবং কাপাসডাঙা এলাকায় তৃণমূলের কার্যালয় ভাঙার অভিযোগ ওঠে বিজেপির বিরুদ্ধে। গোন্দলপাড়া এলাকার এক তৃণমূল সমর্থকের চায়ের দোকান ভাঙচুর করা হয়। চন্দননগরের তৃণমূল নেতা অনিমেষ বন্দ্যোপাধ্যায়ের অভিযোগ, ‘‘ফল ঘোষণার পর থেকে কিছু বিজেপি সমর্থক মোটরবাইক নিয়ে ‘জয় শ্রীরাম’ ধ্বনি তুলে এলাকা দাপিয়ে বেড়াচ্ছে। নানা জায়গায় ভাঙচুর চালিয়েছে। আমার বাড়িতেও ইট ছুড়েছে।’’
অভিযোগ উড়িয়ে বিজেপির চন্দননগর মণ্ডলের নেতা বৈদিক পার্থ নারায়ণ ভট্টাচার্যের দাবি, ‘‘ওই ঘটনাগুলির সঙ্গে দলের কোনও যোগ নেই। এটা তৃণমূলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের ফল। ওদের পায়ের তলার মাটি সরে গিয়েছে।’’ তবে, জেতার পরে দলীয় কর্মী-সমর্থকদের সতর্ক করেছেন বিজেপির জেলা সদর মণ্ডলের সভাপতি সুবীর নাগ। তিনি বলেন,‘‘কোনও ধরনের বেয়াদপি দল বরদাস্ত করব না। তৃণমূল গ্রামেগঞ্জে সাধারণ মানুষের উপরে যে ধরনের অত্যাচার করেছে, আমাদের কেউ সেই আচরণ ফিরিয়ে দিলে সেটা দলের পক্ষে মঙ্গল হবে না।’’
অন্যদিকে, সিঙ্গুরের বড়ায় বৃহস্পতিবার রাতে আরএসএস এবং বিজেপি সমর্থকদের মধ্যে মারপিট বাধে। দু’জন আহত হন। বিজেপি নেতারা বিষয়টি ছোটখাটো সমস্যা বলে এড়িয়ে গিয়েছেন। পুলিশ জানিয়েছে, শুক্রবার রাত পর্যন্ত ওই ঘটনায় থানায় কোনও অভিযোগ দায়ের করা হয়নি।