জখম ১২, গ্রেফতার দু’পক্ষের ৩

টিএমসিপি এবিভিপি সংঘর্ষ ইটাচুনা কলেজে 

এবিভিপি নেতৃত্বের অভিযোগ, তাঁদের সংগঠনের নেতা সন্দীপ রায় কয়েক জন কর্মীর সঙ্গে কথা বলছিলেন। তখনই টিএমসিপি-র ছেলেরা তাঁদের উপরে হামলা চালায়।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা 

পান্ডুয়া শেষ আপডেট: ১৬ জুলাই ২০১৯ ০১:৪০
Share:

রক্তাক্ত: হাসপাতালে চিকিৎসাধীন এক জখম ছাত্র। ছবি: সুশান্ত সরকার

ফের টিএমসিপি-এবিভিপি সংঘর্ষে সোমবার সকালে তেতে উঠল হুগলির খন্যানের ইটাচুনা বিজয়নারায়ণ মহাবিদ্যালয়। দু’পক্ষের অন্তত ১২ জন আহত হয়েছেন। পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি সামলায়। ঘটনায় জড়িত অভিযোগে তিন জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।

Advertisement

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রের খবর, সকাল ১০টা নাগাদ কলেজ চত্বরে তৃণমূল ও বিজেপির ছাত্র সংগঠনের নেতা-কর্মীদের মধ্যে বচসা বাধে। তা থেকে মারামারি শুরু হয়। ক্যাম্পাসের বাইরেও গোলমাল ছড়ায়। এ দিনই প্রথম বর্ষের ক্লাস চালু হয়। লাঠিসোটা হাতে দাপাদাপি দেখে সাধারণ ছাত্রছাত্রীরা ভয়ে তটস্থ হয়ে যান। খবর পেয়ে হুগলি জেলা গ্রামীণ পুলিশের ডিএসপি (ক্রাইম) শুভাশিস চৌধুরী, স্থানীয় সার্কেল ইনস্পেক্টর অরূপ ভৌমিক, পান্ডুয়া থানার ওসি সুব্রত দাস বাহি‌নী নিয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি সামাল দেন। ততক্ষণে মারামারিতে কারও মাথা ফেটে রক্ত ঝরছে। কারও চোট লেগেছে হাতে। কেউ রাস্তায় পড়ে কাতরাচ্ছেন‌। দু’পক্ষই পান্ডুয়া থানায় পরস্পরের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করে। মাসখানেক আগেও এই কলেজে দু’পক্ষের অশান্তি হয়েছিল। পুলিশ জানিয়েছে, এ বারের অভিযোগের তদন্ত করে উপযুক্ত ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।

এবিভিপি নেতৃত্বের অভিযোগ, তাঁদের সংগঠনের নেতা সন্দীপ রায় কয়েক জন কর্মীর সঙ্গে কথা বলছিলেন। তখনই টিএমসিপি-র ছেলেরা তাঁদের উপরে হামলা চালায়। চার জন আহত হন। তাঁদের ইটাচুনা গ্রামীণ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। তিন জনের প্রাথমিক চিকিৎসা হয়। আঘাত গুরুতর থাকায় অপর জনকে চুঁচুড়া ইমামবাড়া হাসপাতালে স্থানান্তরিত করা হয়। এবিভিপি নেতা রাজেশ সরকারের অভিযোগ, ‘‘ওরা বিনা প্ররোচনায় আমাদের ছেলেদের বেধড়ক লাঠিপেটা করে।’’

Advertisement

অভিযোগ উড়িয়ে টিএমসিপি নেতৃত্বের পাল্টা দাবি, এবিভিপি-র ছেলেরাই টিএমসিপি-র ছেলেদের বেধড়ক মারে। মাটিতে ফেলে কিল, চড়, ঘুষি, লাঠিপেটা কিছুই বাদ রাখেনি। তাতে আট জন টিএমসিপি নেতা-কর্মী জখম হন। তাঁদের ইটাচুনা গ্রামীণ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। তিন জনের প্রাথমিক চিকিৎসা হয়। বাকিদের ইমামবাড়া হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।

জেলা টিএমসিপি সভাপতি গোপাল রায়ের দাবি, ‘‘আমাদের ছেলেরা ক্লাসে গিয়ে ২১ জুলাইয়ের সমাবেশ নিয়ে নতুন পড়ুয়াদের বোঝাচ্ছিলেন। সেখান থেকে বেরোতেই এবিভিপির গুটিকতক ছেলেকে নিয়ে বিজেপির লোকেরা হামলা চালায়। আহতদের নিয়ে হাসপাতা‌লে যাওয়ার পথেও দু’জনকে মারে। কলেজ ক্যাম্পাসে বহিরাগতদের প্রবেশ নিষিদ্ধ করুন কলেজ কর্তৃপক্ষ।’’ তাঁর অভিযোগ, ‘‘জেলায় একটা আসন জিতেই বিজেপি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানেও গুন্ডামি করছে।’’

কলেজ ক্যাম্পাসে সংঘর্ষের কথা মানেননি কলেজ কর্তৃপক্ষ। অধ্যক্ষ গৌতম বীটের দাবি, ‘‘ক্যাম্পাসে গোলমাল হচ্ছিল। তা দেখে দু’পক্ষকে ডেকে মিটিয়ে দিই। পরে শুনি, ক্যাম্পাসের বাইরে মারামারি হয়েছে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন