মিষ্টিমুখ: বিশ্বকাপে যোগদানকারী বিভিন্ন দেশের পতাকার সাজ সন্দেশে। নিজস্ব চিত্র
রাশিয়ার মাঠে মেসির পেনাল্টি বিপক্ষের গোলরক্ষক আটকে দিতেই রিষড়ায় টিভির সামনে বসে তীর্যক হেসেছিলেন শ্বশুরমশাই। তার এক দিন পরেই নেইমার বোতলবন্দি হতেই কটাক্ষ ফিরিয়ে দিয়েছেন বাবাজীবনও।
বিশ্বকাপ শুরু হতেই আম-বাঙালির কেউ আর্জেন্টিনার জন্য ভগবানকে ডাকছেন। কেউ ব্রাজিলের জন্য মাথা কুটছেন। প্রথম ম্যাচ হেরেও কেউ গলা ফাটাচ্ছেন জার্মানির হয়ে। একই বাড়িতে উড়ছে ভিন্ন দেশের পতাকা। এমন বিশ্বকাপ-তিথির মাঝেই হাজির জামাইষষ্ঠীও। যে পার্বণ মানে শ্বশুরবাড়িতে জামাইয়ের পাত পেড়ে খাওয়ার বিপুল আয়োজন। বিশ্বকাপ-ঋতুতে তাই জামাইদের পাতে পড়বে বিশ্বকাপের রেপ্লিকা। আস্ত ফুটবল। সবটাই সন্দেশের তৈরি। বিভিন্ন দেশের পতাকার আদলে তৈরি সন্দেশও হাজির।
শ্রীরামপুরের বটতলা এলাকার একটি দোকানে তৈরি করা হয়েছে মিষ্টির থালি। তাতে সন্দেশের তৈরি শাশুড়ি-জামাই। সামনে আর্জেন্টিনা, ব্রাজিল বা জার্মানির পতাকার রঙে সন্দেশ। এক পাশে সন্দেশ-ফুটবল। এই তিন দলের পতাকারই চাহিদা বেশি। তবে অন্য দেশের পতাকার রঙের সন্দেশও মিলবে। বিশেষ এই মিষ্টি মিলছে ১৭০ টাকা থেকে ১২০০ টাকার মধ্যে।
রিষড়ার বাঁশতলায় জিটি রোডের ধারের একটি দোকানে চমক— সন্দেশের তৈরি বিশ্বকাপের রেপ্লিকা। বিশ্বকাপের আদল দেখে অনেকেই তা কিনছেন। দাম ৫০, ৮০, ১০০ টাকা। এ ছাড়াও ব্রাজিল, আর্জেন্টিনা, জার্মানির পতাকার ধাঁচে তৈরি সন্দেশ তো রয়েছেই। সেগুলি মিলছে ৫০ থেকে ২০০ টাকায়।
রিষড়ার বাসিন্দা সুপ্রিয় দাশগুপ্ত ময়দানে বড় দলে খেলা ফুটবলার। তিনি ব্রাজিল ভক্ত। রিষড়ায় তাঁর শ্বশুরবাড়িতেও ফুটবলের আবহ। শ্বশুরমশাই সোমনাথ গড়গড়ি অবশ্য চলেন জামাইয়ের উল্টোপথে। তিনি জার্মানির সমর্থক। জার্মানদের লড়াকু মানসিকতাকে তিনি সেলাম ঠোকেন। তবে ফুটবলে না হলেও জামাইষষ্ঠীর মিষ্টিতে বাবাজীবনের মন রাখতে চেয়েছেন তিনি। ব্রাজিলের পতাকার সন্দেশের ‘অর্ডার’ দিয়েছেন।
রিষড়া পুরসভার কাউন্সিলর তথা আরামবাগের তৃণমূল সাংসদ অপরূপা পোদ্দারের স্বামী সাকির আলি আর্জেন্টিনা অন্ত প্রাণ। শ্বশুরমশাই রাধাগোবিন্দ পোদ্দার ব্রাজিলের অন্ধ ভক্ত। বিশ্বকাপের প্রথম ম্যাচে দু’দলই ড্র করায় শ্বশুর-জামাইয়ের ম্যাচও আপাতত অমীমাংসিত। সাকির বলছেন, ‘‘শ্বশুরমশাই খেলা নিয়ে এক চুল জমি ছাড়েন না। বাজারে গেলে নির্ঘাত ব্রাজিলের মিষ্টি নিয়ে আসবেন। তার আগে আমিই আর্জেন্টিনার সন্দেশ নিয়ে যাব।’’