ওঝার কেরামতিতে দগ্ধ মহিলা হাসপাতালে

মাথায়, গলায়, বুকে দগদগে ক্ষত, আগুনে ঝলসে গিয়েছে মাথার চুলও। বছর চল্লিশের অগ্নিদগ্ধ এক মহিলাকে মঙ্গলবার সন্ধ্যায় ভর্তি করানো হয় আরামবাগ মহকুমা হাসপাতালে। তাঁর পরিবারের অভিযোগ, শ্বশুরবাড়ির লোকজন ওঝার কাছে নিয়ে গিয়ে ওই হাল করেছেন।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

গোঘাট শেষ আপডেট: ২৮ নভেম্বর ২০১৮ ০০:৩২
Share:

প্রতীকী ছবি।

মাথায়, গলায়, বুকে দগদগে ক্ষত, আগুনে ঝলসে গিয়েছে মাথার চুলও। বছর চল্লিশের অগ্নিদগ্ধ এক মহিলাকে মঙ্গলবার সন্ধ্যায় ভর্তি করানো হয় আরামবাগ মহকুমা হাসপাতালে। তাঁর পরিবারের অভিযোগ, শ্বশুরবাড়ির লোকজন ওঝার কাছে নিয়ে গিয়ে ওই হাল করেছেন।

Advertisement

হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে, জখম মহিলার নাম বন্দনা মাণ্ডি। গোঘাটের বড়ডাঙার বাসিন্দা বন্দনার শাশুড়ি আর বিবাহিত ননদই তাঁকে ওঝার কাছে নিয়ে গিয়েছিলেন বলে অভিযোগ। যদিও রাত পর্যন্ত থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেননি বন্দনার বাপের বাড়ির লোকজন।

এ দিন হাসপাতালে বন্দনার স্বামী বাসুদেব মাণ্ডি বলেন, ‘‘দিন কয়েক ধরে একা একাই বি়ড়বিড় করছিল আমার স্ত্রী। তাই আমার মা আর দিদি ওকে ভূতে ধরেছে বলে ওঝার কাছে নিয়ে গিয়েছিল। অনেকবার নিষেধ করেছিলাম। আমার কোনও কথাই শুনল না ওরা।’’

Advertisement

বন্দনার বোন কল্পনা টুডু জানান, তাঁরা আদতে বর্ধমানের মাধবডিহির বাসিন্দা। সোমবার বন্দনার শাশুড়ি মুগলি মাণ্ডি ও ননদ শেফালি হেমব্রম তাঁকে কুমারগঞ্জের আদিবাসী পাড়ায় এখ ওঝার কাছে নিয়ে যান। ফোন করে ডেকে পাঠানো হয় বন্দনার মা সুমিত্রা সরেনকেও। ভূতে ধরেছে বলে ঝাড়ফুক শুরু করে ওঝা। শরীরের নানা জায়গায় আগুনের ছেঁকা দেওয়া হয় বার বার। গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়লে বন্দনাকে নিয়ে আরামবাগের নৈসরাইয়ে ছোট মেয়ের বাড়ি চলে আসেন সুমিত্রা। তারপর কল্পনাই হাসপাতালে নিয়ে যান তাঁর দিদিকে।

কল্পনা এ দিন বলেন, ‘‘শুধু জামাইবাবুর মুখ চেয়ে আমরা দিদির শাশুড়ি আর ননদের নামে অভিযোগ করিনি। কিন্তু ওঝার নামে পুলিশে লিখিত অভিযোগ করব, দিদি একটু সুস্থ হলেই।’’ পুলিশ জানিয়েছে, লি‌খিত অভিযোগ হলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তবে তারাও খোঁজ খবর নিয়ে বিষয়টি জানার চেষ্টা করছে। জেলা পুলিশের এক কর্তা জানিয়েছেন, বিভিন্ন স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের মাধ্যমে কুসংস্কারের বিরুদ্ধে প্রচার চালানো হয়। ওই এলাকায় বিশেষ নজরদারি চালানো হবে বলেও জানানো হয়েছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন