Dhulagari Market

ধূলাগড়ি বাজার চালুই, ক্ষোভ ব্যবসায়ীদের

এই বাজারের ব্যবসায়ী এবং মোটবাহক শ্রমিকদের একটি অংশ জানিয়েছেন, প্রশাসন চাইছে না বাজারটি বন্ধ হোক।

Advertisement

নুরুল আবসার

সাঁকরাইল শেষ আপডেট: ২৭ এপ্রিল ২০২০ ০১:৫৫
Share:

প্রতীকী ছবি

হাওড়া জেলাকে ‘হটস্পট’ ঘোষণা করা হয়েছে। শহর এবং গ্রাম মিলিয়ে অন্তত ৩৫টি জায়গাকে ‘গণ্ডিবদ্ধ’ করা হয়েছে। এই পরিস্থিতিতে শহরের নাকের ডগায় রমরমিয়ে চলা ধূলাগড়ি পাইকারি আনাজ বাজার ঘিরে বিতর্ক তৈরি হয়েছে। গত ২৪ এপ্রিল থেকে এই বাজার বন্ধ করে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেন বাজারের মোটবাহক শ্রমিক এবং ব্যবসায়ীরা। কিন্তু সেই সিদ্ধান্তের পরেও বাজারটি বন্ধ হয়নি। বাজারটি চলার ফলে শ্রমিক এবং ব্যবসায়ীদের একটা বড় অংশের মধ্যে ক্ষোভ দেখা দিয়েছে।

Advertisement

কেন বন্ধ হল না বাজার?

এই বাজারের ব্যবসায়ী এবং মোটবাহক শ্রমিকদের একটি অংশ জানিয়েছেন, প্রশাসন চাইছে না বাজারটি বন্ধ হোক। প্রশাসনের একটি সূত্রের খবর, বাজারটি যাতে বন্ধ না হয় সে জন্য জেলা প্রশাসনের তরফ থেকে ২৪ এপ্রিল থেকেই তৎপরতা দেখানো হয়। জেলার প্রায় প্রতিটি পাইকারি আনাজ বাজার বন্ধ হয়ে গিয়েছে। ফলে এই পাইকারি বাজারই জেলার আনাজ জোগানের একমাত্র কেন্দ্রে পরিণত হয়েছে। এখান থেকে শুধু যে হাওড়া নয়, পূর্ব মেদিনীপুর, পশ্চিম মেদিনীপুর এবং কলকাতার একটি অংশেও আনাজ যায়। জেলার বিভিন্ন সরকারি নিভৃতবাস এবং করোনা হাসপাতালেও এখান থেকে আনাজ যায়। ফলে বাজারটি বন্ধ হয়ে গেলে বিভিন্ন খুচরো বাজারেই যে শুধু আনাজের টান পড়বে তা নয়, হাসপাতালও বিপাকে পড়ে যাবে।

Advertisement

২৪ এপ্রিল বিকেলে কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রকের প্রতিনিধিদল ফুলেশ্বরের একটি নার্সিংহোমে পরিদর্শনে আসে। বেসরকারি এই হাসপাতালটিকে সরকার করোনা হাসপাতাল করেছে। বাজারের বাইরে যে ভিড় ছিল তা সরিয়ে দেওয়া হয়। জেলা প্রশাসন সূত্রের খবর, বাজারটি মুম্বই রোডের ধারেই অবস্থিত। ভিড় যাতে কেন্দ্রীয় প্রতিনিধিদলের চোখে না পড়ে সেইজন্যই এটা করা হয়। কারণ, কেন্দ্রীয় প্রতিনিধিরা ভিড় দেখতে পেলেই হয়তো বাজারটি সরকারিভাবে বন্ধ করার নির্দেশ দিতেন।

বাজারটিতে দুই ২৪ পরগনা, হাওড়া এবং হুগলি থেকে আনাজ এনে পাইকারি বিক্রি করেন অনেকেই। বাজারে প্রায় ৫০০ মোটবাহক শ্রমিক আছেন। এ ছাড়াও আসেন কয়েক হাজার খুচরো আনাজ ক্রেতা। এখানে দূরত্ব বিধি বজায় রাখা ‘আকাশ কুসুম’ কল্পনা বলে মনে করেন ব্যবসায়ী এবং মোটবাহকরা। ধুলাগড়ি ট্রাক টার্মিনালে ছোট-বড় মিলিয়ে প্রায় ৩০০ আনাজের ট্রাক আসে। ট্রাক টার্মিনাল কর্তৃপক্ষও হাওড়া সিটি পুলিশকে চিঠি দিয়ে বাজার বন্ধ করার জন্য অনুরোধ করেছিলেন। কিন্তু বাজারটি বন্ধ না হওয়ায় সবার মধ্যেই দুশ্চিন্তা দেখা দিয়েছে।

এই বাজারের শ্রমিক সংগঠনের নেতা মহম্মদ সিদ্দিক বলেন, ‘‘ধরে নিচ্ছি বাজার বন্ধ রাখলে অসুবিধা হবে। সেক্ষেত্রে আমরা প্রশাসনের বিভিন্ন মহলে লিখিতভাবে পরামর্শ দিয়েছিলাম এখানে অনেক জমি ফাঁকা পড়ে আছে। বাজারটিকে সেই সব জমিতে ছড়িয়ে দেওয়া হোক। বিভিন্ন জায়গায় বাজারটি ছড়িয়ে গেলে ভিড় কম হবে। শারীরিক দূরত্বও বজায় রাখাও সম্ভব হবে। কিন্তু সেটাও করা হল না।’

বাজার বিকেন্দ্রীকরণের এই প্রস্তাব নিয়েও জেলা প্রশাসনের কারও কাছ থেকে কোনও বক্তব্য মেলেনি।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন