পারাপার: শনিবার বিকেলে রানিঘাটে। ছবি: তাপস ঘোষ
আজ, রবিবার রাজ্যে সপ্তম তথা শেষ দফা নির্বাচন হতে চলেছে মোট ৯টি কেন্দ্রে। কলকাতার দু’টি-সহ ভোট হবে উত্তর ও দক্ষিণ ২৪ পরগনার সাতটি কেন্দ্রেও। অবাঞ্ছিত লোকজন ঢুকে যাতে অশান্তি করতে না-পারে, সে জন্য হুগলি এবং হাওড়ায় গঙ্গার সব ফেরিঘাট বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নিল প্রশাসন। হাওড়া স্টেশন হয়ে জলপথে কলকাতায় ঢোকার রাস্তাও বন্ধ থাকছে। চলবে না কোনও ভেসেল. নিবার রাত আটটা থেকে ওই নির্দেশ কার্যকর করা হয়েছে। আজ রাত ৮টা পর্যন্ত তা বলবৎ থাকবে।
শুক্রবার হুগলির জেলাশাসকের তরফে সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন দফতরে পাঠানো নির্দেশিকায় জানানো হয়, শ্রীরামপুর, চন্দননগর এবং চুঁচুড়া সদর মহকুমায় সব ফেরিঘাট বন্ধ থাকবে। উত্তরপাড়া থেকে গুপ্তিপাড়া পর্যন্ত গঙ্গায় অন্তত ১৫টি ফেরিঘাট রয়েছে। উত্তরপাড়া, কোন্নগর, রিষড়া, শ্রীরামপুর, শেওড়াফুলি, ভদ্রেশ্বর, চন্দননগর, চুঁচুড়া, বাঁশবেড়িয়ার বিভিন্ন ঘাট পেরিয়ে উত্তর ২৪ পরগনার আড়িয়াদহ, পানিহাটি, খড়দহ, ব্যারাকপুর, জগদ্দল, নৈহাটি-সহ বিভিন্ন জায়গায় যাওয়া যায়। সেখান থেকে সহজেই কলকাতায় পৌঁছনো সম্ভব। ত্রিবেণী, জিরাট, বলাগড়, গুপ্তিপাড়া ঘাট পেরিয়ে নদিয়ার বিভিন্ন এলাকায় যাওয়া যায়।
হুগলি জেলা প্রশাসনের এক পদস্থ কর্তা বলেন, ‘‘ভোটের দিন কোনও রকম অশান্তি এড়াতেই গঙ্গাবক্ষে পারাপার বন্ধের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। ভোট মিটলে রবিবার রাত থেকে ফেরি চলাচল স্বাভাবিক হয়ে যাবে।’’ চন্দননগর কমিশনারেটের এক আধিকারিক বলেন, ‘‘যথাযথ ভাবে নির্দেশ পালন করা হবে। ফেরিঘাটে পুলিশের নজর থাকবে।’’
নদীপথে কলকাতা এবং দক্ষিণ ২৪ পরগনার সঙ্গে হাওড়ার যোগাযোগ আছে। সাঁকরাইলের নাজিরগঞ্জ, সারেঙ্গা, পোদড়া, মানিকপুর ও নলপুর থেকে দক্ষিণ ২৪ পরগনার মেটিয়াবুরুজ ও বজবজে যাওয়া যায়। বাউড়িয়া, চেঙ্গাইল, উলুবেড়িয়া, শ্যামপুরের ৫৮ গেট, শিবগঞ্জ এবং গাদিয়াড়া খেয়াঘাট থেকে দক্ষিণ ২৪ পরগনার আছিপুর, বুরুল, নৈনান, নুরপুর প্রভৃতি এলাকায় যাতায়াত করা যায়। কিন্তু আজ সে রাস্তা বন্ধ।
হাওড়া গ্রামীণ জেলা পুলিশ সূত্রের খবর, অবাঞ্ছিত লোকজন যাতে হাওড়ার দিক থেকে নদীপথে ঢুকে পড়তে না-পারে, সে জন্য সব খেয়াঘাট বন্ধ থাকবে। এক পুলিশকর্তা জানান, পরিবহণ দফতরের তরফে এই সব খেয়াঘাট বন্ধের কথা পুলিশকে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে।
গাদিয়াড়া এলাকার বাসিন্দারা অবশ্য ১৪ মে থেকেই জলপথে সে ভাবে নুরপুর বা পূর্ব মেদিনীপুরের গেঁওখালি যাতায়াত করতে পারছেন না। কারণ, সে দিন থেকে গাদিয়াড়া খেয়াঘাটের তিনটি লঞ্চই নির্বাচনের কাজে চলে গিয়েছে। ওই দু’টি রুটে লঞ্চ পরিষেবা দেয় হুগলি নদী জলপথ পরিবহণ সমবায় সমিতি।
গাদিয়াড়া জেটিতে ওই সমিতির পক্ষে দায়িত্বপ্রাপ্ত আধিকারিক উত্তম রায়চৌধুরী বলেন, ‘‘অন্তত একটি লঞ্চ ফিরিয়ে দেওয়ার জন্য আমরা রাজ্য নির্বাচন দফতরে আবেদন করেছিলাম। কিন্তু কাজ হয়নি। আগামী ২১ মে লঞ্চগুলি ফিরে পাওয়া যাবে। তার আগে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হবে না।’’
চার দিন গাদিয়াড়া থেকে একটি ভেসেলের মাধ্যমে নুরপুর ও গেঁওখালিতে পারাপার চলছিল। কিন্তু দুই খেয়াঘাটে ভেসেলের জন্য বিশেষ জেটি না-থাকায় যাত্রীরা সমস্যায় পড়ছিলেন। তাঁদের ওঠা-নামার জন্য মই ব্যবহার করা হচ্ছিল। আজ, সেই ভেসেল চলাচলও বন্ধ থাকছে।