শান্ত ভোলার হঠাত্ তাণ্ডবে তটস্থ চুঁচুড়া

এত দিন ভোলাকে দেখলেই তার গায়ে হাত ঠেকিয়ে প্রণাম করতেন এলাকার মানুষ। কিন্তু সোমবার থেকে তাঁরাই ভোলার নাম শুনে নিরাপদ আশ্রয় খুঁজছেন।

Advertisement

তাপস ঘোষ

শেষ আপডেট: ১২ জুলাই ২০১৭ ১২:১০
Share:

গুঁতো: এই ভোলার দাপটে অস্থির এলাকার বাসিন্দারা। নিজস্ব চিত্র

এলাকার মানুষের সকলের কাছেই সে ভোলা নামে পরিচিত। সারা দিন আপনমনে ঘুরে বেড়াত, সকলের হাত থেকেই খাবার খেত। কারও ক্ষতি করত না। কেউ খেতে না দিলেও কিছু বলত না।

Advertisement

তবে গত সোমবার সন্ধ্যা থেকেই হঠাৎ ক্ষেপে গিয়েছে ভোলা। মানুষ দেখলেই তাড়া করছে সে। কেউ মুখোমুখি হয়ে পড়লে সোজা শিংয়ের গুঁতো দিয়ে জখম করছে। চুঁচুড়া স্টেশন চত্বরের ময়নাডাঙা, রামমন্দির, বঙ্কিমকানন, টালিখোলা, ভগবতীডাঙা-সহ বিভিন্ন এলাকায় সোমবার রাত থেকে দাপিয়ে বেড়াচ্ছে ভোলা। তার শিংয়ের গুঁতোয় এখনও পর্যন্ত আহতের সংখ্যা ১০। উল্টে দিয়েছে একটি মোটরবাইক।

যেহেতু রাতের বেলা থেকে তার দাপাদাপি শুরু হয়েছে, তাই অনেকের কাছে সে খবর পৌঁছয়নি। মঙ্গলবার সকালে অনেকেই বাজার করতে বেরিয়েছিলেন। কাজে যাওয়ার জন্যও বেরিয়েছিলেন বহু মানুষ। তাঁদের মধ্যে অনেকেই ভোলার মুখোমুখি হয়ে জখম হয়েছেন। এ খবর শহরের বিভিন্ন এলাকায় ছড়িয়ে পড়লে সৃষ্টি হয় আতঙ্কের। রাস্তায় বেরিয়ে সকলের প্রশ্ন একটাই— ভোলা এ তল্লাটে নেই তো?

Advertisement

এত দিন ভোলাকে দেখলেই তার গায়ে হাত ঠেকিয়ে প্রণাম করতেন এলাকার মানুষ। কিন্তু সোমবার থেকে তাঁরাই ভোলার নাম শুনে নিরাপদ আশ্রয় খুঁজছেন। উৎসাহী বাসিন্দারা বারান্দা বা ঘরের জানলা দিয়ে ভোলার গতিবিধির উপর নজর রাখছেন। এলাকায় গিয়ে দেখা গিয়েছে, কার্যত ঘরবন্দি অনেকেই। তবে সে সবে থোড়াই কেয়ার ভোলার! সে ঘুরে বেড়াচ্ছে নিজের খেয়ালে।

এই ষাঁড়ের হাত থেকে রক্ষা পেতে স্থানীয় পঞ্চায়েত দফতরে অভিযোগ জানিয়েছেন এলাকাবাসী। পঞ্চায়েতের পক্ষ থেকে স্থানীয় থানা ও বন দফতরে জানানো হয়েছে। পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌছলেও বাগে আনতে পারেনি ভোলাকে। স্থানীয় বাসিন্দারা অবশ্য প্রশাসন ব্যবস্থা নিচ্ছে না বলেই জানিয়েছেন।

ময়নাডাঙার বাসিন্দা রবীন্দ্রনাথ চৌধুরীর কথায়, “এ দিন সকালে বাজারে যাওয়ার সময় ষাঁড়টাকে দেখলাম। আগে কোনও দিন কিছু করেনি। কিন্তু আজ আমার দিকে তেড়ে এসে ছিটকে ফেলে দিল। পরে শুনলাম গত কাল থেকেই দাপাদাপি করছে ষাঁড়টা।” যথেষ্ট চোট পেয়েছেন তিনি।

কোদালিয়া-১ পঞ্চায়েত প্রধান দেবাশিস চক্রবর্তী বলেন, “গত সোমবার রাত থেকে এলাকা জুড়ে তাণ্ডব চলছে। বন দফতর জানিয়েছে, তাদের কাছে ষাঁড় ধরার ব্যবস্থা নেই।”

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement