শ্রীরামপুর আদালতে সাক্ষ্য দিলেন প্রতিবেশী

সুচেতার ফ্ল্যাটে সমরেশকে ঢুকতে দেখেছিলেন সুনীল

মামলার সরকারি আইনজীবী জয়দীপ মুখোপাধ্যায় জানতে চান, লোকটিকে দেখলে তিনি চিনতে পারবেন না কি। প্রশ্ন শুনে আদালতে সমরেশকে শনাক্ত করেন সুনীলবাবু।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শ্রীরামপুর শেষ আপডেট: ১২ জানুয়ারি ২০১৮ ০১:৩৮
Share:

প্রতীকী ছবি।

সুচেতা-খুনে অভিযুক্ত ব্যাঙ্ক ম্যানেজার (এখন সাসপেন্ডেড) সমরেশ সরকারকে ওই দুপুরে সুচেতার আবাসনে ঢুকতে দেখেছিলেন প্রতিবেশী সুনীল মুখোপাধ্যায়। শ্রীরামপুর আদালতের অতিরিক্ত জে‌লা ও দায়রা বিচারক কাজি সফিউর রহমানের এজলাসে সাক্ষ্য দিতে এসে বৃহস্পতিবার অবসরপ্রাপ্ত সরকারি কর্মী সুনীলবাবু এমনটাই জানান।

Advertisement

আদালতে সুনীলবাবু জানান, দুর্গাপুরের বিধাননগরে সুচেতা যে ফ্ল্যাটে সুচেতা থাকতেন, তার উল্টোদিকের ফ্ল্যাটেই তিনি থাকেন। সুচেতাকে তিনি দীর্ঘদিন ধরে চিনতেন। মামন বলে ডাকতেন। এক ভদ্রলোকের প্রায়ই যাতায়াত ছিল সুচেতার ফ্ল্যাটে। সুচেতা তাঁকে স্বামী হিসেবে পরিচয় দিয়েছিলেন। মাঝেমধ্যেই তিনি স্কুটারে চেপে সুচেতার ফ্ল্যাটে আসতেন। ২০১৫ সালের ২৮ অগস্ট দুপুর ১টা নাগাদ লোকটিকে তিনি সুচেতার ফ্ল্যাটে ঢুকতে দেখেন। পরের দিন টিভির খবরে জানতে পারেন, সুচেতা এবং তাঁর মেয়েকে নৃশংস ভাবে খুন করে গঙ্গায় ছুড়ে ফেলেছেন সমরেশ সরকার নামে সেই লোকটাই। মামলার সরকারি আইনজীবী জয়দীপ মুখোপাধ্যায় জানতে চান, লোকটিকে দেখলে তিনি চিনতে পারবেন না কি। প্রশ্ন শুনে আদালতে সমরেশকে শনাক্ত করেন সুনীলবাবু।

আসামী পক্ষের আইনজীবী ধূর্জটিনারায়ণ পাঁকড়াশি সুনালবাবুকে প্রশ্ন করেন, ওই আবাসনে যত ঘর রয়েছে, সেখানে কারা যাতায়াত করেন তার হিসেব তিনি রাখেন কি না। সুনীলবাবু জানান, সেটা সম্ভব নয়। সুচেতার ফ্ল্যাট তাঁর ফ্ল্যাটের উল্টোদিকে বলেই বিষয়টি নজরে পড়ত।

Advertisement

দিন কয়েক আগে বিধাননগর এলাকার বাসিন্দা, পেশায় ঝাড়ুদার দেবু বাউড়ি আদালতে সাক্ষ্য দেন। তিনি জানান, ঘটনার পরে পুলিশ সমরেশকে নিয়ে সুচেতার ফ্ল্যাটে গিয়েছিল। পুলিশকে সমরেশ জানিয়েছিলেন, সুচেতার পেট কেটে নাড়িভুঁড়ি বের করে শৌচাগারের প্যানে ফেলে দিয়েছেন। পুলিশের কথামতো তিনি প্যানে হাত ঢুকিয়ে সেগুলি বের করার চেষ্টা করেন। কিন্তু তা সম্ভব হয়নি। তখন সেফটিক ট্যাঙ্ক থেকে তিনি ওই নাড়িভুড়ি তোলেন। সেগুলি পুলিশের হাতে তুলে দেন।

দুর্গাপুরের বাসিন্দা সুচেতা চক্রবর্তী এবং তার শিশুকন্যা খুন হন ২০১৫ সালের ২৮ অগস্ট। অভিযোগ, ‘প্রেমিকা’ সুচেতা এবং তাঁর চার বছরের মেয়ে দীপাঞ্জনাকে খুন করেন সমরেশ। সুচেতার দেহ তিনটি টুকরো করে ব্যাগে ভরেন। দীপাঞ্জনার দেহ ভরেন অন্য একটি ব্যাগে। পরের দিন দেহাংশ ভর্তি ব্যাগ ব্যারাকপুর থেকে শেওড়াফুলির মাঝে গঙ্গায় ভুটভুটি থেকে ফেলার সময় যাত্রীদের হাতে ধরা পড়ে যান।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন