গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব, খুন তৃণমূল কর্মী

লোকসভা ভোটের মুখে গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের জেরে তৃণমূলের এক কর্মীকে খুনের অভিযোগ উঠল। শনিবার রাতে উলুবেড়িয়ার রাজাপুর থানা এলাকার রাজকুমার মণ্ডল সেতুর কাছে গোবিন্দ প্রামাণিক (৩৪) নামে ওই যুবকের দেহ মেলে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

উলুবেড়িয়া শেষ আপডেট: ২৫ মার্চ ২০১৯ ০৫:১০
Share:

নিহত: গোবিন্দ প্রামাণিক

লোকসভা ভোটের মুখে গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের জেরে তৃণমূলের এক কর্মীকে খুনের অভিযোগ উঠল। শনিবার রাতে উলুবেড়িয়ার রাজাপুর থানা এলাকার রাজকুমার মণ্ডল সেতুর কাছে গোবিন্দ প্রামাণিক (৩৪) নামে ওই যুবকের দেহ মেলে। নিহতের পরিবারের তরফে পঞ্চায়েত প্রধানের ছেলে প্রবীর মালিক-সহ দশ জন তৃণমূল কর্মীর বিরুদ্ধে খুনের অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। পুলিশ জানিয়েছে, অভিযুক্তরা পলাতক। তাদের ধরতে তল্লাশি শুরু হয়েছে।

Advertisement

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, রাজাপুরের কমলাচক গ্রামের বাসিন্দা গোবিন্দ পেশায় অটো চালক। শনিবার রাত সাড়ে আটটা নাগাদ গোবিন্দ অটো একটি গ্যারাজে রেখে হেঁটে বাড়ি ফিরছিলেন। সেই সময়ই কয়েকজন তাঁকে লাঠি-রড দিয়ে মারধর করে বলে অভিযোগ। গোবিন্দর মা কমলাদেবী বলেন, ‘‘ছেলের চিৎকার শুনে গিয়ে দেখি, কয়েকজন পালাচ্ছে। রক্তে ভেসে যাচ্ছিল রাস্তাটা।’’ গুরুতর জখম গোবিন্দকে উলুবেড়িয়া মহকুমা হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে চিকিৎসকরা মৃত বলে জানান।

রাজাপুরের তেহট্ট-কাঁটাবেড়িয়া ১-এর প্রাক্তন তৃণমূল পঞ্চায়েত সদস্য শ্যামল মাখালের সঙ্গে বর্তমান পঞ্চায়েত প্রধান রাধিকারমণ মালিকের দ্বন্দ্ব বহুদিনের। শ্যামলের অনুগামী ছিলেন গোবিন্দ। ২০১৮ সালে পঞ্চায়েত নির্বাচনের সময় টিকিট পাওয়া নিয়েও দু’জনের মধ্যে লড়াই ছিল তুঙ্গে। তবে তৃণমূলের তরফে টিকিট পান রাধিকারমণ। পঞ্চায়েতের মোট ১২ টি আসনের মধ্যে তৃণমূলের দখলে রয়েছে ৯ টি। বিজেপি পায় ২টি ও সিপিএম ১টি।

Advertisement

আরও পড়ুন: দিল্লি দখলের লড়াই, লোকসভা নির্বাচন ২০১৯

শ্যামল মাখালের অভিযোগ, ‘‘রাধিকা তৃণমূলের টিকিটে জিতলেও বিজেপির সঙ্গে তলেতলে যোগ-সাজস করে সন্ত্রাসের পরিবেশ তৈরি করেছে। দলীয় কর্মীকে খুনের অভিযোগে প্রধানের ছেলের নাম জড়ায় কী করে? দিন কয়েক আগে রাস্তার একটা কাজ নিয়ে রাধিকার সঙ্গে গোবিন্দর ঝামেলাও হয়েছিল।’’ অভিযোগ অস্বীকার করে পঞ্চায়েত প্রধান রাধিকারমণ মালিক বলেন, ‘‘শ্যামল দুর্নীতিগ্রস্ত বলেই ওকে দল থেকে টিকিট দেওয়া হয়নি। শ্যামল আমাকে নানাভাবে ফাঁসানোর চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। এই খুনের সঙ্গে আমার কোনও যোগ নেই। রাজনৈতিক উদ্দেশ্য চরিতার্থ করতেই আমার ছেলের নাম এই ঘটনায় জড়ানো হয়েছে।’’

শনিবার রাতে গোবিন্দর বাড়ি গিয়েছিলেন হাওড়া গ্রামীণ জেলা তৃণমূলের সভাপতি পুলক রায়। তিনি বলেন, ‘‘ভোটের আগে সন্ত্রাস ছড়াতে বিজেপি এই কাজ করেছে। পুলিশ নিশ্চয়ই ব্যবস্থা নেবে।’’

হাওড়া গ্রামীণ জেলা বিজেপির সভাপতি অনুপম মল্লিক বলেন, ‘‘তৃণমূল নিজেদের গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের দায় চাপাচ্ছে বিজেপির উপর। এই ঘটনার সঙ্গে বিজেপি জড়িত নয়।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন