পিস্তল-সহ যুবক গ্রেফতার বালিতে

অনেক টালবাহানার পরে ব্যাগ খুলতেই তা থেকে বেরোল প্লাস্টিকে মোড়া একটি বস্তু। প্লাস্টিকটি খুলতেই বেরিয়ে এল একটি নাইন এমএম পিস্তল-সহ পাঁচটি গুলি। জানা গেল সাদা পোশাকের ওই ব্যক্তিরা হলেন বেলুড় থানার পুলিশ।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২৪ ডিসেম্বর ২০১৭ ০২:০০
Share:

—প্রতীকী চিত্র।

সন্ধ্যার শো শুরুর আগে হলে ঢোকার জন্য তখন রীতিমতো হুড়োহুড়ি। তার মধ্যেই মাল্টিপ্লেক্সের ব্যাগ কাউন্টারের দিকে সজাগ দৃষ্টিতে তাকিয়ে অপেক্ষা করছিলেন কয়েক জন। কাউন্টার থেকে একটি ব্যাগ নিয়ে এক যুবক বেরোতেই পথ আটকালেন ওই ব্যক্তিরা। বললেন, ব্যাগ খুলতে হবে!

Advertisement

অনেক টালবাহানার পরে ব্যাগ খুলতেই তা থেকে বেরোল প্লাস্টিকে মোড়া একটি বস্তু। প্লাস্টিকটি খুলতেই বেরিয়ে এল একটি নাইন এমএম পিস্তল-সহ পাঁচটি গুলি। জানা গেল সাদা পোশাকের ওই ব্যক্তিরা হলেন বেলুড় থানার পুলিশ।

পুলিশ জানিয়েছে, আগ্নেয়াস্ত্র রাখার অভিযোগে শুক্রবার সন্ধ্যায় লিলুয়া বড় গেটের কাছের একটি মাল্টিপ্লেক্স থেকে সোমনাথ দাস নামে ওই যুবকে প্রথমে গ্রেফতার করা হয়। পুলিশ যখন সোমনাথের সঙ্গে ব্যাগ নিয়ে কথা বলছিল, তখনই তাঁর সঙ্গে থাকা বন্ধুরা সরে যেতে শুরু করেন। তবে সোমনাথ এবং তাঁর বান্ধবী-সহ আরও কয়েক জনকে ধরে ফেলে পুলিশ। জেরা করে বাকিদের ছেড়ে দেওয়া হলেও সোমনাথকে গ্রেফতার করা হয়। পরে ওই যুবককে জেরা করে সন্তোষ সিংহ নামে আর এক যুবককেও গ্রেফতার করা হয়েছে।

Advertisement

পুলিশ জেনেছে, শ্রীরামপুরে জিম রয়েছে সন্তোষের। কয়েক মাস আগে তিনি বালিতেও নতুন জিম খুলেছেন। দু’টি জিমই দেখাশোনা করতেন সোমনাথ। সন্তোষের দাবি, শ্রীরামপুরের অন্যান্য জিম থেকে মাঝেমধ্যেই হুমকি আসছিল। জিম বন্ধ করে দিতে বলা হচ্ছিল। তাই তিন মাস আগে শ্রীরামপুরেরই এক জনের থেকে ২৬ হাজার টাকা দিয়ে পিস্তলটি কেনেন তিনি। সেটি জিমের কাগজপত্রের ব্যাগে থাকত। সোমনাথ ও সন্তোষ দু’জনেই ব্যবহার করতেন।

পুলিশ সূত্রের খবর, ওই দিন দুপুর পৌনে ১টার শো-তে লিলুয়ার ওই মাল্টিপ্লেক্সে কয়েক জন বন্ধুকে নিয়ে সিনেমা দেখতে গিয়েছিলেন সোমনাথ। সেই সময়েই তাঁর পিঠে থাকা ব্যাগটিতে মেটাল ডিটেক্টর ঠেকিয়ে সন্দেহ হয় রক্ষীদের। তাঁরা ব্যাগটি নিয়ে ভিতরে ঢুকতে বাধা দিলে ওই যুবক তা মাল্টিপ্লেক্সের কাউন্টারেই জমা রাখেন। এর পরেই রক্ষীরা খবর দেন বেলুড় থানায়। পুলিশ এসে জানিয়ে দেয় ওই যুবক এলেই যেন ব্যাগটি ফেরত দেওয়া হয়। এর পরে সাদা পোশাকের পুলিশ দুপুর থেকে ঠায় দাঁড়িয়ে থাকে কাউন্টারের কিছুটা দূরে। কিন্তু সিনেমা শেষ হলেও ব্যাগ নিতে কেউ আসে না। শেষে সন্ধ্যা সাড়ে ৭টা নাগাদ সোমনাথ ব্যাগ নিতে গেলে তাঁকে ধরে পুলিশ।

তবে বালির মোহনলাল বাহাওয়ালা রোডের একটি আবাসনের বাসিন্দা সোমনাথ যে এমন করতে পারেন, তা মানতেই পারছেন না তাঁর প্রতিবেশীরা। নম্র স্বভাবের দক্ষ সাঁতারু ছেলের ব্যাগে কেন পিস্তল থাকবে, বুঝতে পারছেন না তাঁর বাবা লক্ষ্মীকান্ত দাস। তিনি বলেন, ‘‘বান্ধবীর সঙ্গে দেখা করে সিনেমা যাবে বলে বেড়িয়েছিল।’’ তদন্তকারীরাও জেনেছেন, বেলুড় লালবাবা কলেজ থেকে কয়েক মাস আগে স্নাতক হয়েছেন বেঙ্গল চ্যাম্পিয়ান ওই সাঁতারু। শারীরচর্চা করার সুবাদেই সন্তোষের সঙ্গে পরিচয়। গত এক বছর ধরেই সন্তোষের জিমে কাজ করছেন তিনি।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন