পাড়ার মধ্যে চলল গুলি, নিহত যুবক

বন্ধুদের সঙ্গে আড্ডা দেওয়ার জন্য বাড়ি থেকে বেরিয়ে গুলিতে খুন হয়ে গেলেন এক যুবক। রবিবার হুগলির রিষড়া পুরসভার ১৯ নম্বর ওয়ার্ডের শ্রীকৃষ্ণনগরের এই ঘটনায় নিহতের নাম রাজাবাবু মাহাতো (২২)।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

রিষড়া শেষ আপডেট: ২৫ মার্চ ২০১৯ ০৫:১৩
Share:

অকুস্থল: ঘটনাস্থলে পড়ে রক্ত রাজাবাবু মাহাতো (ইনসেটে)। ছবি: দীপঙ্কর দে

বন্ধুদের সঙ্গে আড্ডা দেওয়ার জন্য বাড়ি থেকে বেরিয়ে গুলিতে খুন হয়ে গেলেন এক যুবক। রবিবার হুগলির রিষড়া পুরসভার ১৯ নম্বর ওয়ার্ডের শ্রীকৃষ্ণনগরের এই ঘটনায় নিহতের নাম রাজাবাবু মাহাতো (২২)। ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে শ্রীরামপুর থানার পুলিশ। তবে সন্ধ্যা পর্যন্ত কেউ গ্রেফতার হয়নি।

Advertisement

চন্দননগর কমিশনারেটের আধিকারিকরা জানান, খুনের কারণ পরিষ্কার নয়। নিহতের পরিচিত তিন যুবককে আটক করে জিজ্ঞসাবাদ করা হচ্ছে। অস্ত্র উদ্ধারেরও চেষ্টা চ‌লছে। কমিশনারেটের এডিসিপি (শ্রীরামপুর) অম্লান ঘোষ বলেন, ‘‘ঘটনার তদন্ত শুরু হয়েছে।’’

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে খবর, শ্রীকৃষ্ণনগরে একটি গলির ভিতরের দোতলা বাড়িতে জনা চারেক যুবক কথা বলছিলেন। সম্প্রতি ওই বাড়িটি বিক্রি হয়েছে। তবে যাঁরা কিনেছেন, তাঁরা এখনও স্থায়ীভাবে থাকেন না। এ দিন ওই বাড়ির গেট খোলা ছিল। তবে ঘর বন্ধ ছিল। স্থানীয়দের দাবি, সকাল সাড়ে ১১টা নাগাদ রাজাবাবু কয়েকজন যুবকের সঙ্গে বাড়িতে ঢুকেছিলেন। তারপরই পড়শিরা গুলির আওয়াজ পান। এক মহিলা ব‌লেন, ‘‘আওয়াজ পেয়ে রাস্তায় বেরিয়ে দেখি তিন-চারটে ছেলে রাজার মুখ গামছা দিয়ে ঢেকে টোটোতে তুলছে।’’

Advertisement

খবর পেয়ে এডিসিপি অম্লানবাবু, শ্রীরামপুর থানার আইসি দিব্যেন্দু দাস-সহ অন্য আধিকারিকরা তদন্তে আসেন। পুলিশ জানায়, ওই যুবকের গলার কাছে গুলি লাগে। শ্রীরামপুর ওয়ালশ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে চিকিৎসকেরা তাঁকে মৃত বলে জানান।

আরও পড়ুন: দিল্লি দখলের লড়াই, লোকসভা নির্বাচন ২০১৯

এ দিন ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখা গেল, ওই দোতলা বাড়ির গেট দিয়ে ঢুকেই সিঁড়ি। সিঁড়িতে ওঠার মুখে মেঝেতে রক্ত পড়ে রয়েছে। দরজায়, চটিতে রক্তের দাগ। পুলিশ জানায়, ওই জায়গাতেই গুলি চলে। ওখানে যারা ছিল, তাদের বিরুদ্ধে দুষ্কৃতীমূলক কাজের অভিযোগ আছে কিনা, তা দেখা হচ্ছে।

ঘটনাস্থল থেকে ঢিল ছোড়া দূরত্বে রাজার বাড়ি। রাজার মা ঊষাদেবী জানান, রাজা কলকাতায় কাপড়ের দোকানে কাজ করতেন। রবিবার ছুটি ছিল। সকালে দিদির বাড়ি থেকে ঘুরে এসে রাজা ঘরে শুয়ে ছিলেন। তাঁর কথায়, ‘‘বন্ধুদের সঙ্গে গল্প করবে বলে বেরিয়েছিল। তারপর শুনি এই কাণ্ড। কে কেন ছেলেটাকে মারল, কিছুই বুঝতে পারছি না। আমার সব শেষ করে দিল।’’ ঘটনাস্থলে দাঁড়িয়ে স্থানীয় তৃণমূল কাউন্সিলর তথা পুর-পারিষদ চন্দ্রমণি সিংহ বলেন, ‘‘পুলিশ নিশ্চয়ই ঘটনার কিনারা করবে।’’

বাড়িটি যাঁরা বিক্রি করেছেন, সেই পরিবারের এক যুবককে পুলিশ আটক করেছে। ওই যুবকের মা বিমলাদেবীর দাবি, ছেলে উচ্চ মাধ্যমিকের পরে চাকরির পরীক্ষার প্রস্তুতি নিচ্ছেন। সকালে পড়তে গিয়েছিলেন। এসে ঘটনা শুনে রাজাকে নিয়ে হাসপাতালে ছোটেন।

যে বাড়িতে ঘটনা, তার পাশেই ভাড়া থাকেন রানিদেবী। তাঁর কথায়, ‘‘হঠাৎ আওয়াজ শুনে ভেবেছিলাম, পটকা ফেটেছে। পরে চেঁচামেচি শুনে বেরিয়ে দেখি, কয়েকটা ছেলে রাজাকে ধরে এনে রাস্তায় রাখল। তার পরে টোটোতে চাপিয়ে নিয়ে গেল।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন