রাস্তার কাজের অনুমোদন দিতে দেরি হয়েছে কেন এই প্রশ্ন তুলে ব্লকের সাব অ্যাসিসট্যান্ট ইঞ্জিনিয়ার (এসএই)-কে পেটানোর অভিযোগ উঠল তৃণমূল শাসিত পঞ্চায়েতের উপ-প্রধান এবং তাঁর লোকজনের বিরুদ্ধে। বুধবার ঘটনাটি ঘটেছে হাওড়ার আমতা ২ নম্বর ব্লকে। তবে ওই ইঞ্জিনিয়ার পুলিশের কাছে কোনও অভিযোগ করেননি। বিডিও-র কাছে লিখিতভাবে বিষয়টি জানিয়েছেন। তবে এ ব্যাপারে বিডিওর সঙ্গে মোবাইল ফোনে বার বার যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলেও তিনি ফোন ধরেননি। ঘটনার পর থেকে অফিসে যাওয়া বন্ধ করে দিয়েছেন ওই ইঞ্জিনিয়ার। তৃণমূল শাসিত আমতা ২ পঞ্চায়েত সমিতির সহ-সভাপতি অরবিন্দ হাজরা বলেন, “ঘটনা একটা ঘটেছে। তবে আমি ওই দিন সমিতিতে ছিলাম না। বিডিও-র কাছে বিস্তারিত জেনে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
আমতা ২ নম্বর ব্লক প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, স্থানীয় নওয়াপাড়া গ্রাম পঞ্চায়েতের ১০০ দিনের কাজের প্রকল্পে ১১টি রাস্তা তৈরির জন্য ৪০ লক্ষ টাকার প্রকল্প ব্লকের এসএই-র কাছে পাঠানো হয়েছিল অনুমোদনের জন্য। তিনি অনুমোদন করলে তবেই কাজ শুরু হওয়ার কথা। সপ্তাহখানেক আগে প্রকল্পগুলি বিডিও অফিসে পাঠানো হয় বলে নওয়াপাড়া গ্রাম পঞ্চায়েত সূত্রে খবর। বেশ কয়েকটি দিন কেটে যাওয়ার পরে এ দিন নওয়াপাড়া পঞ্চায়েতের নির্মাণ সহায়ক বিডিও অফিসে এসে এসএই সুভাষ ভৌমিকের সঙ্গে প্রকল্পগুলি নিয়ে কথা বলে জানতে পারেন সেগুলি এখনও অনুমোদন করা হয়নি। এর পর ওই নির্মাণ সহায়ক পঞ্চায়েতে ফিরে যান। প্রকল্পগুলি যে অনুমোদিত হয়নি নির্মাণ সহায়কের কাছে সেই খবর পেয়ে উপ-প্রধান শঙ্কর জানা তাঁর অনুগামীদের নিয়ে বিডিও-র দফতরে হাজির হন এবং সুভাষবাবুর কাছে জানতে চান কেন প্রকল্পগুলি অনুমোদন করা হচছে না। প্রকল্পগুলি খতিয়ে দেখা হচ্ছে বলে সুভাষবাবু তাঁকে জানান। এও বলেন, খুব শীঘ্রই অনুমোদন দিয়ে দেওয়া হবে। সুভাষবাবুর অভিযোগ, এ কথা শোনার পরেই শঙ্করবাবু ও তাঁর সঙ্গের লোকজন তাঁকে আক্রমণ করেন। মার খেয়ে মাটিতে পড়ে যান তিনি। তাঁর চোখের কোণে আঘাত লাগে। তাঁকে অমড়াগড়ি বি বি ধর গ্রামীণ হাসপাতালে প্রাথমিক চিকিৎসা করা হয়।
শঙ্করবাবু অবশ্য মারধরের অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। তিনি বলেন, “রাস্তার কাজের প্রকল্পগুলি সুভাষবাবু ইচ্ছা করেই অনুমোদন দিচ্ছিলেন না। তা নিয়ে তাঁর সঙ্গে আমাদের একটু বাদানুবাদ হয় মাত্র। ওঁকে কেউ কোনওরকম মারধর করেনি।” তবে মারধরের বিষয়ে সুভাষবাবু পুলিশের কাছেও কোনও অভিযোগ জানাননি। তিনি বলেন, “যা জানানোর বিডিওকে লিখিতভাবে জানিয়েছি। পরবর্তী করণীয় তিনিই করবেন।” যদিও বিডিও ইন্দ্রকুমার নস্করের সঙ্গে একাধিকবার মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করার চেষ্টা হলেও তিনি ফোন ধরেননি। ঘটনার পর থেকে অফিসে যাওয়া বন্ধ করেছেন সুভাষবাবু।