মুক্তিরচক গণধর্ষণ মামলা

নয় জন অভিযুক্তকে চেনালেন নির্যাতিতা

এক দিন আগে কোর্ট লক-আপে দাঁড়িয়ে থাকা নয় অভিযুক্তকে শনাক্ত করেছিলেন জা। শুক্রবার আমতা আদালতে সাক্ষ্য দিতে গিয়ে মুক্তিরচক গণধর্ষণ কাণ্ডের এক নির্যাতিতাও ওই ন’জনকে শনাক্ত করলেন। গত ৪ ফেব্রুয়ারি রাতে মুক্তিরচক গ্রামে ওই মহিলা এবং তাঁর জায়ের পুত্রবধূকে গণধর্ষণের অভিযোগ ওঠে স্থানীয় কয়েক জন যুবকের বিরুদ্ধে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

আমতা শেষ আপডেট: ১৫ নভেম্বর ২০১৪ ০১:১০
Share:

এক দিন আগে কোর্ট লক-আপে দাঁড়িয়ে থাকা নয় অভিযুক্তকে শনাক্ত করেছিলেন জা। শুক্রবার আমতা আদালতে সাক্ষ্য দিতে গিয়ে মুক্তিরচক গণধর্ষণ কাণ্ডের এক নির্যাতিতাও ওই ন’জনকে শনাক্ত করলেন।

Advertisement

গত ৪ ফেব্রুয়ারি রাতে মুক্তিরচক গ্রামে ওই মহিলা এবং তাঁর জায়ের পুত্রবধূকে গণধর্ষণের অভিযোগ ওঠে স্থানীয় কয়েক জন যুবকের বিরুদ্ধে। শুক্রবার সেই মামলারই সাক্ষ্য দিতে আমতার অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা বিচারক শ্যামলকুমার রায়চৌধুরীর এজলাসে এসেছিলেন তিনি। গত বৃহস্পতিবার থেকে শুরু হয়েছে এই মামলার সাক্ষ্যগ্রহণ।

শুক্রবার বেলা ১১টা নাগাদ সাক্ষ্যগ্রহণ শুরু হয়। কোর্ট লক-আপে আনা হয় মামলায় অভিযুক্ত ৯ জনকে। সরকারি আইনজীবী সিদ্ধার্থ মজুমদার নির্যাতিতা মহিলাকে বিচারকের সামনে ৪ ফেব্রুয়ারি রাতের সব কথা খুলে বলার জন্য আবেদন করেন। কথা বলার আগে ফুঁপিয়ে কেঁদে ওঠেন ওই মহিলা। আঁচলের খুঁট দিয়ে চোখের জল মুছতে থাকেন। বিচারক তাঁকে বলেন, “ভয় করবেন না। যা জানেন সব কথা খুলে বলুন। আইনজীবীর প্রশ্ন যদি বুঝতে না পারেন তা হলে আমাকে তা জিজ্ঞাসা করে নেবেন।”

Advertisement

নিস্তব্ধ এজলাসে মহিলা বলতে থাকেন ওই রাতের কথা। পাশাপাশি দু’টি ঘরের একটিতে শুয়েছিলেন তিনি। পাশের ঘরে ছিলেন তাঁর জা এবং তাঁর পুত্রবধূ। সঙ্গে ছিল তাঁর দু’বছরের মেয়ে। বারান্দায় ফিসফিস শুনে তিনি নিজের ঘরের দরজা খুলে বেরিয়ে আসেন। সঙ্গে সঙ্গে জনাদশেক যুবক তাঁর ঘরে ঢুকে পড়ে। ঘরের মধ্যেই তাঁর শ্লীলতাহানি করে তারা। শরীরের বিভিন্ন জায়গায় আঁচড়ে-কামড়ে দেয়। তার পরে চুলের মুঠি ধরে তাঁকে টানতে টানতে উঠোনে নিয়ে এসে তাঁর উপরে ঝাঁপিয়ে পড়ে দুষ্কৃতীরা। তাঁকে গণধর্ষণ করা হয়। নাকের নাকছাবি, গয়না লুঠ করে তারা। অত্যাচারে তিনি জ্ঞান হারান। কিছুক্ষণ পরে জ্ঞান ফিরলে তিনি দেখেন বিছানায় শুয়ে রয়েছেন। তাঁর দু’টি হাত পিছমোড়া করে বাঁধা। এই অবস্থায় তিনি পাশের ঘর থেকে শুনতে পান তাঁর জায়ের পুত্রবধূর আর্ত চিৎকার। কিন্তু শারীরিক ও মানসিক অত্যাচারে তিনি নিজে অসহায় হয়ে পড়ায় জায়ের পুত্রবধূর আর্ত চিৎকার শুনেও সাড়া দেওয়ার অবস্থায় ছিলেন না।

ওই মহিলার চুরি যাওয়া গয়না এবং নাকছাবি পুলিশ পরে উদ্ধার করে। সেগুলি তাঁকে দেখানো হলে তিনি শনাক্ত করেন। চার সাক্ষীকে একসঙ্গে বসিয়ে জেরা করানোর যে আর্জি অভিযুক্তদের আইনজীবী বৃহস্পতিবার করেছিলেন, তার শুনানি না হওয়ায় শুক্রবারেও তিনি সাক্ষ্য দিতে আসা নির্যাতিতা ওই মহিলাকে জেরা করেননি। এ দিনও আদালত চত্বরে কড়া পুলিশ প্রহরার ব্যবস্থা ছিল। পুলিশই নির্যাতিতাকে সাক্ষ্য দিতে নিয়ে আসে। সাক্ষ্যগ্রহণ চলে প্রায় এক ঘণ্টা। তার পরে পুলিশ তাঁকে বাড়িতে ফিরিয়ে দিয়ে আসে। আজ, শনিবার সাক্ষ্যগ্রহণ করা হবে আরও এক নির্যাতিতার।

লিবারেশনের স্মারকলিপি। সম্প্রতি পোলবার আমনান পঞ্চায়েতের একটি ধর্ষণের ঘটনায় পুলিশ কয়েক জন অভিযুক্তকে গ্রেফতার করলেও সেই ঘটনার মূল মাথাদের ধরেনি। এই অভিযোগে শুক্রবার বিডিও অফিসের সামনে বিক্ষোভ দেখাল সিপিআই (এমএল) লিবারেশনের কৃষক সংগঠন কৃষি ও খেতমজুর সমিতি। গ্রাম থেকে মিছিল করে বিডিও অফিসে যান আন্দোলনকারীরা। বিডিও-কে স্মারকলিপি দেওয়া হয়।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন