বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে মঙ্গলবার সন্ধ্যায় যখন ‘অ্যাকশন’ চলছে গ্রামে, তখন সেখানে পা রাখতে পারেনি পুলিশ। বোমা-গুলিতে তিন জনের মৃত্যুর পরে বৃহস্পতিবার দুপুরে যখন শ’য়ে শ’য়ে পুলিশ-র্যাফ টহল দিচ্ছে গ্রামে, তখনও বোমার শব্দ ভেসে এল আমডাঙার বইচগাছি থেকে। গোটা এলাকা যে কার্যত বারুদের স্তূপের উপরে বসে আছে, তা আবারও স্পষ্ট হল এ দিন। এলাকার পরিস্থিতি বুঝতে পুলিশ ও গোয়েন্দারা যে পুরোপুরি ব্যর্থ, তা-ও বোঝা গেল।
বৃহস্পতিবার পুলিশের কাছে খবর আসে, কিছু দুষ্কৃতী এখনও রয়ে গিয়েছে তারাবেড়িয়া পঞ্চায়েতের উল্টো দিকে মালতিপুর বিলের পাশে পাট-আখ খেতে। বেলা সাড়ে
৩টে নাগাদ উত্তর ২৪ পরগনার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার অভিজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায় ও বারাসতের এসডিপিও দুর্বার বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্ব পুলিশ ও র্যাফ দু’ভাগ
হয়ে খেতের সামনে-পিছনে দু’দিক থেকে ঘিরে ফেলে।
স্থানীয় সূত্রের খবর, খেতের মধ্যে থেকে উড়ে আসে বোমা-গুলি। পুলিশও পাল্টা কাঁদানে গ্যাসের শেল ছোড়ে। কয়েক জনকে আটক করা হয়েছে। অতিরিক্ত পুলিশ সুপারের অবশ্য দাবি, কেউ বোমা ছোড়েনি। উদ্ধার হওয়া কিছু বোমা বম্ব স্কোয়াডের লোকজন নষ্ট করেছেন। সেই শব্দেই বিভ্রান্তি ছড়ায়। পুলিশ যে ব্যাখ্যাই দিক না কেন, বোমা ফাটার শব্দে মহিলা-শিশুরা এ দিনও আতঙ্কিত হয়ে ছোটাছুটি শুরু করে।
ডাঙা গ্রাম দিয়ে ঢোকার রাস্তায় গাছের গুঁড়ি এখনও সরানো হয়নি। পুলিশের গাড়ি যাতে না ঢুকতে পারে, সে জন্য মঙ্গলবার দুষ্কৃতীরাই এই বন্দোবস্ত করে রেখেছিল বলে মনে করছেন তদন্তকারীরা। রাস্তাঘাটে
এ দিনও কিছু বোমা পড়ে থাকতে দেখা গিয়েছে। এ পর্যন্ত হাজারখানেক বোমা, পাঁচটি পিস্তল এবং প্রচুর গুলি বাজেয়াপ্ত হয়েছে বলে
জানিয়েছে পুলিশ।
তৃণমূলের দুই কর্মীকে খুনের প্রতিবাদে ৬ সেপ্টেম্বর বইচগাছিতে মিছিল ও সভা করবে বলে আগেই জানিয়েছিল তৃণমূল। এ দিন জানানো হয়েছে, যুব তৃণমূল সভাপতি অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় এবং পুরমন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম হাজির
থাকবেন সে দিন।