ফাঁদে পড়ে মারা গেল রয়্যাল বেঙ্গল

বন দফতরের এক আধিকারিক জানিয়েছেন, গভীর জঙ্গলে বাঘের দেহ পড়ে আছে বলে সোমবার খবর পান তাঁরা।

Advertisement

সমীরণ দাস

শেষ আপডেট: ১০ এপ্রিল ২০১৯ ০১:৪৫
Share:

জঙ্গলে পড়ে রয়্যাল বেঙ্গলের মৃতদেহ। ছবি: সুমন সাহা

জঙ্গলে মিলল রয়্যাল বেঙ্গলের পচা-গলা মৃতদেহ।

Advertisement

মঙ্গলবার সুন্দরবনের আজমলমারি ১ জঙ্গল থেকে পূর্ণবয়স্ক বাঘটির দেহাবশেষ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তে পাঠায় বন দফতর। দেহের বাকি অংশ কুলতলি বিট অফিসে এনে পুড়িয়ে ফেলা হয়।

প্রাথমিক ভাবে দফতরের কর্তাদের অনুমান, হরিণ ধরতে ফাঁদ পেতেছিল চোরাশিকারিরা। সেখানেই ধরা পড়ে দক্ষিণরায়। অন্তত দিন পনেরো আগে তার মৃত্যু হয়েছে। দেহাবশেষের সঙ্গে ফাঁদ পাতার লোহার তারও উদ্ধার করা হয়েছে।

Advertisement

স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, চোরাশিকারিরাই পিটিয়ে মেরেছে বাঘটিকে। বন দফতরের কর্তারা অবশ্য বলেন ময়নাতদন্তে রিপোর্ট এলেই মৃত্যুর কারণ স্পষ্ট হবে। দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলা বনাধিকারিক সন্তোষ জিআর বলেন, ‘‘বন দফতর থেকে সুন্দরবনের বাঘ রক্ষার জন্য সব রকম চেষ্টা করা হচ্ছে। এই বাঘটির মৃত্যু নিয়ে তদন্ত চলছে। দোষীদের দ্রুত খুঁজে বের করা হবে।’’

বন দফতরের এক আধিকারিক জানিয়েছেন, গভীর জঙ্গলে বাঘের দেহ পড়ে আছে বলে সোমবার খবর পান তাঁরা। শুরু হয় তল্লাশি। রাতেই দেহের সন্ধান মেলে। এ দিন সকালে বন দফতরের বিশেষ দল এলাকায় পৌঁছয়। ছিলেন পশু চিকিৎসকেরাও।

স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, মৈপীঠের গুড়গুড়িয়া ভুবনেশ্বরী পঞ্চায়েতের মধ্য গুড়গুড়িয়া গ্রাম-সংলগ্ন জঙ্গল এলাকায় চোরাশিকারিদের একটি দল অনেক দিন ধরেই সক্রিয়। তারা হরিণ মেরে মাংস বিক্রি করে। জঙ্গলে হরিণ চলাচলের জায়গায় গোপনে লোহার তারের ফাঁদ পেতে রাখে।

স্থানীয় বাসিন্দা পিন্টু মণ্ডল বলেন, ‘‘দীর্ঘদিন ধরে জঙ্গলে অরাজকতা চলছে। সুন্দরবনের সম্পদ নষ্ট করা হচ্ছে। প্রাণীরাও বিপন্ন। দোষীদের কড়া শাস্তি চাই।’’ বন দফতরের বিরুদ্ধেও অভিযোগের আঙুল তোলেন গ্রামবাসীরা। তাঁদের বক্তব্য, পশুপাখি মারার ঘটনা আগেও ঘটেছে। স্থানীয় প্রশাসন ও বন দফতর অনেক সময়েই তা চেপে যায়। এর ফলে চোরাশিকারিরা আরও সাহস পেয়ে যাচ্ছে! যদিও তা মানতে চাননি বনকর্তরা। কিন্তু প্রশ্ন উঠছে, চোরাশিকারিরাই যদি বাঘ মারবে, তা হলে কেন বহুমূল্যবান বাঘের চামড়া গা থেকে ছাড়িয়ে নিল না? বন দফতরের এক কর্তার অনুমান, ছোটখাটো প্রাণী মারলেও বাঘের চামড়া বিক্রির কথা হয়তো ভাবতে সাহস পায়নি শিকারিরা।

দিল্লি দখলের লড়াই, লোকসভা নির্বাচন ২০১৯

গত বছর লালগড়ে বন দফতরের ক্যামেরায় একটি রয়্যাল বেঙ্গলের খোঁজ মিলেছিল। তাকে বন দফতর খুঁজে বের করার আগেই পিটিয়ে মারে গ্রামবাসীরা। তবে বাঘ সংরক্ষণের নানা উদ্যোগের মধ্যে এমন ঘটনা দেখিয়ে দেয়, জঙ্গলের রাজার প্রাণও এখনও কতটা অসুরক্ষিত!

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement