State News

সংসার টানেন দৃষ্টিহীন চৈতালিই

ক্যান্টিনে আঙুলের স্পর্শে চৈতালি চিনে নেন পঞ্চাশ, একশো, দশ, বিশ টাকার নোট।

Advertisement

সেবাব্রত মুখোপাধ্যায়

শক্তিপুর শেষ আপডেট: ০৮ মার্চ ২০২০ ০৫:১৯
Share:

প্রতীকী ছবি।

স্বপ্ন দেখতে চোখ লাগে না। মনের জোর লাগে।

Advertisement

মুর্শিদাবাদের বেলডাঙা ২ ব্লক হাসপাতালের কাছেই একটি ক্যান্টিনের কাউন্টারে বসে বলছিলেন চৈতালি বৈরাগ্য। সেই দশ বছর বয়সে অসুখের পরে দৃষ্টিশক্তি হারিয়েছেন। কিন্তু হাল ছাড়েনননি। নওদার সর্বাঙ্গপুরের চৈতালি যেমন ক্যান্টিন চালান, তেমন গানের স্কুলও রয়েছে তাঁর। ৩০ জন ছাত্রীকে দ্বিজেন্দ্রগীতি, লোকসঙ্গীত, রাগপ্রধান গান শেখান।

আন্তর্জাতিক নারীদিবসের মুখে চৈতালি সোজা সামনের দিকে তাকিয়ে বলছিলেন, ‘‘নারী নয়, মানুষ বলেই দেখুন আমাকে। প্রতিবন্ধী বলে সহানুভূতিও চাই না। আর একটা কথা, কোনও কাজই ছোট নয়।’’

Advertisement

আরও পড়ুন: দোলে স্বনির্ভর গোষ্ঠীর আবির

ক্যান্টিনে তাই আঙুলের স্পর্শে চিনে নেন পঞ্চাশ, একশো, দশ, বিশ টাকার নোট। কয়েন বোঝেন আকারে। বঁটি দিয়ে ঝিঙে, বেগুন কাটেন অনায়াসে। উনুনে রান্নাও করেন। ক্যান্টিনের আয়ের সঙ্গে রয়েছে গান শেখানোর রোজগার। চৈতালি বলেন, ‘‘গান তো শুনেই শিখেছি, সে ভাবেই শেখাই। কোনও অসুবিধা হয় না। গানের কথা মুখস্থই থাকে।’’

তিরিশের কোঠায় বয়স। বাবা-মায়ের বয়স হয়েছে। পরিবারের দায়িত্ব মোটামুটি চৈতালির কাঁধেই। জামাইবাবু সাহায্য করেন। মনে কোনও খেদ নেই? চৈতালির দৃষ্টিহীন চোখ এ বার ঝাপসা। আস্তে আস্তে বলেন, ‘‘বই পড়তে পারি না যে!’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন