গো-ধন: শিবিরে গরু বিলির পরে তুলে রাখা হচ্ছে ছবি। —নিজস্ব চিত্র।
এলাকার গ্রাম পঞ্চায়েত থেকে পঞ্চায়েত সমিতি, সবই তৃণমূলের দখলে। কয়েক মাস আগে লোকসভার উপ-নির্বাচনেও বড় জয় এসেছে। পূর্ব মেদিনীপুরে ঘাসফুলের এমন খাসতালুকেই গত ছ’মাসেরও বেশি সময় ধরে চলছে ‘গো মাতা শিবির’। ভোটার কার্ড, আধার কার্ডের প্রতিলিপি দেখিয়ে গ্রামের মহিলারা নিখরচায় ঘরে আনছেন দুধেল গাই। শর্ত একটাই, এই গরু বিক্রি করা যাবে না।
আরও পড়ুন: পিএসসি-র সব নিয়োগই স্থগিত
পূর্ব মেদিনীপুরের তমলুক ও কোলাঘাটের বিভিন্ন গ্রামে নিখরচায় গরু বিলির এই শিবির হচ্ছে ‘ডঃ শ্যামাপ্রসাদ মুখোপাধ্যায় স্মৃতি যুব সঙ্ঘ ওয়েলফেয়ার সোসাইটি’ নামে তমলুকের এক স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার উদ্যোগে। গত প্রায় সাত মাসে শিবির করে দেড়শোরও বেশি গরু বিলি করেছে সংস্থাটি। এর সঙ্গে যুক্ত সকলেই বিজেপি কর্মী হিসেবে পরিচিত। স্বভাবতই এই ঘটনায় শোরগোল পড়েছে। খোদ মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্দেশে তদন্ত শুরু করেছে পূর্ব মেদিনীপুর জেলা পুলিশ। জেলার পুলিশ সুপার অলোক রাজোরিয়া বলেন, ‘‘এ ভাবে গরু বিলির উদ্দেশ্য কী, কী ভাবেই বা নিখরচায় সংস্থাটি গরু বিলি করছে, সব দেখা হচ্ছে।’’
তৃণমূলের বক্তব্য, এর পিছনে বিজেপি-র রাজনৈতিক অভিসন্ধি রয়েছে। নন্দীগ্রামের বিধায়ক তথা রাজ্যের মন্ত্রী শুভেন্দু অধিকারী বলছেন, ‘‘দেশ জুড়ে গরু নিয়ে যে রাজনীতি চলছে, বিজেপি তা এ রাজ্যেও ঢোকাতে চাইছে।’’ যদিও বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ বলেন, ‘‘দলীয় ভাবে এমন কিছু হচ্ছে বলে জানা নেই। খোঁজ নিয়ে দেখব।’’ একই সঙ্গে তাঁর তাৎপর্যপূর্ণ মন্তব্য, ‘‘তবে যদি গরু বিলি করা হয়, সেটা ভালই।’’
ওই স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার কর্তা দেবকুমার মাইতি বলেন, ‘‘বাসিন্দারা যাতে গো-পালন করে আর্থিক ভাবে স্বনির্ভর হতে পারেন, সে জন্যই গরু বিলি।’’ কোথা থেকে গরু আনা হচ্ছে? নিখরচায় গরু বিলির টাকাই বা জোগাচ্ছে কে? সংস্থার সদস্য মিলন মণ্ডলের দাবি, গরু আসছে রাজস্থানের এক গোরক্ষা সংস্থা থেকে। সেখান থেকে বিনামূল্যে পাওয়া গরু এনে দান করা হচ্ছে।