মধ্যশিক্ষা পর্ষদের প্রাক্তন সভাপতি কল্যাণময় গঙ্গোপাধ্যায়। —ফাইল চিত্র।
পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের পর স্কুল সার্ভিস কমিশনের নিয়োগ দুর্নীতি মামলা থেকে জামিন পেয়ে গেলেন মধ্যশিক্ষা পর্ষদের প্রাক্তন সভাপতি কল্যাণময় গঙ্গোপাধ্যায়ও। নিয়োগ দুর্নীতিতে সিবিআইয়ের করা মামলা থেকে বুধবার তাঁকে জামিন দিয়েছে কলকাতা হাই কোর্ট। এর আগে ইডির মামলায় জামিন পেয়েছিলেন কল্যাণময়। মনে করা হচ্ছে, এ বার তাঁরও জেলমুক্তি সময়ের অপেক্ষা।
সিবিআইয়ের মামলা থেকে জামিন চেয়ে কল্যাণময় হাই কোর্টের দ্বারস্থ হয়েছিলেন। বিচারপতি তীর্থঙ্কর ঘোষের বেঞ্চে সেই মামলার শুনানি হয়। বুধবার বিচারপতি তাঁর আবেদন মঞ্জুর করেছেন।
এসএসসির ২০১৬ সালের প্যানেলে যে দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছিল, তাতে কল্যাণময়ের যোগ রয়েছে বলে দাবি করেছিল তদন্তকারী সংস্থা। ওই সময়ে মধ্যশিক্ষা পর্ষদের দায়িত্বে ছিলেন কল্যাণময়। ২০১২ সালে মধ্যশিক্ষা পর্ষদের অ্যাডহক কমিটির প্রশাসক হন তিনি। সব মিলিয়ে চার বছর, অর্থাৎ ২০১৬ পর্যন্ত ওই পদে ছিলেন তিনি। সেই বছরেই তাঁকে মধ্যশিক্ষা পর্ষদের সভাপতি করা হয়। ২০২২ সালের ২২ জুন ওই পদে তাঁর মেয়াদ শেষ হয়েছিল। তার পরে তাঁকে গ্রেফতার করে সিবিআই। পরে এই সংক্রান্ত আর্থিক তছরুপের মামলায় ইডিও তাঁকে গ্রেফতার করেছিল।
শুধু মধ্যশিক্ষা পর্ষদের সভাপতি নন, তৎকালীন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের তৈরি করে দেওয়া উপদেষ্টা কমিটিরও অন্যতম সদস্য ছিলেন তিনি। মধ্যশিক্ষা পর্ষদের সভাপতির পদ ‘বেআইনি’ ভাবে আঁকড়ে রেখেছিলেন বলেও অভিযোগ ওঠে কল্যাণময়ের বিরুদ্ধে। তিনি পর্ষদের সভাপতি থাকাকালীন ওই পদের মেয়াদ দু’বার বৃদ্ধি করা হয়। প্রথমে ওই পদে থাকার বয়ঃসীমা ৬০ থেকে বাড়িয়ে ৬৫ করেছিল স্কুল শিক্ষা দফতর। তার পর ৬৫ থেকে বাড়িয়ে ৬৮ করা হয়। কল্যাণময় অবশ্য ৬৮ পেরিয়েও আরও ১৬ মাস সবেতন সামলেছেন পর্ষদের দায়িত্ব। কেন তিনি অতিরিক্ত বেতন নিয়ে চাকরি করছিলেন, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছিল।
অনিয়মের অভিযোগেই ২০১৬ সালের প্যানেল বাতিল করে দিয়েছিল সুপ্রিম কোর্ট। তাতে চাকরি গিয়েছে ২৬ হাজার শিক্ষক এবং শিক্ষাকর্মীর। কল্যাণময়ের বিরুদ্ধে ওই অনিয়মে যুক্ত থাকার অভিযোগ উঠেছে। আপাতত ইডি এবং সিবিআই উভয় মামলাতেই তিনি জামিন পেলেন।