অবশেষে মামলা কান্দির চার জন অভিযুক্তের নামে

আগ্নেয়াস্ত্র উঁচিয়ে শাসক দলের মিছিলের ৪৮ ঘণ্টা পরে তাতে থাকা ‘অজ্ঞাতপরিচয়’ দুষ্কৃতীদের নাম জানতে পারল পুলিশ। সোমবার কান্দি পুরসভা ভবনের সামনে দিশি আগ্নেয়াস্ত্র নিয়ে দাপাদাপি করতে দেখা গিয়েছিল যাদের, সেই সব্যসাচী দাস, পার্থসারথি দাস, মাধব দাস ও দুঃশাসন ঘোষের নামে অস্ত্র আইন-সহ নানা ধারায় মামলা রুজু হল বুধবার। যদিও সোমবার ওই চার জনের পরিচয় স্পষ্ট হয়ে গিয়েছিল ভিডিও-ফুটেজ থেকে। মঙ্গলবার থেকে চার অভিযুক্তই পলাতক।

Advertisement

নিজস্ব প্রতিবেদন

শেষ আপডেট: ২৪ সেপ্টেম্বর ২০১৫ ০৩:৪৭
Share:

আগ্নেয়াস্ত্র উঁচিয়ে শাসক দলের মিছিলের ৪৮ ঘণ্টা পরে তাতে থাকা ‘অজ্ঞাতপরিচয়’ দুষ্কৃতীদের নাম জানতে পারল পুলিশ। সোমবার কান্দি পুরসভা ভবনের সামনে দিশি আগ্নেয়াস্ত্র নিয়ে দাপাদাপি করতে দেখা গিয়েছিল যাদের, সেই সব্যসাচী দাস, পার্থসারথি দাস, মাধব দাস ও দুঃশাসন ঘোষের নামে অস্ত্র আইন-সহ নানা ধারায় মামলা রুজু হল বুধবার। যদিও সোমবার ওই চার জনের পরিচয় স্পষ্ট হয়ে গিয়েছিল ভিডিও-ফুটেজ থেকে। মঙ্গলবার থেকে চার অভিযুক্তই পলাতক।

Advertisement

জেলার এসপি সি সুধাকরের দাবি, ‘‘ভিডিও ফুটেজ দেখে, ধৃতদের জেরা করে ওই চার জন সম্পর্কে নিশ্চিত হয়েছি। তার পরে তাদের নামে অভিযোগ করা হয়েছে।’’

ওই ঘটনার জেরে মঙ্গলবার ধৃত গয়ানাথ কৈবর্ত ও ইমরান শেখকে চার দিন পুলিশি হাজতে রাখার নির্দেশ দিয়েছে কান্দি আদালত। তাদের বিরুদ্ধে অস্ত্র আইন-সহ মোট ৫টি ধারায় মামলা করেছে পুলিশ। সংবাদমাধ্যম যাতে তাদের সঙ্গে কথা বলতে না পারে, তাই আদালতে পুলিশি ব্যবস্থা ছিল নিশ্ছিদ্র।

Advertisement

হ্যালিফক্স ময়দানের কর্মিসভার পথে সোমবার আগ্নেয়াস্ত্র হাতে তৃণমূল কর্মীদের উল্লাসে হতচকিত হয় কান্দি। তৃণমূল সূত্রের খবর, ঘটনার জেরে সোমবার জেলায় উপস্থিত দলের এক রাজ্য-নেতা ভর্ৎসনা করেন জেলার নেতাদের।

তৃণমূলের অন্দরে এই ‘অস্বস্তি’র সুযোগ নিতে মাঠে নেমেছে কংগ্রেস। এ দিন প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরী কান্দিতে মিছিল করেন। বৃষ্টি উপেক্ষা করে মুখে কালো কাপড় বেঁধে মৌনী-মিছিল ঘোরে শহরে। তবে দলের অন্দরের খবর, স্বস্তিতে নেই কংগ্রেসও। নেতারা একান্তে মানছেন, ‘‘দলের সক্রিয় নেতা-কর্মীদের অনেককে সোমবার তৃণমূলের সভায় দেখা গিয়েছে। পরে না অভিযোগের আঙুল আমাদের দিকেও ঘোরে।’’

কংগ্রেসের একাংশের খটকা লেগেছে এলাকার কংগ্রেস বিধায়ক অপূর্ব সরকারের ভূমিকায়। সশস্ত্র মিছিলের পরে তৃণমূলের বিরুদ্ধে সুর চড়ালেও, এসপির কাছে অভিযোগে কারও নাম উল্লেখ করেননি তিনি। কেন? বিধায়কের উত্তর, ‘‘ভিডিও-ফুটেজ দেখার সময় পাইনি।’’

জেলা রাজনীতির নিয়মিত পর্যবেক্ষকদের একাংশের অনুমান, দক্ষ সংগঠক বলে পরিচিত কংগ্রেসের এক নেতা তৃণমূলে যোগ দেবেন বলে এলাকায় জোর রটেছে। লোকসভা ভোটের পর থেকেই কান্দির ওই নেতা তৃণমূলের সঙ্গে ঘনিষ্ঠতা বাড়িয়েছেন। কিন্তু এই মুহূর্তে তিনি তৃণমূলে গেলে, শাসক দলে যাঁরা বিধানসভা ভোটে টিকিট পাওয়ার আশা করছেন, তাঁদের কারও-কারও বাড়া ভাতে ছাই পড়তে পারে। এই পরিস্থিতিতে নিতান্ত মরিয়া হয়ে কান্দির এক তৃণমূল নেতা রাজ্য নেতৃত্বের সামনে নিজের ‘বাহুবল’-এর নমুনা তুলে ধরতে চেয়েছিলেন। আগ্নেয়াস্ত্র নিয়ে মিছিলে যাদের দাপাতে দেখা গিয়েছে, তারা ওই তৃণমূল নেতার ঘনিষ্ঠ বলে স্থানীয় সূত্রের খবর।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন