চার দলের নেতাদের ডাকলেন রাজ্যপাল

এমন বৈঠক যে রাজ্যপাল ডাকতে পারেন, সেই জল্পনা চলছিল গত কয়েক দিন ধরেই। সূত্রের খবর, গত রবিবার প্রথম এই বিষয়ে মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে রাজ্যপালের কথা হয়।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ১৩ জুন ২০১৯ ০২:৫২
Share:

—ফাইল চিত্র।

শেষ পর্যন্ত রাজ্যের চার প্রধান রাজনৈতিক দলের শীর্ষ নেতৃত্বকে বৈঠকে ডাকলেন রাজ্যপাল।

Advertisement

রাজভবনে আজ, বৃহস্পতিবার বিকালে রাজ্যের সাম্প্রতিক পরিস্থিতি নিয়ে কেশরীনাথ ত্রিপাঠী আলোচনায় ডেকেছেন তৃণমূল মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায়, বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ, সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক সূর্যকান্ত মিশ্র ও প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি সোমেন মিত্রকে।

এমন বৈঠক যে রাজ্যপাল ডাকতে পারেন, সেই জল্পনা চলছিল গত কয়েক দিন ধরেই। সূত্রের খবর, গত রবিবার প্রথম এই বিষয়ে মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে রাজ্যপালের কথা হয়। মুখ্যমন্ত্রী তাঁকে জানান, আইনশৃঙ্খলা পুরোপুরি রাজ্য সরকারের এক্তিয়ারভুক্ত। রাজ্যপালের এমন বৈঠক আহ্বানকে তাঁরা ‘নীতিগত ভাবে সমর্থন’ করেন না। তার পরে এই বিষয়ে রাজ্যপাল ও মুখ্যমন্ত্রীর মধ্যে চিঠির আদানপ্রদানও হয়েছে। সেখানেও এ ধরনের বৈঠক ডাকার অধিকার রাজ্যপালের আছে কি না, সেই প্রশ্ন তুলেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী।

Advertisement

শেষ পর্যন্ত বুধবার রাজ্যপাল ত্রিপাঠী চার দলের চার নেতাকে চিঠি দিয়ে বৈঠকে আমন্ত্রণ জানিয়েছেন।

সূত্রের খবর, রাজ্যপালের কাছ থেকে চিঠি পেয়ে মুখ্যমন্ত্রী জবাবে লিখেছিলেন, আইনশৃঙ্খলা রক্ষা করা সম্পূর্ণ ভাবেই রাজ্য সরকারের দায়িত্ব। যত ক্ষণ পর্যন্ত নির্বাচিত সরকার আছে, তত ক্ষণ রাজ্যপালের এই বিষয়ে কোনও প্রশাসনিক ভূমিকা থাকতে পারে না। সেই কারণেই এমন বৈঠক ডাকা হলে সরকারের প্রধান হিসেবে মুখ্যমন্ত্রী সেখানে থাকবেন না। তবে একই সঙ্গে তিনি চিঠিতে জানিয়ে দেন, রাজ্যপালের পদের মর্যাদার প্রতি সম্মান দেখিয়ে তৃণমূলের তরফে পার্থ চট্টোপাধ্যায় বৈঠকে যাবেন।

সূত্রের খবর, মুখ্যমন্ত্রীকে ফের একটি চিঠি দিয়ে নিজের অবস্থান স্পষ্ট করেছেন রাজ্যপাল। তাতে কেশরীনাথ বলেছেন, তিনি রাজ্যের এক্তিয়ারে হস্তক্ষেপ করে আইনশৃঙ্খলা সংক্রান্ত বিষয় নিয়ে আলোচনা করার জন্য বৈঠক ডাকছেন না। রাজ্যে শান্তির বাতাবরণ ফিরিয়ে আনার লক্ষ্যেই রাজ্যের প্রধান রাজনৈতিক দলগুলির সঙ্গে কথা বলতে চান তিনি।

রাজ্যপালের উদ্যোগ সম্পর্কে প্রশ্নের জবাবে তৃণমূলের যুব সভাপতি অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ও এ দিন বলেছেন, ‘‘রাজ্যপালের পদকে সম্মান করি। তাঁর এক্তিয়ার অনুযায়ী তিনি বৈঠক ডাকতেই পারেন। আমাদের প্রতিনিধি যাবেন। তবে ওঁর পদের সম্মান রাখতেই আশা করব, তিনি অ-রাজনৈতিক ও নিরপেক্ষ হবেন।’’

বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপবাবু অবশ্য এ দিন রাজভবনের বৈঠকে যাচ্ছেন না। দিল্লিতে বিজেপির জাতীয় পদাধিকারীদের দু’দিনের বৈঠক শুরু হচ্ছে আজ। যেখানে রাজ্য সভাপতি হিসেবে যোগ দিতে যাচ্ছেন দিলীপবাবু। তিনি জানিয়েছেন, বিজেপির তরফে জয়প্রকাশ মজুমদার ও সঞ্জয় সিংহ রাজভবনের বৈঠকে প্রতিনিধিত্ব করবেন। দিলীপবাবুর মতে, ‘‘রাজ্যপাল এই বৈঠক ডাকার পরে অনেকেই তাঁর এক্তিয়ার নিয়ে প্রশ্ন তুলতে পারেন। কিন্তু রাজ্যের যা পরিস্থিতি, সরকারেরই বৈঠক ডাকা উচিত ছিল। রাজ্যপালের সাধু উদ্যোগ, সব দল বৈঠকে গেলে ভাল।’’

পূর্ব বর্ধমানে দলের পূর্বনির্ধারিত বৈঠক থাকায় সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক সূর্যবাবুও রাজভবনের বৈঠকে যাচ্ছেন না। সিপিএমের তরফে সেখানে থাকার কথা পলিটবুরো সদস্য মহম্মদ সেলিমের। প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি সোমেনবাবুর বৈঠকে যাওয়ার কথা। রাজ্যের আইনশৃঙ্খলার হাল নিয়ে উদ্বিগ্ন হলেও সিপিএম ও কংগ্রেস নেতৃত্ব কেন্দ্রের হস্তক্ষেপ চান না। তাই রাজভবনের ভূমিকার দিকে নজর রাখতে চান।

এবার শুধু খবর পড়া নয়, খবর দেখাও। সাবস্ক্রাইব করুন আমাদের YouTube Channel - এ।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন