রাজ্যপাল কেশরীনাথ ত্রিপাঠিকে কটাক্ষ করলেন তৃণমূল মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায়।—ফাইল চিত্র।
পশ্চিমবঙ্গের পরিস্থিতি নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর উদ্বেগকে সমর্থন করলেন রাজ্যপাল। প্রধানমন্ত্রী নিশ্চয়ই নির্দিষ্ট তথ্যের ভিত্তিতেই উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন— বুধবার এমনই একটি মন্তব্য করেন রাজ্যপাল কেশরীনাথ ত্রিপাঠি। রাজ্যপালের এই মন্তব্যের বিরুদ্ধে তীব্র প্রতিক্রিয়া দিয়েছেন রাজ্যের মন্ত্রী তথা তৃণমূল মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায়। রাজ্যপাল পদে মেয়াদ ফুরিয়ে আসছে, মেয়াদ বাড়ানোর জন্যই এই ধরনের মন্তব্য— পার্থ এ দিন এই রকম কটাক্ষও ছুড়েছেন কেশরীর দিকে।
প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী মঙ্গলবার সংবাদ সংস্থা এএনআই-কে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে বলেছিলেন, ‘‘পশ্চিমবঙ্গের দিকে দেখুন। ভারতীয় জনতা পার্টিকে গণতান্ত্রিক অধিকারও প্রয়োগ করতে দেওয়া হচ্ছে না। আদালতের দরজায় কড়া নাড়তে হচ্ছে। নির্বাচনে আমাদের দলের কার্যকর্তাদের যে ভাবে মারা হয়েছে, গণতন্ত্রে তা শোভা পায় না।’’
পশ্চিমবঙ্গের রাজনৈতিক পরিস্থিতি সম্পর্কে প্রধানমন্ত্রীর এই মন্তব্য রাজনৈতিক শিবিরে তীব্র প্রতিক্রিয়ার জন্ম দিয়েছে। পার্থ চট্টোপাধ্যায় মঙ্গলবারই এই মন্তব্যের বিরোধিতা করে বয়ান দিয়েছিলেন। কিন্তু বুধবার বিতর্কটা ফের উস্কে দিয়েছে রাজ্যপালের মন্তব্য।
আরও পড়ুন: ২৯ জানুয়ারি বাংলায় সভা মোদীর? পিএমও-র সবুজ সঙ্কেতের পরেও সিদ্ধান্ত ঝুলে
এ দিন এক অনুষ্ঠানের ফাঁকে সংবাদমাধ্যমের মুখোমুখি হয়েছিলেন রাজ্যপাল। প্রধানমন্ত্রীর মন্তব্য প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘‘প্রধানমন্ত্রী যখন বলেছেন, নিশ্চয়ই তথ্য যাচাই করেই বলেছেন। তাঁর কাছে নিশ্চয়ই তথ্য রয়েছে। তথ্য আমার কাছেও রয়েছে।’’ রাজ্যের রাজনৈতিক পরিস্থিতি সম্পর্কে ঠিক কী তথ্য তাঁর কাছে রয়েছে, তা নিয়ে অবশ্য বিশদ মন্তব্য রাজ্যপাল করতে চাননি।
রাজ্যপালের মন্তব্যের তীব্র বিরোধিতা করেছে তৃণমূল। ওই মন্তব্য প্রসঙ্গে পার্থ চট্টোপাধ্যায় এ দিন বলেন, ‘‘রাজ্যপাল তাঁর সাংবিধানিক অধিকারের বাইরে গিয়ে কথা বলছেন। তাঁর সঙ্গে আমাদের সুসম্পর্ক রয়েছে। কিন্তু প্রধানমন্ত্রী কী বলছেন, সে কথাটা যদি রাজ্যপাল নিজের আসনে বসে বলেন, তা হলে নিজের সাংবিধানিক অধিকারকে তিনি লঙ্ঘন করছেন। এটা মোটেই ঠিক কাজ নয়।’’
আরও পড়ুন: দিল্লিতে অমিত শাহের সঙ্গে দেখা করে বিজেপিতে যোগ দিলেন মৌসুমী চট্টোপাধ্যায়
তাঁর কাছেও তথ্য রয়েছে বলে যে মন্তব্য রাজ্যপাল করেছেন, সে প্রসঙ্গে পার্থবাবু বলেন, ‘‘ওঁর কাছে কী আছে, উনি দিন। ওঁর পদটা তো সাংবিধানিক একটা পদ। উনি তো জনতার দ্বারা নির্বাচিত নন। আরও মজার কথা, উনি প্রধানমন্ত্রীকে কেন রেফার করবেন! এর মধ্যে তো রাজনীতিই রয়েছে। ওঁর তো রাষ্ট্রপতির কাছে দায়বদ্ধ থাকার কথা।’’
রাজ্যপালের মন্তব্য রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত— পার্থ চট্টোপাধ্যায় এ দিন এমনটাই বোঝাতে চেয়েছেন। বাংলার রাজ্যপাল পদে যে হেতু কেশরীনাথ ত্রিপাঠির মেয়াদ শেষ হয়ে আসছে, সে হেতু আরও একটা মেয়াদের জন্য রাজ্যপাল হতে তিনি তৎপর হয়েছেন এবং সেই কারণেই এই ধরনের মন্তব্য করছেন— রাজ্যপালের প্রতি শিক্ষামন্ত্রীর কটাক্ষ ছিল অনেকটা এ রকমই।