চলতি মাসেই জনসভা নরেন্দ্র মোদীর। —ফাইল চিত্র।
পশ্চিমবঙ্গের পরিস্থিতি নিয়ে মুখ খুলেছিলেন মঙ্গলবারই। এ বার পশ্চিমবঙ্গে তাঁর জনসভার তারিখেও সবুজ সঙ্কেত দিয়ে দিল পিএমও (প্রধানমন্ত্রীর দফতর)। ২৯ জানুয়ারি বাংলায় জনসভা করতে পারেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী, বিজেপি নেতৃত্বকে পিএমও এমনই জানিয়েছে বলে খবর। বিজেপি নেতৃত্ব অবশ্য ২৯ জানুয়ারির সভার বিষয়ে এখনও চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেননি। বৃহস্পতিবার বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব এ বিষয়ে নিজেদের সিদ্ধান্ত রাজ্য নেতৃত্বকে জানাতে পারেন। তার পরেই স্থির হবে, মোদীর জনসভা ব্রিগেডে হবে, নাকি রাজ্যের অন্য কোনও প্রান্তে।
বিজেপির প্রস্তাবিত গণতন্ত্র বাঁচাও যাত্রার সমাপ্তিতে কলকাতার ব্রিগেড প্যারেড গ্রাউন্ডে জনসভা করবেন নরেন্দ্র মোদী— পরিকল্পনা ছিল এমনই। কিন্তু গণতন্ত্র বাঁচাও যাত্রার অনুমতি রাজ্য প্রশাসন আটকে দেওয়ায় বিজেপির ওই কর্মসূচির ভবিষ্যৎ এখন আদালতে। আদৌ যাত্রা শুরু করা যাবে কি না, গেলে কবে থেকে শুরু হবে, কবে তা শেষ হবে— কোনওটাই বিজেপি নেতাদের কাছে এখনও স্পষ্ট নয়।
যে সময়ে বিজেপি গণতন্ত্র বাঁচাও যাত্রা শুরু করতে চেয়েছিল, সেই সময়ে শুরু হলে জানুয়ারির মাঝামাঝিই বিজেপির তিনটি ‘রথ’ রাজ্যের তিন প্রান্ত থেকে কলকাতায় পৌঁছে যেত। সে কথা মাথায় রেখেই জানুয়ারির শেষ দিকে নরেন্দ্র মোদীর নেতৃত্বে ব্রিগেড সমাবেশের পরিকল্পনা করেছিল বিজেপি। কিন্তু এখন পরিস্থিতি যে রকম, তাতে জানুয়ারি শেষ হওয়ার আগে রথযাত্রা শেষ হবে কি না, রাজ্য বিজেপি সে বিষয়ে নিশ্চিত নয়।
(ইতিহাসের পাতায় আজকের তারিখ, দেখতে ক্লিক করুন— ফিরে দেখা এই দিন।)
রথযাত্রা শেষ হোক বা না হোক, নরেন্দ্র মোদীর জনসভা খুব বেশি পিছিয়ে দেওয়া কিন্তু বিজেপির পক্ষে সম্ভব নয়। কারণ ফেব্রুয়ারির দ্বিতীয় সপ্তাহ থেকেই মাধ্যমিক পরীক্ষা শুরু হয়ে যাচ্ছে। তার মাঝে বা তার কয়েকদিন আগে মোদীর জনসভার আয়োজন করতে গেলে সমস্যা হতে পারে। তাই বিজেপির একটি অংশ চাইছে, যাত্রা যে অবস্থাতেই থাক, জানুয়ারির শেষেই নরেন্দ্র মোদীর জনসভাটা হয়ে যাক। সেই অনুযায়ীই মোদীর দফতরও (পিএমও) জানিয়ে দিয়েছে যে, ২৯ জানুয়ারি পশ্চিমবঙ্গ সফর করতে প্রধানমন্ত্রীর কোনও সমস্যা নেই।
আরও পড়ুন: ‘গণতন্ত্র কোথায় রাজ্যে’, মোদীর খোঁচা ওড়াল তৃণমূল
পিএমও থেকে যে সবুজ সঙ্কেত এসে গিয়েছে, সে কথা জানিয়েছেন রাজ্য বিজেপির সাধারণ সম্পাদক সায়ন্তন বসু। গত কয়েক দিন ধরে সায়ন্তন দিল্লিতেই রয়েছেন। নানা কর্মসূচি নিয়ে তিনি দিল্লি গিয়েছেন। ২৯ জানুয়ারি পশ্চিমবঙ্গে নরেন্দ্র মোদীর সভা হবে কি না, হলে কোথায় হবে— সে সব চূড়ান্ত করার আলোচনায় সায়ন্তনরা আপাতত দলের জাতীয় নেতৃত্ব এবং রাজ্য নেতৃত্বের মধ্যে সমন্বয়টা রাখছেন। দিল্লির সঙ্গে কলকাতার বিজেপি নেতাদের আলোচনার ভিত্তিতেই স্থির হতে চলেছে, নরেন্দ্র মোদীর জনসভা কোথায় হবে এবং কবে হবে। পিএমও যে হেতু ২৯ জানুয়ারিতে সবুজ সঙ্কেত দিয়েছে, তাই ওই দিনই জনসভা হতে পারে বলে রাজ্য বিজেপির একাংশ মনে করছে।
আরও পড়ুন: মমতাকে প্রধানমন্ত্রী চেয়ে দাবি জোরালো তৃণমূলে
যে দিন নরেন্দ্র মোদী বাংলায় আসছেন, সে দিন কোন যাত্রা কোন শহরে থাকবে, তার উপরে নির্ভর করছে সভাস্থল নির্ধারণ। কলকাতায় সভা করা না গেলে কোনও একটি বড় জেলা শহরের কোনও বড় মাঠে সভা করা হবে— বিজেপি এমন পরিকল্পনাই নিয়েছে। বিজেপি নেতা জয়প্রকাশ মজুমদার বললেন, ‘‘২৯ জানুয়ারি যদি মোদীজি বাংলায় আসেন, তা হলে দেখতে হবে আমাদের যাত্রাগুলো সে সময় কোথায় থাকছে। যদি যাত্রা শেষ হয়ে যায় এবং কলকাতায় পৌঁছে যায়, তা হলে ব্রিগেডে সভা করতে কোনও সমস্যা নেই। কিন্তু যদি যাত্রা মাঝপথে থাকে, তা হলে যাত্রাপথের কোনও বড় শহরেই সভা হবে।’’
নতুন বছরের প্রথম দিনে দেওয়া সাক্ষাৎকারে পশ্চিমবঙ্গে গণতান্ত্রিক পরিবেশের অস্তিত্ব নিয়ে গুরুতর প্রশ্ন তুলে দিয়েছেন মোদী। সেই মন্তব্যের পরে ২৯ জানুয়ারি প্রথম বারের জন্য বাংলায় আসতে পারেন প্রধানমন্ত্রী। কী বলবেন মোদী সে দিনের সমাবেশ থেকে— স্বাভাবিক ভাবেই নজর থাকবে গোটা রাজনৈতিক শিবিরেরই।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy