Khela Hobe

১০০ দিনের কাজের টাকা না-পাওয়া পর্যন্ত বিকল্প প্রকল্প ‘খেলা হবে’, ঘোষণা করলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা

শুক্রবার ২১ জুলাইয়ের সভামঞ্চ থেকে ১০০ দিনের কাজের বকেয়া অর্থ আটকে রাখার জন্য কেন্দ্রীয় সরকারের পাশাপাশি রাজ্য বিজেপি নেতৃত্বকেও কাঠগড়ায় দাঁড় করান মমতা এবং অভিষেক।

Advertisement

আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ২১ জুলাই ২০২৩ ১৮:৪৯
Share:

১০০ দিনের কাজের প্রকল্পের বিকল্প প্রকল্প ঘোষণা করলেন মমতা। প্রতীকী চিত্র।

কেন্দ্র ১০০ দিনের কাজের টাকা না-দিলেও বাংলায় এই প্রকল্প পুরোপুরি থেমে নেই, থেমে থাকবেও না। ২১ জুলাইয়ের সমাবেশ থেকে চ্যালেঞ্জ ছুড়লেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বাংলার এই বিকল্প প্রকল্পের নামও ঠিক করে ফেলেছেন মুখ্যমন্ত্রী, ‘খেলা হবে’। শুক্রবার ধর্মতলার সভামঞ্চ থেকে ১০০ দিনের কাজের বকেয়া অর্থ আটকে রাখা নিয়ে কেন্দ্রীয় সরকারের পাশাপাশি রাজ্য বিজেপি নেতৃত্বকেও কাঠগড়ায় দাঁড় করান মমতা। অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ও তাঁর বক্তৃতার অনেকটা অংশ জুড়ে এ নিয়ে কেন্দ্রের বিরুদ্ধে আন্দোলন জোরদার করার ঘোষণা করেন। এই আন্দোলনের নিশানায় যে এ রাজ্যের বিজেপি নেতারাও থাকবেন তা-ও স্পষ্ট করে দেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক।

Advertisement

মমতা তাঁর বক্তৃতায় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে উদ্দেশ্য করে বলেন, ‘‘যত দিন-না আপনি আমাদের ১০০ দিনের কাজের টাকা ফেরত দিচ্ছেন, তত দিন কি মানুষ কাজ করবে না? করবে, আমি আমাদের দলের পক্ষ থেকে একটা অনুরোধ পেয়েছি। এবং আমিও সেটা নিয়ে ভাবছি। আমার নিজেরও ভাবনা আছে। ১০০ দিনের টাকা বন্ধ করলেও মনে রাখবেন, আমরা কিন্তু অলরেডি জব কার্ড হোল্ডারদের ২৬ দিনের কাজ করিয়েছি। আমরা যদি ২৬ দিনের কাজ করাতে পারি, তা হলে মনে রাখবেন, বাংলা নিজের পায়ে দাঁড়িয়ে ১০০ দিন না-হলেও, ৪০-৫০ দিনের কাজ করাতেই পারে।’’ এর পরেই মমতার ঘোষণা, ‘‘একটা প্রোগ্রাম আমরা আগামী দিন নেব। বাংলায় ১০০ দিনের কাজ। বাংলার সরকারের টাকায় প্রোগ্রামটার নাম দেব ‘খেলা হবে’। এবং গরিব মানুষ যাতে কাজ পায়, কর্মসৃষ্টি যাতে হয়, তার জন্য বাংলার এই কাজের সৃষ্টিটির নাম হবে ‘খেলা হবে’। অর্থাৎ দেখা হবে, কাজ করতে করতেই মানুষ বেছে নেবে ২০২৪ সালের কোন সরকার আসবে, আর কোন সরকার আসবে না।’’

২০২১ সালের বিধানসভা ভোটের আগে তৃণমূলের প্রচারে বড় জায়গা নিয়েছিল ‘খেলা হবে’ স্লোগান। স্বয়ং মমতাও এই স্লোগান তুলেছেন বার বার। ভোটে বিপুল ভাবে জয়ের পর, ওই বছরের ২১ জুলাই যে ভর্চুয়াল বক্তৃতা (কোভিডের কারণে কেন্দ্রীয় সমাবেশ হয়নি) করেন মমতা, তাতে ১৬ অগস্টকে ‘খেলা হবে’ দিবস হিসাবে ঘোষণা করেছিলেন তিনি। এ বার ২১ জুলাই সেই ‘খেলা হবে’ আবার ফিরে এল ১০০ দিনের কাজ নিয়ে কেন্দ্রের সঙ্গে দ্বন্দ্বের আবহে।

Advertisement

১০০ দিনের কাজের বিকল্প কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করে লোকসভা ভোটের আগে মমতা তৃণমূলের গ্রামীণ ভোটব্যাঙ্ক সংহত নিতে চান বলেই মত অনেকের। সঙ্গে বিজেপি তথা কেন্দ্রীয় সরকারের উপর পাল্টা চাপ রাখতেও মমতার এই চাল বলে মনে করা হচ্ছে। তবে এই প্রকল্প প্রসঙ্গে মঞ্চ থেকে বিস্তারিত কিছু জানাননি মমতা। আগামী ২৪ জুলাই দীর্ঘদিন পর নবান্নে মন্ত্রিসভার বৈঠক হবে। সেই বৈঠকেই সম্ভবত এই প্রকল্প সংক্রান্ত বিষয়ে কোনও সিদ্ধান্ত নিতে পারেন মুখ্যমন্ত্রী।

পঞ্চায়েত দফতর সূত্রে খবর, দেড় বছরের বেশি সময় আটকে রয়েছে ১০০ দিনের প্রকল্পের টাকা। অভিষেক ২১ জুলাইয়ের মঞ্চ থেকে ঘোষণা করেন, আগামী ২ অক্টোবর, গান্ধীজির জন্মদিবসে, বকেয়া টাকার দাবিতে তিনি দিল্লিতে কৃষি ভবনের সামনে জমায়েত করে ধর্নায় বসবেন। প্রসঙ্গত, কেন্দ্রীয় সরকারের ১০০ দিনের প্রকল্পটি শুরু হয়েছিল প্রথম ইউপিএ জমানায়। তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিংহের নেতৃত্বাধীন সরকার এই প্রকল্পের নামকরণ করেছিল মহাত্মা গান্ধীর নামে। প্রকল্পের পূর্ণাঙ্গ নাম হল, মহাত্মা গান্ধী ন্যাশানাল রুরাল এমপ্লয়মেন্ট গ্যারেন্টি অ্যাক্ট (এমজিএনআরইজিএ বা মনরেগা)।

অভিষেক আরও ঘোষণা করেন, আগামী ৫ অগস্ট এ রাজ্যে বুথে বুথে বিজেপি নেতাদের বাড়ি শান্তিপূর্ণ ভাবে ঘেরাও করা হবে। অভিষেকের মতে, রাজ্য বিজেপি নেতাদের কলকাঠিতেই কেন্দ্র এই কাজ করছে। পরে বলতে উঠে মমতা অভিষেকের কর্মসূচি সংশোধন করে জানিয়ে দেন, বুথ নয়, এই কর্মসূচি হবে ব্লক স্তরে। এবং বিজেপি নেতাদের বাড়ি থেকে অন্তত ১০০ মিটার দূরে এই কর্মসূচি নিতে হবে। বাড়ির লোকজনকে ঢুকতে-বেরোতে কোনও বাধা দেওয়া চলবে না।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন