শর্তসাপেক্ষে বিজেপির রথযাত্রার অনুমতি দিল কলকাতা হাইকোর্ট।
কলকাতা হাইকোর্টে কার্যত জয় পেল বিজেপি। উল্টো দিকে অস্বস্তি বাড়ল রাজ্য সরকারের। রথযাত্রার অনুমতি দিয়ে দিল উচ্চ আদালত। তবে দু’পক্ষকেই বেশ কিছু শর্ত দেওয়া হয়েছে। রায়কে স্বাগত জানিয়েছেন বিজেপির রাজ্য নেতৃত্ব। দিলীপ ঘোষ বলেন, হাইকোর্টের দেওয়া সব শর্ত মেনেই তাঁরা রথযাত্রার আয়োজন করবেন। তবে বিজেপি ২২, ২৪ এবং ২৬ ডিসেম্বর যাত্রা শুরু করতে পারছে না বলেই মুরলীধর সেন লেন সূত্রের খবর। কয়েক দিন পিছিয়ে যেতে পারে কর্মসূচি।
রথযাত্রার অনুমতি যে বিচারপতি দিতে পারেন, তার ইঙ্গিত মিলেছিল বুধবারই। আর বৃহস্পতিবার কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি তপোব্রত চক্রবর্তী বিজেপির রথযাত্রার অনুমতি দিয়েছেন। তবে আয়োজকদের শর্ত দিয়েছেন, এক জেলা থেকে অন্য জেলায় রথযাত্রা ঢোকার ১২ ঘণ্টা আগে সংশ্লিষ্ট জেলার পুলিশ-প্রশাসনকে জানাতে হবে। কোনও ক্ষয়ক্ষতি হলে সমান ভাবে দায়ী থাকবে বিজেপি। সাধারণ মানুষের যাতে কোনও অসুবিধা না হয়, সেদিকেও সম্পূর্ণ নজর রাখতে হবে রথযাত্রার আয়োজকদের। রথযাত্রা করতে হবে শান্তিপূর্ণ ভাবে।
অন্য দিকে সরকার পক্ষকেও শর্ত দেওয়া হয়েছে, রথযাত্রায় পর্যাপ্ত নিরাপত্তার ব্যবস্থা করতে হবে। মোতায়েন রাখতে হবে পর্যাপ্ত পুলিশ। অশান্তি হলে আয়োজকদের মতো প্রশাসনকেও দায়িত্ব নিতে হবে।
আরও পড়ুন: তিন কিলোমিটার অন্তর মদের ঠেক, মান্ডি কই!
আরও পড়ুন: কর্নাটকে দাস প্রথা! ৫২ জন আদিবাসীকে আটকে রেখে চাবুকপেটা, যৌন নির্যাতন
হাইকোর্টের ডিভিশন বেঞ্চের নির্দেশ ছিল, পুলিশ প্রশাসন এবং বিজেপি নেতৃত্বকে বৈঠকে বসে বিষয়টির নিষ্পত্তি করতে হবে। সেই মতো বৈঠকে বসার পরও রাজ্য সরকার অনুমতি দেয়নি। তার পর ফের হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয় বিজেপি। মঙ্গলবার এবং বুধবার শুনানির পর বিচারপতি তপোব্রত চক্রবর্তী জানিয়ে দেন, বৃহস্পতিবার মামলার রায় দেওয়া হবে। গত দু’দিনের সওয়াল জবাবে সরকার পক্ষের যুক্তি ছিল, রথযাত্রার অনুমতি দিলে রাজ্যে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবণতি হতে পারে। বিঘ্নিত হতে পারে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি। পাশাপাশি গোয়েন্দা রিপোর্টে অশান্তির আশঙ্কার কথাও উল্লেখ করেন অ্যাডভোকেট জেনারেল কিশোর দত্ত।
উল্টো দিকে বিজেপির যুক্তি ছিল, শুধুমাত্র আশঙ্কার ভিত্তিতেই বিরোধীদের গণতান্ত্রিক কর্মসূচি বাতিল করতে চাইছে সরকার। বিচারপতির পর্যবেক্ষণ ছিল, সরকার পক্ষের যুক্তি মানলে তো একই অজুহাতে সব রাজনৈতিক দলের কর্মসূচিই বাতিল করে দেওয়া যেতে পারে।
হাইকোর্টের রায়ে বিজেপি স্বাভাবিক ভাবেই উচ্ছ্বসিত। কিন্তু এই রায় আসার আগে পর্যন্ত সবই অনিশ্চিত ছিল। তাই ২০ তারিখ রায় পেয়ে ২২ তারিখেই কোচবিহার থেকে যাত্রা শুরু করা যাবে কি না, সে বিষয়ে বিজেপি নেতৃত্ব নিশ্চিত নন। সন্ধ্যায় রাজ্য বিজেপির শীর্ষ নেতৃত্ব বৈঠকে বসেছেন। কবে থেকে যাত্রা শুরু করা যাবে, সে বিষয়েই মূলত আলোচনা হয়েছে। কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের সঙ্গেও আলোচনা করবেন রাজ্য বিজেপির নেতারা। যাত্রা কবে থেকে শুরু হচ্ছে, শুক্রবারই তা ঘোষণা করা হতে পারে।