বিজেপির যাত্রা আটকানো সংক্রান্ত মামলায় বৃহস্পতিবার রায় দেবে কলকাতা হাইকোর্ট।—ফাইল চিত্র।
বিজেপির যাত্রা আটকানো সংক্রান্ত মামলায় সরকারের ভূমিকা নিয়ে ফের প্রশ্ন তুলল কলকাতা হাইকোর্ট। বিজেপি-র ওই কর্মসূচিকে কেন্দ্র করে অশান্তি ছড়ানোর আশঙ্কা রয়েছে, তাই অনুমতি দেওয়া হয়নি— সরকারের এই যুক্তি বুধবার মানতে চাইলেন না বিচারপতি তপোব্রত চক্রবর্তী। সরকার যে যুক্তিতে বিজেপির এই যাত্রা আটকাচ্ছে, সেই যুক্তিকে মান্যতা দিলে তো সব রাজনৈতিক কর্মসূচিকেই ওই অজুহাতে আটকে দেওয়া যাবে— অনেকটা এমনই পর্যবেক্ষণ প্রকাশ করলেন বিচারপতি। বৃহস্পতিবার মামলাটির রায় দিয়ে দেওয়া হবে বলে বিচারপতি চক্রবর্তী জানিয়েছেন।
আদালতের নির্দেশ মেনে রাজ্য প্রশাসনের শীর্ষকর্তাদের সঙ্গে আলোচনার পরেও যাত্রার অনুমতি না মেলায় সোমবার ফের হাইকোর্টে মামলা করে বিজেপি। মঙ্গলবার ও বুধবার— পর পর দু’দিন শুনানি গ্রহণ করলেন বিচারপতি। দ্বিতীয় দিনের শুনানিতে অ্যাডভোকেট জেনারেল কিশোর দত্ত যুক্তি দেখান যে, বিজেপি-র প্রস্তাবিত যাত্রার জন্য যে লিফলেট ছাপানো হয়েছে, তাতে রাজ্যের নানা প্রান্তে গোষ্ঠী সংঘর্ষের উল্লেখ রয়েছে। ওই লিফলেটই উত্তেজনা এবং অশান্তি ছড়ানোর পক্ষে যথেষ্ট বলে অ্যাডভোকেট জেনারেল দাবি করেন। সরকার পক্ষ এ দিন আদালতে তুলে ধরে গোয়েন্দা রিপোর্টের কথাও। বিজেপি-কে প্রস্তাবিত যাত্রাটি করতে দিলে রাজ্যের নানা অংশে অশান্তি ছড়াতে পারে বলে গোয়েন্দারা সতর্ক করেছেন— জানায় সরকার।
বিচারপতি তপোব্রত চক্রবর্তী এ প্রসঙ্গে সরকারকে পাল্টা প্রশ্নের মুখে ফেলেন। গোয়েন্দা রিপোর্টের ভিত্তিতে কোনও রাজনৈতিক দলের কর্মসূচি বাতিল করে দেওয়া যায় না বলে তিনি জানান। এই অজুহাত দেখিয়ে যে কোনও দলের, যে কোনও কর্মসূচি আটকে দেওয়া যায়— পর্যবেক্ষণ বিচারপতির।
আরও পড়ুন: রাজ্য ক্যাবিনেটে বড় রদবদল কাল, নতুন মন্ত্রী হচ্ছেন ৪ বিধায়ক
রাজ্য প্রশাসন যখন খবর পেয়েছিল, বিজেপির কর্মসূচি ঘিরে কোনও কোনও এলাকায় অশান্তি ছড়াতে পারে, তখন ওই সব এলাকাগুলি এড়িয়ে বিজেপি-কে কর্মসূচি পালনের কথা বলতে পারত সরকার, যাত্রার পথ বদলে দিতে পারত— মত বিচারপতির। তার বদলে গোটা যাত্রাটাই কেন আটকে দেওয়া হল? বিচারপতি এ দিন এই প্রশ্নই তোলেন।
আরও পড়ুন: মমতা-ববির পা ছুঁয়েই ‘আঙ্কলের’ বাড়িতে নতুন কাউন্সিলর, কেঁদে ফেললেন শোভন
শুধু সরকার পক্ষকে অবশ্য নয়, বিজেপি-কেও এ দিন প্রশ্নের মুখে দাঁড় করিয়েছেন বিচারপতি তপোব্রত চক্রবর্তী। বিজেপির কৌঁসুলিকে তাঁর প্রশ্ন— বিজেপির এই কর্মসূচিকে ঘিরে যে কোথাও কোনও অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটবে না, সে বিষয়ে কী ভাবে নিশ্চিত হব?
মামলাটি দীর্ঘায়িত করতে যে তিনি রাজি নন, তা অবশ্য বিচারপতি বুঝিয়ে দিয়েছেন। বৃহস্পতিবার সকালে প্রথমে বিজেপির কৌঁসুলিকে ১৫ মিনিট বলতে দেওয়া হবে, তার পরে সরকার পক্ষকে ১০ মিনিট সময় দেওয়া হবে। দু’পক্ষের বক্তব্য শুনে বৃহস্পতিবারই মামলাটির রায় দেওয়া হবে বলে বিচারপতি জানিয়েছেন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy