মুর্শিদাবাদে বাবরি মসজিদের শিলান্যাসের পরের দিনই ১৮০ ডিগ্রি ঘুরে গেলেন ভরতপুরের বিধায়ক হুমায়ুন কবীর। রবিবার জানালেন, এখনই বিধায়ক পদ ছাড়ছেন না তিনি। ইস্তফা দেওয়ার প্রশ্নই নেই। তবে পূর্বঘোষণা অনুযায়ী, আগামী ২২ ডিসেম্বরই নতুন দল ঘোষণা করবেন।
তৃণমূলের বাধা অগ্রাহ্য করে মসজিদ তৈরির ঘোষণা করেন হুমায়ুন। ঘটনাক্রমে দল থেকে সাসপেন্ড হয়েছেন এবং শনিবার মসজিদের শিলান্যাস করেছেন। তাতে ‘মানুষের অপ্রত্যাশিত সাড়া’ মিলেছে বলে দাবি বিধায়কের। তার পরেই তিনি জানালেন, বিধায়ক পদ থেকে ইস্তফা দিচ্ছেন না। কারণ, তাঁকেই ভরতপুরবাসী বিধায়ক হিসাবে চান। তাঁরাই নাকি বারণ করেছেন ইস্তফা দিতে। হুমায়ুনের কথায়, ‘‘জনগণকে সম্মান জানিয়ে ইস্তফার সিদ্ধান্ত থেকে পিছিয়ে এলাম।’’
এর আগে হুমায়ুন জানিয়েছিলেন, আগামী ২২ ডিসেম্বর নতুন দল ঘোষণার আগে তৃণমূলের বিধায়ক পদ ছেড়ে দেবেন। তারিখও জানিয়েছিলেন। তিনি বলেছিলেন, ‘‘আগামী ১৭ ডিসেম্বর কলকাতা যাব। বিধানসভায় একটি বৈঠক রয়েছে। সে দিনই ইস্তফা দিয়ে আসব।’’ তিনি আরও বলেছিলেন, স্ট্যান্ডিং কমিটির বৈঠকের পরেই পদ ছাড়বেন। সেই হুমায়ুন রবিবার বলছেন, ইস্তফা দিচ্ছেন না। তাঁর কথায়, ‘‘বিধায়ক পথ ছাড়ছি না। এখন ইস্তফার কোনও প্রশ্নই নেই। আমাকে এলাকার মানুষ বিধায়ক করেছেন। মানুষ চাইছেন না আমি ইস্তফা দিই। তাই ইস্তফা দিচ্ছি না।’’ পাশাপাশি তাঁর নিজের দল নিয়ে বিধায়ক হুমায়ুন বলেন, ‘‘কংগ্রেসের সঙ্গে এখনও যোগাযোগ করিনি। সিপিএমের (রাজ্য সম্পাদক) মহম্মদ সেলিম দায়িত্ব নিয়েছেন ওঁদের সঙ্গে কথা বলার। আগামী বিধানসভা নির্বাচনে মুর্শিদাবাদে কংগ্রেস, সিপিএমের সঙ্গে আসন সমঝোতার সম্ভাবনা প্রবল। তাঁরা যদি আমার শর্ত মানেন, আমিও তাঁদের শর্ত মানব। তাঁরা তো এখন শূন্য। কিন্তু আমার সঙ্গে আরও দুই বিধায়ক থাকবেন আমার দলে।’’ যদিও সেই দুই বিধায়ক কারা, তা এখনই বলতে চাননি তিনি।
আরও পড়ুন:
রবিবার ব্রিগেডে গীতাপাঠের অনুষ্ঠানকে চ্যালেঞ্জ করে হুমায়ুন ঘোষণা করেছেন, এ বার মুর্শিদাবাদে লক্ষ কণ্ঠে কোরানপাঠ হবে। এ নিয়ে তৃণমূলের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক কুণাল ঘোষের মন্তব্য, ‘‘গীতা আমাদের হৃদয়ে আছে, আমাদের আদর্শ। আমরা গীতাপাঠের বিরোধী নই। কিন্তু যাঁরা গীতাকে রাজনৈতিক উদ্দেশে ব্যবহার করছে, আমরা তাঁদের বিরোধিতা করছি। উল্টো দিকে, হুমায়ুন কবীরও বাবরি মসজিদের নামে বিষাক্ত সাম্প্রদায়িক মেরুকরণ করেছেন, দলকে কলুষিত করার চেষ্টা করেছেন। আমরা এরও তীব্র নিন্দা করছি।” হুমায়ুনের বিধায়ক পদ ছাড়া বা না-ছাড়ার বিষয়টিকে বিশেষ গুরুত্ব দিচ্ছে না তৃণমূল। শাসকদলের মুর্শিদাবাদ সাংগঠনিক জেলা সভাপতি অপূর্ব সরকার বলেন, ‘‘অনেক বড় বড় লম্ফঝম্প করলেন। শেষে বুঝতে পারলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ছবি পিছন থেকে সরে গেলে আর বিধায়ক হতে পারবেন না। সে জন্য পদ ছাড়তে চাইছেন না।’’