ভোটার তালিকায় বিশেষ নিবিড় সংশোধন (এসআইআর) শুরু হতেই রাজ্যের পুরসভাগুলিতে জন্ম-মৃত্যুর শংসাপত্র সংগ্রহের হিড়িক বেড়ে গিয়েছে। কলকাতা পুরসভার মতো হাল এখন রাজ্যের বিভিন্ন পুরসভারও। নাগরিকদের এই বাড়তি চাপে প্রশাসনিক জটিলতা বাড়ায় উদ্বেগ তৈরি হয়েছে পুর ও নগরোন্নয়ন দফতরে। সেই কারণেই দফতর শীঘ্রই সব পুরসভার প্রতি একটি নির্দেশিকা জারি করতে চলেছে— নাগরিক দুর্ভোগ কমানোই যার মূল লক্ষ্য।
দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, পুরমন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম স্পষ্ট নির্দেশ দিয়েছেন যে, জন্ম বা মৃত্যুর শংসাপত্রের আবেদন এলে রেকর্ডে নথি থাকলে তা অবশ্যই সরবরাহ করতে হবে। আইনেও এই বাধ্যবাধকতার উল্লেখ রয়েছে। তাই কোনও ভাবেই যেন আবেদনকারীকে খালি হাতে ফিরতে না হয়, তা নিশ্চিত করতে হবে প্রতিটি পুরসভাকে। এসআইআর পর্বে কলকাতা পুরসভার মতোই জেলা পুরসভাগুলিতেও জন্ম-মৃত্যু শংসাপত্রের কপি সংগ্রহে ব্যাপক ভিড় হচ্ছে বলে খবর মিলেছে। অতিরিক্ত চাহিদা সামাল দিতে কলকাতা পুরসভা ইতিমধ্যেই পরিষেবা বাড়াতে উদ্যোগী হয়েছে। জন্ম-মৃত্যুর শংসাপত্রের আবেদন সংক্রান্ত হোয়াট্সঅ্যাপ বটের বুকিং স্লট বাড়ানো হয়েছে। প্রতি দিন ২৪০টি স্লট বরাদ্দ থাকলেও তা দ্রুত বাড়িয়ে ৬০০টি করতে নির্দেশ দিয়েছেন মেয়র ফিরহাদ হাকিম। আশা করা হচ্ছে, এতে সাধারণ মানুষের অপেক্ষা ও ভোগান্তি অনেকটাই কমবে।
আরও পড়ুন:
এই পরিস্থিতি সামাল দিতে রাজ্য চায় প্রতিটি পুরসভাই সমান ভাবে সচেতন ও সক্রিয় করতে। দফতরের অভিমত, নাগরিকদের প্রয়োজনীয় নথি দ্রুত পাওয়ার অধিকার আছে, বিশেষ করে যখন নির্বাচনী তালিকা সংশোধনের মতো গুরুত্বপূর্ণ প্রক্রিয়া চলছে। তাই পুরসভাগুলিকে কর্মীসংখ্যা ও কাউন্টার পরিষেবা বাড়ানো, ডিজিটাল আবেদন গ্রহণে উৎসাহিত করা ও জরুরি নথি প্রদানে অগ্রাধিকার দিতে বলা হবে।
সার্বিক ভাবে, প্রশাসনের লক্ষ্য, এসআইআর পর্বে যাতে কোনও নাগরিককে জন্ম বা মৃত্যুর শংসাপত্রের জন্য অযথা দৌড়ঝাঁপ করতে না হয় এবং পুরসভার পরিষেবা আরও সহজলভ্য হয়, তা নিশ্চিত করা। তবে কেবলমাত্র এসআইআরের কারণেই যে জন্ম-মৃত্যুর শংসাপত্র দেওয়ার ক্ষেত্রে নতুন পদক্ষেপ করা হচ্ছে, তা মানতে চাননি পুর দফতরের আধিকারিকেরা। তাঁদের কথায়, হয়তো এসআইআর আবহে নতুন পদক্ষেপ করা হচ্ছে। তবে, এই ডিসেম্বর মাসেই এসআইআর প্রক্রিয়া শেষ হয়ে যাবে। কিন্তু জন্ম-মৃত্যু শংসাপত্র দেওয়ার যে পদ্ধতি চালু হচ্ছে, তা আগামী দিনগুলিতে সাধারণ মানুষকে অনেক বেশি স্বস্তি দেবে।