Mandarmani

Death at Mandarmani: মন্দারমণির সমুদ্রে নেমে মৃত্যু, জন্মদিনে ফিরল মৃতদেহ

মন্দারমণির হোটেল থেকেই সরিমের মাকে ফোন করে ঘটনার কথা জানানো হয়। তার পরে ফোন আসে সেখানকার স্থানীয় থানা থেকেও।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১০ মে ২০২২ ০৮:১১
Share:

সরিম সারফারোজ।

সোমবার ছিল জন্মদিন। এ বছরের জন্মদিনটা মন্দারমণিতে গিয়ে কাটাতে চেয়ে দিনকয়েক ধরেই মায়ের কাছে আবদার করছিলেন বছর বাইশের সরিম সারফারোজ। ছেলের অনুরোধে কার্যত বাধ্য হয়েই রাজি হয়েছিলেন মা-বাবা। সেই মতো চার বন্ধুর সঙ্গে শনিবার সন্ধ্যায় মন্দারমণির উদ্দেশে রওনা দেন সরিম। এর পরে রবিবার বন্ধুদের সঙ্গে সমুদ্রে স্নান করতে নেমে জলে ডুবে মৃত্যু হল তাঁর। সোমবার, জন্মদিনের বিকেলে সরিমের দেহ এসে পৌঁছল কলকাতার বাড়িতে।

Advertisement

বালিগঞ্জের সার্কাস রেঞ্জের বাড়িতে দুর্ঘটনার খবর আসে রবিবার সন্ধ্যা সাতটা নাগাদ। মন্দারমণির হোটেল থেকেই সরিমের মাকে ফোন করে ঘটনার কথা জানানো হয়। তার পরে ফোন আসে সেখানকার স্থানীয় থানা থেকেও। রাতেই ওই যুবকের বাবা-সহ পরিবারের সদস্যেরা মন্দারমণির উদ্দেশে রওনা দেন।

পুলিশ সূত্রের খবর, ঘটনাটি ঘটে রবিবার বিকেলে। ওই সময়ে কর্তব্যরত পুলিশ ও নুলিয়ারা পর্যটকদের সমুদ্রে নামতে বারংবার বারণ করা সত্ত্বেও তাতে কান দেননি কয়েক জন। তাঁরা সমুদ্রে স্নান করতে নামেন বলে অভিযোগ। এর পরেই ঘটে বিপত্তি। কিছু ক্ষণের মধ্যেই তলিয়ে যান সরিম এবং ঝাড়খণ্ডের বাসিন্দা এক যুবক। পরে নুলিয়ারা সঙ্কটজনক অবস্থায় তাঁদের উদ্ধার করেন। পুলিশ ওই দু’জনকে কাঁথি মহকুমা হাসপাতালে ভর্তি করলেও রাতে সেখানেই তাঁদের মৃত্যু হয়। সোমবার ময়না-তদন্তের পরে দেহ দু’টি তুলে দেওয়া হয় দুই পরিবারের হাতে। এ দিন বিকেল সাড়ে পাঁচটা নাগাদ সরিমের দেহ এসে পৌঁছয় কলকাতার বাড়িতে।

Advertisement

পরিবার সূত্রের খবর, রবিবার সকালে মন্দারমণিতে পৌঁছে বাড়িতে ফোন করেছিলেন সরিম। এমনকি, স্নান করতে যাওয়ার আগে মাকে ভিডিয়ো কলও করেন। মৃতের আত্মীয় শেখ আব্দুস সোবান বলেন, ‘‘এর আগে কোনও দিনও ওকে বাড়ি থেকে একা ছাড়া হয়নি। এ বার জন্মদিন বলে বায়না ধরেছিল। কিন্তু ওখানে সমুদ্র উত্তাল থাকা সত্ত্বেও কেন ওরা জলে নামতে গেল, সেটাই বুঝতে পারছি না।’’

এ দিন সার্কাস রেঞ্জের বাড়িতে গিয়ে দেখা গেল, আত্মীয়স্বজন ও বন্ধুদের জটলা। পরিবারের কেউই কথা বলার মতো অবস্থায় নেই। রবিবার সন্ধ্যায় খবর আসার পরেই এক আত্মীয়ের বাড়িতে রেখে আসা হয়েছে সরিমের মাকে। দিল্লি থেকে দিদি এসে পৌঁছলেও তিনি কথা বলার অবস্থায় ছিলেন না। মৃতের এক বন্ধু জিশান খান বললেন, ‘‘আমি ওর এক দিন আগেই দিঘায় গিয়েছিলাম। ভেবেছিলাম, একসঙ্গে ফিরব। ওখানেই ওর জন্মদিন পালন করার পরিকল্পনা ছিল। কিন্তু রাতে খবর পাওয়ার পরেই আমি ফিরে আসি।’’

এলাকা সূত্রের খবর, শান্ত ও নির্বিবাদী হিসেবেই পরিচিত ছিলেন সরিম। বেশি লোকজনের সঙ্গে মিশতেন না। কলেজের পড়াশোনা শেষ করে বেশ কয়েক মাস আগে একটি নাচের অ্যাকাডেমিতে প্রশিক্ষক হিসাবে যোগ দিয়েছিলেন। সেখানকার কয়েক জন বন্ধুর সঙ্গেই গিয়েছিলেন মন্দারমণিতে।

সরিমের এ ভাবে মৃত্যুর পরে পাড়ার বাসিন্দা থেকে পরিচিতদের প্রশ্ন, সমুদ্র উত্তাল দেখেও ওই যুবকেরা নিষেধ অমান্য করে জলে নামলেন কেন? উত্তর জানা নেই কারও।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন