পুলিশের জালে প্রতারণা সংস্থার আট

গত ১১ জুন সংস্থারই দুই কর্মীর কাছ থেকে মৌখিক ভাবে এমন অভিযোগ পেয়ে সার্ভে পার্ক থানার পুলিশ ৬১৮ কালিকাপুর রোডের ‘ইন্ডিয়ান লি়ড ডট কম’ নামে ওই সংস্থা সম্পর্কে তথ্য জোগাড় করতে শুরু করে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১৬ জুন ২০১৮ ০৩:০৬
Share:

প্রতীকী ছবি।

ভরদুপুর। থানায় বসে কয়েক জন পুলিশকর্মী। হন্তদন্ত হয়ে ঢুকলেন এক মহিলা ও এক পুরুষ। তাঁরা জানালেন, কম্পিউটার প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের নাম করে তার আড়ালে প্রতারণা চক্র চলছে কালিকাপুর রো়ডের একটি সংস্থায়। তাঁরাও ওই সংস্থায় যোগ দিয়েছিলেন। কিন্তু সন্দেহ হওয়ায় তাঁরা পুলিশের দ্বারস্থ হয়েছেন।

Advertisement

গত ১১ জুন সংস্থারই দুই কর্মীর কাছ থেকে মৌখিক ভাবে এমন অভিযোগ পেয়ে সার্ভে পার্ক থানার পুলিশ ৬১৮ কালিকাপুর রোডের ‘ইন্ডিয়ান লি়ড ডট কম’ নামে ওই সংস্থা সম্পর্কে তথ্য জোগাড় করতে শুরু করে। আর তাতেই তারা জানতে পারে সংস্থার মূল অফিস ছিল বেঙ্গালুরুতে। কিন্তু সম্প্রতি কলকাতা পুরসভার কাছ থেকে ট্রেড লাইসেন্স বার করে তারা ওই কম্পিউটার প্রশিক্ষণ কেন্দ্র খোলে। প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের আড়ালে আসলে ভিন্ রাজ্যের ইনস্টিটিউট কিংবা বিশ্ববিদ্যালয়ে ম্যানেজমেন্ট কোটায় ভর্তির নামে একাধিক প্রার্থীর সঙ্গে প্রতারণা চলত।

তদন্তে পুলিশ জানতে পারে, অফিসটি কয়েক মাস বন্ধ। ফলে সেই মুহূর্তে এর থেকে বেশি কোনও তথ্য পুলিশ হাতে পায়নি। বৃহস্পতিবার ওই অফিস খোলার খবর পেয়েই সেখানে যায় পুলিশ। সেখানে তখন ছিলেন অনিরুদ্ধ দাশগুপ্ত এবং ক্ষিতীশ সাহু নামে দুই কর্মী। সংস্থার কাজকর্ম সম্পর্কে তাঁদের জেরা করে জানা যায়, তাঁরা সংস্থার ম্যানেজার। আসল মালিকদের নাম অজিতেশ মণ্ডল এবং অশ্বিনী মোদী। তাঁদের দু’জনের নির্দেশেই অনিরুদ্ধ এবং ক্ষিতিশ ডাক্তারি বা এমবিএ পড়তে ইচ্ছুক প্রার্থীদের খুঁজে বার করেন। তার পরে তাঁদের বেঙ্গালুরুর একটি মেডিক্যাল এবং একটি বিশ্ববিদ্যালয়ে ম্যানেজমেন্ট কোটায় এমবিএ–তে ভর্তি করিয়ে দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিতেন। এক একটি আসনের জন্য প্রার্থীদের কাছে ৬০ লক্ষ থেকে ১ কোটি ২০ লক্ষ টাকা পর্যন্ত দর হাঁকতেন তাঁরা!

Advertisement

পুলিশ জেনেছে, অজিতেশ এই প্রতারণার মামলায় বেঙ্গালুরুতে গ্রেফতারও হয়েছিলেন। তিনি এবং অশ্বিনীই চক্রের মূল মাথা। বেঙ্গালুরুতে ২০১৬ সালে অজিতেশ গ্রেফতার হওয়ার পরে সেখানকার অফিস বন্ধ করে দিতে বাধ্য হন। পরে কলকাতায় এসে নতুন করে অফিস খুলে ফের প্রতারণার ফাঁদ পেতেছিলেন।

তদন্তে পুলিশ আরও জেনেছে, যে ইনস্টিটিউট এবং বিশ্ববিদ্যালয়ে ম্যানেজমেন্ট কোটায় ভর্তি করিয়ে দেবেন বলে এঁরা ফাঁদ পেতেছিলেন, তাদের সঙ্গে এদের কোনও চুক্তি ছিল— এমন তথ্য মেলেনি। তবে অনিরুদ্ধ, ক্ষিতীশ-সহ আট জনকে পুলিশ গ্রেফতার করলেও অজিতেশ ও অশ্বিনী এখনও ফেরার। এঁদের বিরুদ্ধে সার্ভে পার্ক ছাড়াও গরফা থানাতেও অভিযোগ রয়েছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন