kolkata police

বাড়ি ফেরানো হল ভারসাম্যহীন বিদেশিনিকে

পুলিশ জানায়, শুক্রবার ওই হাসপাতালে চিকিৎসকেরা ফের মহিলার স্বাস্থ্য পরীক্ষা করেন। তাঁরা জানান, মহিলা প্রথাগত চিকিৎসায় সাড়া দিচ্ছেন না, উল্টে বাধা দিচ্ছেন।

Advertisement

শিবাজী দে সরকার

কলকাতা শেষ আপডেট: ২৯ মার্চ ২০২০ ০৫:৩০
Share:

প্রতীকী চিত্র।

মানসিক ভারসাম্যহীন এক বিদেশিনিকে নিয়ে নাজেহাল হল পুলিশ ও প্রশাসন। শেষমেশ অবশ্য ওই মহিলাকে সল্টলেকে তাঁর বাঙালি স্বামীর বাড়িতে রেখে আসতে পেরেছেন পুলিশকর্মীরা। আপাতত সেখানেই তিনি রয়েছেন বলে পুলিশ সূত্রের খবর।

Advertisement

পুলিশ জানায়, ফিলিপিন্সের নাগরিক ওই মহিলাকে গত সপ্তাহে বিমানবন্দরের বাইরে ঘোরাঘুরি করতে দেখা যায়। ২৪ মার্চ সেখান থেকে তাঁকে পাঠানো হয়েছিল বেলেঘাটা আইডি হাসপাতালে। করোনাভাইরাস সংক্রমণের উপসর্গ রয়েছে সন্দেহ করেই তাঁকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল। তবে সেখানকার চিকিৎসকেরা মহিলার স্বাস্থ্য পরীক্ষা করে জানিয়ে দেন, তাঁর শরীরে করোনাভাইরাস মেলেনি। ২৬ মার্চ তাঁকে হাসপাতাল থেকে ছেড়ে দেওয়া হয়। পরামর্শ দেওয়া হয়, মহিলা যেন ১৪ দিন বাড়িতেই কোয়রান্টিন থাকেন। কিন্তু লকডাউনের জেরে মহিলা বেলেঘাটা আইডি হাসপাতাল থেকে বাড়ি ফিরতে পারেননি। তাঁকে ওই দিনই কলকাতা লেদার কমপ্লেক্স থানা এলাকায় চিত্তরঞ্জন ন্যাশনাল ক্যানসার ইনস্টিটিউটের কোয়রান্টিন সেন্টারে পাঠানো হয়।

পুলিশ জানায়, শুক্রবার ওই হাসপাতালে চিকিৎসকেরা ফের মহিলার স্বাস্থ্য পরীক্ষা করেন। তাঁরা জানান, মহিলা প্রথাগত চিকিৎসায় সাড়া দিচ্ছেন না, উল্টে বাধা দিচ্ছেন। এমনকি, তাঁকে হাসপাতাল থেকে ছুটি দেওয়া হলেও তিনি তাতে রাজি নন। এই অবস্থায় হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ স্থানীয় পুলিশ প্রশাসনের সাহায্য নেন। খবর দেওয়া হয় লেদার কমপ্লেক্স থানায়।

Advertisement

এক পুলিশকর্তা জানান, মহিলার কাছে থাকা একটি ব্যাগ থেকে তাঁর স্বামীর আধার কার্ড মেলে। তাঁর সঙ্গে যোগাযোগ করে পুলিশ জানতে পারে, মহিলা দীর্ঘদিন ধরে মানসিক রোগাক্রান্ত। তাঁরা আগে থাকতেন সল্টলেকের একটি আবাসনে। বর্তমানে অন্য একটি ভাড়া বাড়িতে থাকছিলেন মহিলা। কয়েক দিন আগে তিনি বাড়ি ছেড়ে বেরিয়ে যান। সম্প্রতি ওই মহিলার মানসিক সমস্যা বেড়ে গিয়েছিল বলে মহিলার স্বামী জানিয়েছেন।

পুলিশ জানায়, মহিলার ননদ তাঁকে বাড়ি ফেরাতে রাজি হচ্ছিলেন না। প্রথমে তাঁর স্বামীও অরাজি ছিলেন। কলকাতা লেদার কমপ্লেক্স থানার পুলিশ বিধাননগর পূর্ব থানার আধিকারিকদের নিয়ে তাঁর স্বামীকে অনেক বোঝানোর পরে তিনি চিত্তরঞ্জন ন্যাশনাল ক্যানসার ইনস্টিটিউটে হাসপাতালে গিয়ে স্ত্রীর সঙ্গে দেখা করেন। ওই হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ মহিলাকে বাঙুর ইনস্টিটিউট অব নিউরো সায়েন্সেসের মনোরোগ বিভাগে পাঠান। সেখানকার চিকিৎসকেরা মহিলা ও তাঁর স্বামীর সঙ্গে কথা বলে জানতে পারেন, দীর্ঘ ২০ বছর ধরে মহিলা মানসিক রোগাক্রান্ত। মহিলাকে কোনও মানসিক হাসপাতালে ভর্তি করানোর পরামর্শ দেন চিকিৎসকেরা। কিন্তু লকডাউনের জেরে তা সম্ভব হয়নি বলে দাবি পুলিশের। এর পরে শুক্রবার রাতে বিধাননগর পূর্ব থানার পুলিশের সাহায্য নিয়ে কলকাতা পুলিশের কর্মীরা মহিলাকে সল্টলেকে তাঁর স্বামীর ভাড়া নেওয়া বাড়িতেই

রেখে আসেন।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন