West Bengal Municipal Election 2020

এত সম্পত্তি! শহর কলকাতায় তৃণমূল কাউন্সিলরের নামে কাটমানি পোস্টার

নিম্ন মধ্যবিত্ত পরিবার থেকে কাউন্সিলর হয়ে কী ভাবে সম্পত্তি বাড়িয়েছেন, তা তাঁর স্থাবর-অস্থাবর সম্পত্তি ধরে ধরে উল্লেখ করা হয়েছে ওই পোস্টারে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ০৫ মার্চ ২০২০ ১০:২৫
Share:

বিতর্কিত সেই পোস্টার (বাঁ দিকে) এবং কাউন্সিলর মৌসুমী দে। -নিজস্ব চিত্র।

তিনি পুরভোটের প্রার্থী হবেন, তা মোটামুটি নিশ্চিত। কিন্তু সেই নাম ঘোষণা হওয়ার আগেই কাটমানি নিয়ে বিতর্ক শুরু হল। নীলরতন সরকার হাসপাতাল এবং আর আহমেদ ডেন্টাল কলেজের গেটের সামনে ৫০ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর মৌসুমী দে-কে উদ্দেশ করে বুধবার রাতে বিশাল হোর্ডিং ঝুলিয়ে দেওয়া হল। ওই হোর্ডিংয়ে তাঁর বিরুদ্ধে কাটমানি-সহ একাধিক দুর্নীতির অভিযোগ জানানো হয়েছে। নিম্ন মধ্যবিত্ত পরিবার থেকে কাউন্সিলর হয়ে কী ভাবে সম্পত্তি বাড়িয়েছেন, তা তাঁর স্থাবর-অস্থাবর সম্পত্তি ধরে ধরে উল্লেখ করা হয়েছে ওই পোস্টারে। তবে হোর্ডিংয়ে যে সম্পত্তির কথা বলা হচ্ছে, তা তাঁর নয় বলেই জানিয়েছেন কাউন্সিলর মৌসুমী দে।

Advertisement

কী রয়েছে ওই হোর্ডিংয়ে?

তার হেডিংয়ে দেওয়া হয়েছে, ‘সৌজন্যে কাটমানি, কলকাতা টু মন্দারমনি’। তার পর ছোট ছোট করে ছবি দিয়ে কোথায় কোথায় তাঁর সম্পত্তি রয়েছে, তা দেখানো হয়েছে। ছবিতে সেই এলাকা বা রাস্তার নামও ছাপা হয়েছে। সুরি লেন এবং সার্পেন্টাইন লেনে তিনি একের পর এক বাড়ি নিজের দখলে নিয়েছেন বলে অভিযোগ জানানো হয়েছে পোস্টারে।

Advertisement

এলাকার বাসিন্দাদের একাংশ জানিয়েছেন, ১০ বছর আগে তাঁর বাবা ছিলেন সেন্ট পলস স্কুলের নিরাপত্তারক্ষী। কোলে মার্কেটের সামনে ছোটখাটো রুটির দোকান ছিল তাঁদের। ২০১০ সালে তিনি প্রথমবার কাউন্সিলর হন। আর মাত্র এই ১০ বছরেই তাঁর সম্পত্তির পরিমাণ নাকি ব্যাপক ফুলে ফেঁপে উঠেছে। নামে-বেনামে প্রচুর সম্পত্তি রয়েছে তাঁর, অভিযোগ নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক স্থানীয় বাসিন্দার।

আরও পড়ুন: দ্বন্দ্ব সামলাতে মালদহে মমতার ধমক নেতাদের

ছোট রুটির দোকান এখন ফুলে ফেঁপে উঠেছে। কলকাতায় স্থাবর সম্পত্তি আটটি এবং মন্দারমনিতে ছ’টি। তার সৌজন্যেই তাঁর জামাইবাবুর নারকেলডাঙা এলাকার বড় ব্যবসায়ী হয়ে উঠেছেন। এমনকি ওই পোস্টারে তাঁর নিজের বসতবাড়ির ছবি দিয়েও ব্যঙ্গ করা হয়েছে। একটা ঘরের জন্য তিনটে এসি মেশিন লাগানো ছবি দিয়ে লেখা হয়েছে, ‘বুঝুন কী গরম’!

আরও পড়ুন: ‘পুলিশই পাথর জোগাড় করে বলেছিল, মারো’

এই নিয়ে কাউন্সিলর মৌসুমী দে-র সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি এই বিষয়টিতে গুরুত্ব দিতে চাননি। কারা ওই পোস্টার ফেলল, তা তাঁর জানা নেই বলেও জানিয়েছেন। তবে তাঁর অভিযোগ, তিনি এলাকায় ভাল কাজ করেছেন, সে কারণে বিরোধীরা কুৎসা রটিয়ে ভোট জেতার চেষ্টা করছেন।

নিজের দলের ভিতরের কেউ এমন কাজ করেননি তো? এই প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, “রাতের অন্ধকারে কারা এ কাজ করেছে, তা কী করে বলি বলুন তো? এ রকম ঘটনা এই প্রথম নয়। আগেও এ রকম পোস্টার পড়েছিল। গত জুলাই থেকেই মোটামুটি নিশ্চিত যে আমিই টিকিট পাচ্ছি। তারপর থেকেই কুৎসা রটানো শুরু হয়েছে।”

আর হোর্ডিংয়ে যে সম্পত্তির কথা বলা হয়েছে, সেগুলো কী তাহলে তাঁরই? এ নিয়ে প্রশ্ন করা হলে কাউন্সিলর বলেন, “তাজমহলের সামনে কেউ দাঁড়িয়ে ছবি তুললেই কী তাজমহল তাঁর হয়ে যায়? যে সম্পত্তির কথা বলা হয়েছে, তার প্রমাণ দিক আগে, তবে বুঝব।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন