বিপদ: মদের বোতলেও বিক্রি হচ্ছে অ্যাসিড। নিজস্ব চিত্র
বোতল ভরা আ্যাসিড শিশুদের কাছেও যে সহজলভ্য, তা দেখলেন খোদ পুলিশ ও প্রশাসনের কর্তারা। সপ্তাহ দুয়েক আগে দক্ষিণ শহরতলির কল্যাণপুরে চলন্ত ট্রেনে দুষ্কৃতীর ছোড়া অ্যাসিডে জখম হন দুই মহিলা। তার পরেই নড়ে বসে প্রশাসন।
গত এক সপ্তাহ ধরে সোনারপুর ও বারুইপুর থানা এলাকায় মহকুমাশাসক শ্যামা পরভিন ও এসডিপিও (বারুইপুর) অর্ক বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে শুরু হয়েছে অ্যাসিডের তল্লাশি অভিযান।
সোনারপুর ও বারুইপুর বাজারে একের পর এক হার্ডওয়্যারের দোকানে হানা দিয়ে অবাক কর্তারা। লোহা-লক্করের পাশাপাশি দোকানে থরে থরে সাজানো সালফিউরিক ও নাইট্রিক অ্যাসিডের বোতল। বিয়ারের খালি বোতলেও ভরা থাকে সেই অ্যাসিড। টাকা দিলেই কোনও খোঁজ না নিয়ে ক্রেতাদের হাতে তা তুলে দেওয়া হয়। সোনারপুরের এক হার্ডওয়্যার ব্যবসায়ীর কথায়, ‘‘শৌচালয় পরিষ্কার ও গয়নার দোকানের কাজের জন্যই অ্যাসিড বিক্রি করি। তার পরে কী হয়, আমারা জানব কী করে?’’ অ্যাসিড বিক্রির ক্ষেত্রে সরকারি বিধি-নিষেধের বিষয়ে অধিকাংশ ব্যবসায়ীই অবগত নন বলে ধারণা পুলিশের। পাশাপাশি, নজরদারিতে গাফিলতির বিষয়টিও মানছে তারা।
শহরেরই বিভিন্ন বাজার থেকে অ্যাসিড কিনে আনেন স্থানীয় ব্যবসায়ীরা। তার রসিদও পুলিশের সামনে দাখিল করেছেন। এক প্রশাসনিক কর্তার কথায়, ‘‘শুধু শহরতলি নয়, শহরের খোলা বাজারে নজরদারি ছাড়া বিক্রি হয় অ্যাসিড।’’
দক্ষিণ ২৪ পরগনার এক পুলিশকর্তার কথায়, ‘‘মূলত স্থানীয় ব্যাটারি ব্যবাসীরা বড়বাজার থেকে ১০০-২০০ লিটার অ্যাসিড কিনে এনে বোতলে ভরে বিক্রি করেন।’’ সোনারপুরের রথতলা এলাকায় একটি ব্যটারির কারখানা থেকে প্রায় ২০০ লিটার অ্যাসিড উদ্ধার হয়েছে বলে দাবি পুলিশের। জেলা পুলিশের এক কর্তা বলেন, ‘‘ব্যবসায়ীদের সঙ্গে বৈঠক করা হবে। অ্যাসিড বিক্রির বিধি-নিষেধের পাঠও দেওয়া হবে।’’