সনিকা সিংহ চৌহান এবং বিক্রম চট্টোপাধ্যায়। —ফাইল চিত্র।
মডেল সনিকা সিংহ চৌহান মৃত্যুর মামলায় অভিনেতা বিক্রম চট্টোপাধ্যায়কে মামলা থেকে অব্যাহতি দেওয়ার আবেদন খারিজ করে দিল আলিপুর আদালত।
গত ২৯ সেপ্টেম্বর বিক্রমের আইনজীবী অনির্বাণ গুহঠাকুরতা আলিপুর জেলা আদালতের বিচারক শান্তনু মিশ্রের কাছে তাঁদের মক্কেলকে এই মামলা থেকে অব্যহতি দেওয়ার জন্যআবেদন জানান। তার সপক্ষে বিক্রমের আইনজীবীর মূল বক্তব্য ছিল, পুলিশ তাদের দেওয়া চার্জশিটে বিক্রমকে মত্ত অবস্থায় গাড়ি চালানোর জন্য অভিযুক্ত করেছে। অথচ ২০১৭-র ২৯ এপ্রিল রাতে বিক্রম যে মদ্যপান করে গাড়ি চালাচ্ছিলেন, সে সংক্রান্ত কোনও মেডিক্যাল রিপোর্ট জমা দিতে পারেননি তদন্তকারীরা। পাশাপাশি অনির্বানের যুক্তি, যে গতিতে বিক্রম সেই রাতে গাড়ি চালাচ্ছিলেন, ভোরের কলকাতায় ফাঁকা রাস্তায় সেই গতিতে গাড়ি চালানোটা স্বাভাবিক। এর মধ্যে কোনও বেপরোয়া হওয়ার সম্পর্ক নেই।একই সঙ্গে বিক্রমের কৌঁসুলির দাবি ছিল, এটা নিছক একটি দুর্ঘটনা। বিক্রমের পক্ষে বোঝা সম্ভব ছিল না দুর্ঘটনা ঘটতে পারে। ওই দুর্ঘটনায় বিক্রম নিজেও মারা যেতে পারতেন। আর সেই কারণেই বিক্রমের বিরুদ্ধে অনিচ্ছাকৃত খুনের যে অভিযোগ তোলা হয়েছে, তার কোনও ভিত্তি নেই।
তবে সরকারি আইনজীবী নবকুমার ঘোষ এই সমস্ত যুক্তিকে উড়িয়ে দিয়ে আদালতে জানান, দুর্ঘটনার সময় গাড়ি ঘণ্টায় ১০৪ কিলোমিটার গতিতে চলছিল, তদন্তে সেটা প্রমাণিত। তাঁর মতে, এটা বিশ্বাস করা কঠিন যে বিক্রমের মতো অভিজ্ঞ চালক যখন ওই গতিতে গাড়ি চালাচ্ছিলেন, তখন তিনি জানতেন না দুর্ঘটনা ঘটতে পারে! সরকারি আইনজীবী সওয়াল করেন, এখান থেকেই স্পষ্ট তিনি কতটা বেপরোয়া ছিলেন। সেই বিপুল গতি এবং বেপরোয়া মানসিকতার সঙ্গে গাড়ি চালানোর কারণেই ওই প্রাণঘাতী দুর্ঘটনা ঘটেছে বলেই যুক্তি দেন সরকারি আইনজীবী।
আরও পড়ুন: ছাত্রীকে যৌন হেনস্থা, রণক্ষেত্র ঢাকুরিয়ার বিনোদিনী স্কুল, গ্রেফতার শিক্ষক
কলকাতার রাস্তায় ওই গতিতে গাড়ি চালানোটা কতটা স্বাভাবিক, তা নিয়ে বিচারক শান্তনু মিশ্র নিজেও সন্দেহ প্রকাশ করেন। তিনি বলেন, ‘‘বিক্রমের আইনজীবীর সমস্ত যুক্তিই বিচারপ্রক্রিয়া চলাকালীন বিবেচ্য।’’ মামলা থেকে বিক্রমকে অব্যাহতির আবেদন খারিজ করে দিয়ে তিনি আগামী ৩ ডিসেম্বর মামলার পরবর্তী শুনানির দিন ঠিক করেন। ওই দিন বিক্রমের বিরুদ্ধে চার্জ গঠন করা হবে।