বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে মৃত্যু প্রৌঢ়ের

স্থানীয় বাসিন্দারা তপনবাবুকে উদ্ধার করে আর জি কর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসকেরা তাঁকে মৃত বলে ঘোষণা করেন। তদন্তকারীরা জানান, এ দিন সকালে জলের পাম্প চালাতে গিয়ে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হন তপনবাবু।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ২৮ অক্টোবর ২০১৯ ০১:৪০
Share:

মর্মান্তিক: পাম্পের ঘরে বেরিয়ে থাকা বিদ্যুতের তারে হাত লেগে মৃত্যু হয় তপনবাবুর। রবিবার, গোকুল মিত্র লেনে। ছবি: বিশ্বনাথ বণিক

এক ব্যক্তির অস্বাভাবিক মৃত্যু হয়েছে। পুলিশ জানিয়েছে, মৃতের নাম তপন চৌধুরী (৫১)। তিনি একটি বেসরকারি সংস্থার কর্মী ছিলেন। তাঁর বাড়ি শ্যামপুকুর থানা এলাকার গোকুল মিত্র লেনে। প্রাথমিক তদন্তের পরে পুলিশের ধারণা, বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে মৃত্যু হয়েছে ওই ব্যক্তির।

Advertisement

পুলিশ সূত্রের খবর, কুমোরটুলির কাছেই ৫, গোকুল মিত্র লেনের একটি পুরনো বাড়ির তিনতলায় সপরিবারে থাকতেন তপনবাবু। রবিবার সকাল ন’টা নাগাদ জলের পাম্প চালাতে তিনি তিনতলা থেকে নীচে নামেন। অনেক ক্ষণ কেটে যাওয়ার পরেও পাম্প চালিয়ে উপরে না উঠে আসায় তপনবাবুকে খুঁজতে শুরু করেন তাঁর পরিবারের সদস্যেরা। প্রায় ঘণ্টাখানেক পরে তিনতলা বাড়ির নীচের তলার এক কোণে পাম্পের ঘরে তাঁর দেহ মেঝেয় পড়ে থাকতে দেখে তাঁর ছেলে শৌভিক। সে-ই পরিবারের সকলকে খবর দেয়।

স্থানীয় বাসিন্দারা তপনবাবুকে উদ্ধার করে আর জি কর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসকেরা তাঁকে মৃত বলে ঘোষণা করেন। তদন্তকারীরা জানান, এ দিন সকালে জলের পাম্প চালাতে গিয়ে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হন তপনবাবু।

Advertisement

রবিবার বিকেলে গোকুল মিত্র লেনে তপনবাবুদের বাড়িতে গিয়ে দেখা গেল, সকলেই শোকাচ্ছন্ন। মৃতের বোন কাকলিদেবী বলেন, ‘‘দাদা পাম্প চালাতে নামার পরে দীর্ঘক্ষণ না ফেরায় ভাইপো পাড়ায় বেরিয়ে খোঁজাখুঁজি শুরু করে। সকালে যে দোকানে দাদা মাঝেমধ্যে লুচি খেতে যান সেখানে গিয়েও দাদাকে পায়নি ভাইপো। প্রায় এক ঘণ্টা পরে পাম্পের ঘরে ঢুকে দাদাকে অচৈতন্য অবস্থায় পড়ে থাকতে দেখা যায়।’’

তপনবাবুদের বাড়িটির সামনে কলকাতা পুরসভার তরফে বিপজ্জনক নোটিস সাঁটানো রয়েছে। বাড়িটির চারপাশে আগাছা জন্মেছে। বাড়ির নীচের তলায় যেখানে পাম্প চালানো হয়, সেটিরও বেশ কিছু অংশ ভেঙে গিয়েছে। শ্যামপুকুর থানার এক আধিকারিকের কথায়, ‘‘বাড়িটি যে ভাবে রয়েছে তাতে যে কোনও মুহূর্তে ভেঙে পড়তে পারে। যেখানে পাম্প রাখা রয়েছে সেই জায়গাটিও ঘুটঘুটে অন্ধকার। বাসিন্দাদের সচেতনার অভাবেই এই দুর্ঘটনা ঘটল।’’

মৃতের এক আত্মীয় প্রদীপ চন্দের কথায়, ‘‘সংসারে তপনই এক মাত্র রোজগেরে ছিল। ছেলে ষষ্ঠ শ্রেণিতে পড়ে। এ বার কী ভাবে সংসার চলবে সেটাই ভাবার বিষয়।’’

পুলিশ জানিয়েছে, যে জায়গায় পাম্প ছিল সেখানে বিপজ্জনক ভাবে বিদ্যুতের তার বেরিয়ে থাকায় সেখানে হাত লেগে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হন তপনবাবু। পুলিশের এক কর্তার কথায়, ‘‘প্রাথমিক তদন্তে জানা গিয়েছে, টুলু পাম্পে করে বাড়ির উপরতলায় জল তোলা হত। তবে পুরসভার জলের লাইনের সঙ্গে সরাসরি পাম্পের সংযোগ রয়েছে কি না, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।’’ একটি অস্বাভাবিক মৃত্যুর মামলা রুজু করে ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন