থেমে গেল সুর। ‘দূর আকাশে তোমার সুর’-এর খোঁজে পাড়ি দিলেন বনশ্রী সেনগুপ্ত। গত ১০ দিন গুরুতর অবস্থায় এসএসকেএম হাসপাতালে ভর্তি থাকার পর আজ রবিবার সকাল ১১টা নাগাদ জীবনবসান হয় শিল্পীর। বয়স হয়েছিল ৭১ বছর। এসএসকেএমের অ্যাসিস্ট্যান্ট সুপার সেমন্তি মুখোপাধ্যায় বললেন, ‘‘দীর্ঘদিন ধরেই লিভার, কিডনি, ফুসফুস ও হার্টের অসুখে ভুগছিলেন বনশ্রীদেবী। গত শনিবার রাত থেকে বাড়াবাড়ি হলে ওঁনাকে আইসিসিইউ-তে ভর্তি করা হয়। আমরা কখনও কখনও জানতে চাইতাম, আপনার কোথায় এত ব্যথা? শরীর একটু ভাল থাকলেই সুর করে গেয়ে উঠতেন, এ ব্যথা কী যে ব্যথা।’’ গায়িকার মৃত্যুর খবর পেয়ে হাসপাতালে পৌঁছন তথ্য সংস্কৃতি দফতরের প্রতিমন্ত্রী ইন্দ্রনীল সেন। তিনি বলেন, ‘‘বনশ্রীদির চলে যাওয়াটা বড় ক্ষতি।’’ দুপুরে রবীন্দ্রসদনে নিয়ে যাওয়া হয় শিল্পীর মরদেহ। সেখানেই তাঁকে শেষ শ্রদ্ধা জানান অনুরাগীরা।
আরও পড়ুন, ‘কেন মন কেমন কেমন…’ লিখছেন হৈমন্তী শুক্লা
শেষ শয়ানে বনশ্রী সেনগুপ্ত। ছবি: সংগৃহীত।
বনশ্রীর জন্ম হুগলির চুঁচুড়ায়। বাবা প্রয়াত শৈলেন্দ্রনাথ রায় ছিলেন উচ্চাঙ্গ সঙ্গীতের শিল্পী। ছোটবেলা থেকে পারিবারিক সাঙ্গীতিক পরিবেশেই বড় হয়ে ওঠা। বাবার কাছেই প্রথম শিক্ষা গানের। শান্তি সেনগুপ্তকে বিয়ে করে কলকাতায় চলে আসেন বনশ্রী। কলকাতায় আসার পর সুধীন সেনগুপ্তর কাছে সঙ্গীত শিক্ষা। আরও অনেকের কাছেই শিখেছেন। কিন্তু টানা ২০ বছর ধরে সুধীনবাবুর কাছে তালিম নিয়ে গেছেন তিনি। বহু বাংলা ছবিতে গান গেয়েছেন। কয়েকশো গান রেকর্ড করেছেন। জীবনে পুরস্কার, সম্মানও পেয়েছেন অনেক। বনশ্রীর মৃত্যুতে শোক প্রকাশ করেছে বাংলা সঙ্গীত জগত্। তাঁর শেষকৃত্যের যাবতীয় দায়িত্ব পালন করেছে রাজ্য সরকার। শোকপ্রকাশ করে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় টুইটারে লেখেন, ‘কিংবদন্তি সঙ্গীতশিল্পী বনশ্রী সেনগুপ্তর মৃত্যুতে গভীর শোকাহত। এই দুঃসময়ে তাঁর পরিবার ও ভক্তদের সমবেদনা।’ প্রয়াত শিল্পীকে মাটির মানুষ হিসেবে উল্লেখ করেন গায়ক শ্রীকান্ত আচার্য।
আরও পড়ুন, টুসি-ছন্দার কাহিনি, এভারেস্টের হাতছানি টলিউডের ছবিতেও