চিড়িয়াখানায় দর্শকদের জন্য এখনও চালু করা যায়নি এই গাড়ি। নিজস্ব চিত্র
টেন্ডারে সাড়া মেলেনি। তাই মেলেনি চালকও। ফলে আলিপুর চিড়িয়াখানায় পাঁচ বছর ধরে পড়ে রয়েছে ব্যাটারি চালিত দু’টি গা়ড়ি। গাড়ি দু’টি নগরোন্নয়ন দফতর এক সময়ে পাঠিয়েছিল প্রবীণ নাগরিক, প্রতিবন্ধী কিংবা শিশুদের চিড়িয়াখানা ঘুরিয়ে দেখানোর জন্য। যদিও চিড়িয়াখান সূত্রের খবর, নতুন বছরে ফের গাড়ি দু’টি দর্শকদের ব্যবহারের জন্য চালু করার তোড়জোড় শুরু করেছেন কর্তৃপক্ষ। তেমনটা করার নির্দেশ দিয়েছেন পুর ও নগরোন্নয়নমন্ত্রী ফিরহাদ হাকিমও।
ভিন্ রাজ্যে চিড়িয়াখানার ভিতরে ঘুরে দেখার জন্য ব্যাটারি চালিত গাড়ির ব্যবহার রয়েছে। সেই ব্যবস্থা কলকাতার চিড়িয়াখানাতেও ২০১৪ সালে চালু করতে চেয়েছিল রাজ্য সরকার। কয়েক মাস চুক্তির ভিত্তিতে একটি সংস্থাকে ব্যাটারি চালিত গাড়ি দু’টি চালানো ও রক্ষণাবেক্ষণের জন্য দেওয়া হয়েছিল। তার পরে টেন্ডার ডেকে চিড়িয়াখানা কর্তৃপক্ষ গাড়ি দু’টি পাকাপাকি ভাবে চালু করার চেষ্টা করেন। কিন্তু তখন আর টেন্ডারে সাড়া মেলেনি। তার পর থেকেই গাড়ি দু’টি এক রকম অব্যবহৃত অবস্থাতেই পড়ে রয়েছে। বর্তমানে শুধু চিড়িয়াখানার রক্ষণাবেক্ষণের কাজ দেখাশোনা করতে মাঝেমধ্যে একটি গাড়ি ব্যবহার করেন আধিকারিকেরা।
বড়দিন, বর্ষবরণ কিংবা বছরের বিভিন্ন সময়ে যখন চিড়িয়াখানায় ভিড় হয়, তখন ওই গাড়ি দু’টি দর্শকদের কাজে আসতে পারেই বলে মনে করেন আলিপুর চিড়িয়াখানার অধিকর্তা আশিস সামন্ত। তিনি জানান, প্রতি গাড়িতে সাত জন করে দর্শক বসতে পারবেন। পায়ে হেঁটে চিড়িয়াখানা ঘুরতে যত সময় লাগে, তার প্রায় অর্ধেক সময়ে গাড়িতে ঘোরা হয়ে যাবে। তিনি বলেন, ‘‘ফেব্রুয়ারির পরে গাড়ি দু’টি চালু করার জন্য ফের টেন্ডার করা হবে। আগের দু’বার যখন ওই টেন্ডার ডাকা হয়, তখনকার চেয়ে এখন চিড়িয়াখানার সুযোগ-সুবিধের ব্যাপারে সচেতনতা সকলেরই বেড়েছে। ফলে আশা করছি, এ বার গাড়ি দু’টি দর্শকদের জন্য চালু করা সম্ভব হবে।’’
শীতের ছুটির মরসুমে চিড়িয়াখানায় অনেক বয়স্ক দর্শককে দেখা গিয়েছে ভিড়ের মধ্যে কষ্ট করে হাঁটছেন। অনেককে দেখা যায়, শিশুকে কোলে নিয়ে ভিড়ের মধ্যে জন্তু-জানোয়ারের খাঁচার আশপাশে ঘুরতে গিয়ে সমস্যায় পড়তে। এই ধরনের দর্শকদের জন্যই গা়ড়ির প্রয়োজন বলে মনে করছেন চি়ড়িয়াখানার আধিকারিকেরা।
রাজ্যের পুর ও নগরোন্নয়নমন্ত্রী তথা কলকাতার নতুন মেয়র ফিরহাদ হাকিম সম্প্রতি চিড়িয়াখানার আধিকারিকদের সঙ্গে বৈঠক করেছিলেন। তিনি নিজেও চান গাড়ি দু’টি অবিলম্বে চালু হোক। ফিরহাদ জানান, বর্তমানে ওই ব্যাটারি চালিত গাড়িতে চার্জ দেওয়ারও স্টেশনও তৈরি হয়েছে চিড়িয়াখানার ভিতরে। তিনি বলেন, ‘‘গাড়ি তো ওই ভাবে পড়ে থাকবে না। আমি চি়ড়িয়াখানাকে পরামর্শ দিয়েছি চুক্তির ভিত্তিতে লোক রেখে গাড়ি দু’টি চালু করতে। এ ভাবে তো ইকো পার্কেও এমন গাড়ি চলছে। এ ক্ষেত্রে আধিকারিকদের আর একটু সক্রিয় ভূমিকা নিতে হবে।’’