শুধু স্বামী-স্ত্রীর মধ্যেই নয়, দুই পরিবারের সম্পর্কও পৌঁছেছিল তলানিতে। যার চরম পরিণতি, খুন! ফুলবাগানে অন্তঃসত্ত্বা গৃহবধূকে খুনের ঘটনায় অভিযুক্ত স্বামী দীপক জৈনকে জেরা করে এ কথাই জেনেছেন তদন্তকারীরা। পুলিশের দাবি, জেরায় খুনের কথা কবুলও করেছে অভিযুক্ত। শুক্রবার শিয়ালদহ আদালতে তোলা হলে দীপককে ২১ অগস্ট পর্যন্ত পুলিশি হেফাজতে রাখার নির্দেশ দিয়েছেন বিচারক।
গত শুক্রবার নারকেলডাঙা মেন রোডে বাপের বাড়ি থেকে উদ্ধার হয় পূজা জৈন নামে ওই বধূর মৃতদেহ। তার পর থেকেই নিখোঁজ ছিলেন পূজার স্বামী, হাওড়ার বাসিন্দা দীপক। পূজার বাপের বাড়ির অভিযোগ ছিল, দীপকই তার স্ত্রীকে খুন করেছে। তাঁদের দাবি, ব্যবসা মন্দা চলার কারণে পূজার বাবাকে একটি দোকান করে দেওয়ার কথা বলছিল দীপক। এমনকি, আট মাসের অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রীকে সে লাগাতার বোঝাত, এই সন্তান সে চায় না। তদন্তে উঠে আসে, গলা টিপে
খুনের পরে খুনি দেহটি খাটের নীচে রেখে দিয়ে যায়। দীপক কেন পালিয়ে গিয়েছিল, তা নিয়ে সন্দেহ তৈরি হয় তদন্তকারীদের।বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় হাওড়া স্টেশন থেকে গ্রেফতার করা হয় দীপককে। পুলিশ জানায়, এই ক’দিন উত্তর ভারতের একাধিক শহরে ঘুরেছে সে। টাকায় টান পড়ায় তাকে ফিরে আসতে হয় শহরে। দিল্লি থেকে সে শহরে ফিরেছিল বলে জেনেছেন তদন্তকারীরা। পরিকল্পনা ছিল, টাকার ব্যবস্থা করেই ফের ট্রেন ধরে রাজ্যের বাইরে পালিয়ে যাওয়া। গোপন সূত্রে খবর পেয়ে দীপককে গ্রেফতার করে ফেলেন তদন্তকারীরা।
ফুলবাগান থানার এক তদন্তকারী আধিকারিক বলেন, ‘‘জেরায় দীপক বলেছে, পূজার বাপের বাড়ি এবং শ্বশুরবাড়ির মধ্যে সম্পর্ক একেবারে তলানিতে গিয়ে ঠেকেছিল। তা নিয়ে স্বামী-স্ত্রীর মধ্যেও ঝামেলা চলত রাত-দিন। খুনের দিন স্ত্রীর সঙ্গে দেখা করতে সে শ্বশুরবাড়িতে গিয়েছিল। সেই সময়ে বাড়িতে একা ছিলেন পূজা। তর্কবিতর্কের মধ্যেই হঠাৎ রাগের মাথায় সে স্ত্রীকে খুন করে।’’ যদিও দুই পরিবারের মধ্যে সম্পর্কের এ রকম অবনতির কারণ কী, তা এখনও জানতে পারেননি তদন্তকারীরা। শিয়ালদহ আদালতের সরকারি আইনজীবী অরূপ চক্রবর্তী এবং মৃন্ময় মিশ্র বলেন, ‘‘ধৃতকে আরও জেরা করা দরকার। তা হলেই উঠে আসবে অজানা সব তথ্য।’’