খাবার চাই, সেফ হোম থেকে বেরিয়ে পথে বিক্ষোভ

এ দিন এই ঘটনা নিয়ে মুখ খোলেন খোদ মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। নবান্নে সাংবাদিকদের তিনি বলেন, ‘‘যাঁরা খাবার সরবরাহ করছিলেন, তাঁদের মধ্যেও করোনা সংক্রমণ হয়েছে। তাই খাবার দিতে একটু দেরি হয়েছে। সরকার বিকল্প ব্যবস্থা করছে। এমন তুচ্ছ কারণে সেফ হোম থেকে বেরিয়ে রাস্তায় নেমে বিক্ষোভ দেখাতে হবে? এ কেমন সহিষ্ণুতা!’’

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১৭ জুলাই ২০২০ ০৩:১৮
Share:

প্রতীকী ছবি।

পর্যাপ্ত খাবার দেওয়া হচ্ছে না, এই অভিযোগ তুলে বৃহস্পতিবার জলখাবারের দাবিতে রাস্তায় নামলেন সেফ হোমে থাকা করোনা-আক্রান্ত রোগীরা। পুলিশ সূত্রের খবর, এ দিন দু’দফায় সায়েন্স সিটি মোড়ের কাছে বিক্ষোভ দেখান ৪০-৫০ জন করোনা রোগী। রীতিমতো রাজপথের মাঝখানে দাঁড়িয়ে যানবাহন আটকে দিয়ে ওই রোগীরা হোমের অব্যবস্থার কথা জানান। দু’বারই অবশ্য খবর পেয়ে প্রগতি ময়দান থানার পুলিশকর্মীরা তাঁদের বুঝিয়ে হোমের ভিতরে পাঠিয়ে দেন। করোনা-আক্রান্তদের মধ্যে যাঁদের কোনও উপসর্গ নেই, তাঁদেরই সেফ হোমে পাঠানো হচ্ছে।

Advertisement

এ দিন এই ঘটনা নিয়ে মুখ খোলেন খোদ মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। নবান্নে সাংবাদিকদের তিনি বলেন, ‘‘যাঁরা খাবার সরবরাহ করছিলেন, তাঁদের মধ্যেও করোনা সংক্রমণ হয়েছে। তাই খাবার দিতে একটু দেরি হয়েছে। সরকার বিকল্প ব্যবস্থা করছে। এমন তুচ্ছ কারণে সেফ হোম থেকে বেরিয়ে রাস্তায় নেমে বিক্ষোভ দেখাতে হবে? এ কেমন সহিষ্ণুতা!’’

এ দিকে, পুলিশের একটি সূত্রের খবর, এ দিন সকাল ৯টা নাগাদ খবর আসে, সেফ হোমের রোগীরা রাস্তায় নেমে এসেছেন। খবর পেতেই তড়িঘড়ি প্রগতি ময়দান থানার পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছয়। এরই মধ্যে রোগীদের একাংশ সেখানে বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করেছেন। অভিযোগ, সকালে কোনও রকম জলখাবার দেওয়া হয়নি তাঁদের। তাই বাধ্য হয়েই রাস্তায় নেমেছেন তাঁরা। সকালে রাস্তায় নেমে বিক্ষোভ দেখানোর পরে বেলা ১১টা নাগাদ তাঁদের ডিম ও রুটি দেওয়া হয় বলে ওই রোগীরা জানিয়েছেন। দ্বিতীয় দফার বিক্ষোভেও অবশ্য পরিষেবা নিয়ে অভিযোগের কথাই জানিয়েছেন তাঁরা।

Advertisement

আরও পড়ুন: ‘একটু বাড়াবাড়ি হচ্ছে, আমরা কি চাকর!’, রাজ্যপালকে পাল্টা নিশানা মুখ্যমন্ত্রীর

বিক্ষোভ দেখানোর সময়ে এক রোগী রাস্তায় নেমে রীতিমতো চিৎকার করে বলতে থাকেন, “আমি উপসর্গহীন করোনা রোগী। পাড়ার লোকজনের অত্যাচারে বাড়ি ছেড়ে এই সেফ হোমে এসে উঠেছি। কিন্তু এখানে খাওয়ার জলটুকু পর্যন্ত নেই। বাথরুমের অবস্থা শোচনীয়। পরিষ্কার পর্যন্ত করা হয় না।” তিনি আরও জানান, সকাল থেকে খাবার না পেয়ে তাঁর শরীর খারাপ লাগছিল। ওই ব্যক্তি বলতে থাকেন, “এর থেকে আমাদের বিষ দিয়ে দিক। আমরা বিষ খেয়ে মরব।”

এ দিনের এই ঘটনার পরেই প্রশ্ন উঠেছে, সেফ হোম থেকে করোনা রোগীরা কী করে বাইরে বেরিয়ে এলেন? পরে অবশ্য ওই সেফ হোমের ভিতরে সবাইকে ঢুকিয়ে দেওয়া হয়। পুলিশের একটি সূত্র জানাচ্ছে, এ দিন সকাল ৯টায় প্রথম দফায় এবং দুপুর ১টায় দ্বিতীয় দফায় ওই সেফ হোম থেকে বেশ কয়েক জন রাস্তায় চলে আসেন। প্রথমে কেউ কিছু বুঝতে না পারলেও পরে তাঁদের দাবিদাওয়া ও চিৎকার শুনে লোকজন বুঝতে পারেন যে, ওই বিক্ষোভকারীরা প্রত্যেকেই সেফ হোমে থাকা করোনা রোগী। ফলে কিছু ক্ষণের জন্য রাস্তায় থাকা লোকজনের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। পরে হোমের লোকজন ও স্থানীয় প্রগতি ময়দান থানার পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে সবাইকে বুঝিয়ে ভিতরে পাঠায়।

আরও পড়ুন: অক্সফোর্ডের করোনা টিকা অক্টোবরেই? সেই চেষ্টাই চলছে, বলছেন বিজ্ঞানীরা

এর আগে গত সপ্তাহে ওই সেফ হোমের ভিতরে থাকা বায়ো-টয়লেটে সাপ ঢুকেছিল বলে অভিযোগ। আরও অভিযোগ, সেখানে সব সময়ে চিকিৎসককে পাওয়া যায় না। কলকাতা পুরসভা সূত্রের খবর, পাঁচতলা ওই নির্মীয়মাণ ভবনকে প্রথমে কোয়রান্টিন কেন্দ্র করা হয়েছিল। বর্তমানে সেটিকে সেফ হোমে রূপান্তরিত করা হয়েছে। এই মুহূর্তে ১৪৭টি শয্যা রয়েছে ওই সেফ হোমে। গত কয়েক দিনে বিভিন্ন সরকারি হাসপাতালে রোগী ভর্তি করতে না পারার অভিযোগ উঠেছে। যার জেরে মৃত্যুর ঘটনাও ঘটেছে। এ বার সেফ হোমে খাবার না পাওয়ার অভিযোগ উঠল।

উচ্চমাধ্যমিকের ফলাফল সম্পর্কিত যাবতীয় আপডেট পেতে রেজিস্টার করুন এখানে

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন