মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও জগদীপ ধনখড়।
রাজ্যপালের অভিযোগ নিয়ে এ বার মুখ খুললেন খোদ মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। নবান্নে বৃহস্পতিবারের সাংবাদিক বৈঠকে রাজভবনকে নিশানা করে একের পর এক আক্রমণ শানালেন তিনি। তাঁর সঙ্গে যোগাযোগ না করার যে অভিযোগ রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড় তুলেছিলেন তা, পত্রপাঠ খারিজ করে দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। তাঁর দাবি, ‘‘গতকালই ওঁকে ৪ বার ফোন করেছি।’’ এ দিন উপাচার্যদের পাশে দাঁড়িয়ে রাজ্যের নয়া আইনের মাধ্যমে তাঁদের কী ক্ষমতা দেওয়া হয়েছে তা-ও মনে করিয়েছেন মমতা। একইসঙ্গে রাজ্যপালকে তাঁর তোপ, ‘‘একটু বাড়াবাড়ি হচ্ছে। আমিও কম দিন রাজনীতি করছি না।’’
বুধবার ২৩টি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যদের নিয়ে রাজ্যপালের ভার্চুয়াল মিটিং ভেস্তে গিয়েছে। কারণ, ওই বৈঠকে রাজ্যের একটি মাত্র বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ছাড়া কেউই ছিলেন না। তা নিয়ে ওই দিন থেকেই রাজ্যকে ঠারেঠোরে বিঁধতে শুরু করেছিলেন ধনখড়। আজ সকালে সাংবাদিক বৈঠক করে রাজ্য প্রশাসনকে লক্ষ্য করে একের পর এক তির ছোড়েন তিনি। তৈরি হয় নবান্ন এবং রাজভবনের মধ্যে সঙ্ঘাতের নতুন দিক। প্রাথমিক ভাবে রাজ্যপালের অভিযোগের জবাব দিয়েছিলেন শিক্ষা মন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়। এর কিছু ক্ষণ পরেই ময়দানে নামেন মুখ্যমন্ত্রী। রাজ্যপালের নাম না করে তিনি বলেন, ‘‘ওঁর বিরুদ্ধে অভিযোগ করছি না। কিন্তু উনি বলছেন, আমি নাকি চিঠির উত্তর দিই না। উনি আমাকে মেসেজ করেছিলেন। গতকালই ওঁর সঙ্গে ৪ বার ফোনে কথা হয়েছে।’’ বিভিন্ন বিষয়ে নবান্ন থেকে রাজ্যপালকে কী কী চিঠি দেওয়া হয়েছে তা-ও তথ্য প্রমাণ সহকারে এ দিন দেখান মমতা।
মুখ্যমন্ত্রী আজ বলেন, ‘‘আমরা রাজ্যপালের মর্যাদা জানি। রাজ্যপাল নিশ্চয় নির্বাচিত সরকারের মর্যাদা জানেন। উনি যেন রাজনীতিকের মতো কথা না বলেন।’’ এর পর ক্ষুব্ধ মুখ্যমন্ত্রী প্রশ্ন তোলেন, ‘‘কোভিড সামলাব না এ সব করব? আমরা কি চাকর-বাকর?’’ নতুন আইনের মাধ্যমে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যদের হাতে রাজ্য যে অধিকার দিয়েছে তা এ দিন পড়ে শুনিয়েছেন তিনি। তাঁর বক্তব্য, রাজ্যপাল শিক্ষা দফতরের মাধ্যমে পরামর্শ দিতে পারেন। রাজ্যপালের উদ্দেশে শিক্ষক সমাজকে সম্মানের সঙ্গে কাজ করতে দেওয়ার কথাও বলেছেন মমতা। এর প্রেক্ষিতেই ঘুরিয়ে নানা সময়ে জওহরলাল নেহরু বিশ্ববিদ্যালয় এবং জামিয়া মিলিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে যে তাণ্ডব চলেছিল সে কথাও মনে করিয়ে দিয়েছেন তিনি
আরও পড়ুন: ভার্চুয়াল বৈঠকে উপাচার্যদের অনুপস্থিতি নিয়ে তোপ রাজ্যপালের, পাল্টা পার্থর
এ দিন সাংবাদিক বৈঠক চলাকালীন মুখ্যমন্ত্রী দাবি করেন, তাঁকে কেউ এক জন আগেই জানিয়েছিলেন ভার্চুয়াল বৈঠকে না এলে বিষয়টি ‘এক্সপ্লোসিভ’ হবে। তাঁর দাবি, তিনি পাল্টা জিজ্ঞাসা করেন, ‘‘ভয়ঙ্কর কী হবে?’’ তবে কে তাঁকে এ কথা বলেছিলেন তা ‘ফাঁস’ করেননি মমতা। এর সঙ্গেই তিনি যোগ করেন, ‘‘যেটা উনি আমাকে বলেছেন বা আমি ওঁকে বলেছি সেটা প্রকাশ্যে বলা উচিত নয়।’’ তিনি আরও বলেন, ‘‘শিক্ষকরা ট্রেড ইউনিয়ন করছে এটাও বলা হয়েছে।’’ তাঁর বক্তব্য, ‘‘ওঁকে অনুরোধ করেছিলাম এর বিরোধিতা করতে যাবেন না। এটা করতে গেলে শিক্ষকরা গর্জে উঠবেন।’’ এর পর প্রচ্ছন্ন হুঁশিয়ারির সুরেই মমতাকে বলতে শোনা যায়, ‘‘একটু বাড়াবাড়ি হচ্ছে। আমিও কম দিন রাজনীতি করছি না। অসহ্যের ভাষা দংশন করছে। আমরা লজ্জিত, মর্মাহত।’’
আরও পড়ুন: কোভিড-সেন্টার অমিল, দেহ পোড়ানো যাচ্ছে না, অনুযোগ মমতার
উচ্চমাধ্যমিকের ফলাফল সম্পর্কিত যাবতীয় আপডেট পেতে রেজিস্টার করুন এখানে |
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy