Coronavirus

দর্শকহীন চিড়িয়াখানায় এখন শুধুই পাখিদের কিচিরমিচির

চিড়িয়াখানার এই ফাঁকা আবহ পশুপাখিদের উপরে কী প্রভাব ফেলবে, তা নিয়ে প্রথমে খানিক সংশয়ে ছিলেন কর্তৃপক্ষ।

Advertisement

দেবাশিস ঘড়াই

শেষ আপডেট: ২৬ মার্চ ২০২০ ০৩:২১
Share:

সুনসান চিড়িয়াখানা চত্বর। নিজস্ব চিত্র

‘ভিড়ে অভ্যস্ত মানুষ যদি হঠাৎ সবকিছু সুনসান দেখে, তখন যেমন তাঁর মনের বিহ্বল অবস্থা হয়, তেমন হয় ওদেরও। প্রথমে ওরা বুঝতে পারেনি যে কী হল। আস্তে-আস্তে ধাতস্থ হওয়ার চেষ্টা করছে।’’— বলছিলেন আলিপুর চিড়িয়াখানার অধিকর্তা আশিসকুমার সামন্ত।

Advertisement

‘ওরা’ অর্থাৎ চিড়িয়াখানার পশুপাখিরা। এমনিতে সংক্রমণ এড়াতে গত সপ্তাহ থেকে আগামী ৩১ মার্চ পর্যন্ত চিড়িয়াখানা বন্ধ রাখার কথা ঘোষণা করা হয়েছিল। কিন্তু মঙ্গলবার প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর ভাষণের পরে সেই সময়সীমা মধ্য এপ্রিল পর্যন্ত বাড়ানো হয়েছে।

চিড়িয়াখানার এই ফাঁকা আবহ পশুপাখিদের উপরে কী প্রভাব ফেলবে, তা নিয়ে প্রথমে খানিক সংশয়ে ছিলেন কর্তৃপক্ষ। কিন্তু যত দিন গড়িয়েছে তত বোঝা গিয়েছে, দর্শক না থাকায় বেশ খুশি চিড়িয়াখানার বেশিরভাগ সদস্যই। চিড়িয়াখানার এক কর্তার কথায়, ‘‘যে সমস্ত প্রাণী ভিড় পছন্দ করে না, তারা এখন ইচ্ছেমতো ঘুরে বেড়াচ্ছে। অনেক সময়ে বেড়ার একদম কাছে চলে আসছে। পাখিদের ডাকও বেড়ে গিয়েছে ফাঁকা চিড়িয়াখানায়।’’ তবে দর্শকদের না দেখে মন খারাপ বাবু ও তার চার সঙ্গী শিম্পাঞ্জির। পশু চিকিৎসকদের একাংশ জানাচ্ছেন, শিম্পাঞ্জি সাধারণত মানুষের সংস্পর্শে খুব একটা বিরক্ত হয় না। আর এত দিনে ওদের সেটাই অভ্যাস হয়ে গিয়েছিল। অধিকর্তা বলছেন, ‘‘দর্শকদের দেখলেই নানা রকম কসরত দেখাত বাবু। সে সব এখন নেই। তাই ওর মন খারাপ।’’

Advertisement

কিন্তু লকডাউনের জন্য চিড়িয়াখানার পশুপাখিদের খাবার সরবরাহ এবং সেই খাবার সময় মতো তাদের দেওয়ার ক্ষেত্রে কী হবে? এ ব্যাপারে আশ্বস্ত করে চিড়িয়াখানা কর্তাদের একাংশ জানাচ্ছেন, প্রতিদিনের মতো নির্দিষ্ট সংস্থাই নিয়মিত তাদের খাবারের জোগান দিচ্ছে। মাছ, মাংস, ডিম, ফল-সহ মোট সাতটি বিভাগে পশুপাখিদের জন্য খাবার আসে। সেই বিভাগেরও আবার অনেক ভাগ। মাংসের মধ্যে যেমন মোষের মাংস (হাড় ছাড়া ও হাড়-সহ), গরুর লিভার, খাসির মাংস রয়েছে, তেমনই কলা-কমলালেবু-খেজুর-সহ ফল আসে কমপক্ষে ১৬ রকমের। বিন, আলু, বরবটি, পেঁয়াজ-সহ মোট ১৬ রকমের আনাজও নেওয়া হয় প্রতিদিন। আশিসবাবুর কথায়, ‘‘এত বড় সংসারে এক এক জনের এক এক রকম পছন্দ, খাওয়া-দাওয়ার ধরন। সবটাই মাথায় রাখতে হয়। খাবারের সরবরাহ নিয়ে কোনও চিন্তা নেই।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন