Coronavirus

আমলা পুত্রের মতোই ‘বেপরোয়া’ বিলেতফেরত তরুণী, আতঙ্ক দক্ষিণের অভিজাত আবাসনে

ওই তরুণী বালিগঞ্জ এলাকার একটি অভিজাত আবাসনের বাসিন্দা। তাঁর বেপরোয়া আচরণের জেরে আতঙ্ক ছড়িয়েছে গোটা আবাসনে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১৯ মার্চ ২০২০ ১৭:৫৫
Share:

প্রতীকী চিত্র- পিটিআই।

শুধু আমলা পুত্রের নয়। কলকাতা সাক্ষী হল আরও এক তরুণীর বেপরোয়া মনোভাবের। অভিযোগ, আক্রান্ত হওয়ার এবং ভাইরাস ছড়ানোর যথেষ্ট সম্ভাবনা থাকা সত্ত্বেও তাঁর বিরুদ্ধেও অভিযোগ নিয়ম কানুন না মানার। এ ক্ষেত্রেও অভিযুক্ত সমাজের উপরতলার মানুষ। ওই তরুণী বালিগঞ্জ এলাকার একটি অভিজাত আবাসনের বাসিন্দা। তাঁর বেপরোয়া আচরণের জেরে আতঙ্ক ছড়িয়েছে গোটা আবাসনে।

Advertisement

ওই আবাসনের বাসিন্দাদের সূত্রে জানা গিয়েছে, ১৪ তলায় মায়ের সঙ্গে থাকেন ওই তরুণী। বছর পঁচিশের ওই তরুণী মঙ্গলবারই ফিরেছেন ইংল্যান্ড থেকে। স্বাস্থ্য দফতরের নিয়ম অনুযায়ী তাঁর নিজের ফ্ল্যাটে ‘হোম আইসোলেশন’-এ থাকার কথা কমপক্ষে ১৪ দিন। যদি তার মধ্যে তাঁর শরীরে করোনাভাইরাসের কোনও উপসর্গ না দেখা দেয় তবে তিনি ফের স্বাভাবিক জীবনে ফিরতে পারেন। আর যদি কোনও উপসর্গ দেখা দেয় তা হলে সঙ্গে সঙ্গে তাঁর চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়ার কথা।

ওই আবাসনের এক বাসিন্দার কথায়, ‘‘মঙ্গলবার ইংল্যান্ড থেকে ফেরার পর আমরা আশা করেছিলাম যে ওই তরুণী নিজের ফ্ল্যাটেই থাকবেন। কিন্তু বাস্তবে দেখা গেল তিনি সর্বত্র ঘুরে বেড়াচ্ছেন। আবাসনের বাইরেও নিয়মিত ঘুরে বেড়াচ্ছেন।” অন্য এক বাসিন্দার অভিযোগ, ‘‘ওই তরুণী হাল্কা সর্দিও রয়েছে।” তিনি বলেন, ‘‘প্রথমে আমরা মেয়েটিকে বোঝানোর চেষ্টা করি। কিন্তু আমাদের কোনও কথাই কানে তোলেননি তিনি।” এর পর আবাসন কমিটির পক্ষ থেকে ওই তরুণী এবং তাঁর পরিবারকেও বলা হয়। তারপরও রীতিমতো গা ছাড়া মনোভাব।

Advertisement

ওই আবাসনের এক বাসিন্দা বলেন, ‘‘রবিবার আমাদের আবাসনের অন্য এক বাসিন্দা অস্মিকা সিংহ ইংল্যান্ড থেকে ফেরেন। তিনি স্বাস্থ্য দফতরের নির্দেশ মেনে নিজেকে ঘর বন্দি করেছেন। তাঁর বাবা বাইরে থাকছেন। অস্বিকা একটি ঘরে থাকছেন। কারও সঙ্গে দেখা করছেন না। খাবার ফ্ল্যাটের বাইরে রেখে কলিং বেল দেওয়া হলে তিনি খাবার নিয়ে যাচ্ছেন।” অস্বিকাও নিজে ওই তরুণীকে বোঝানোর চেষ্টা করেন কিন্তু ব্যর্থ হন।

আরও পড়ুন: স্যানিটাইজ়ার-স্পিরিট নিয়ে পরীক্ষা কেন্দ্রে মা-বাবারা

এরই মধ্যে আমলা পুত্রের ঘটনায় আরও আতঙ্ক ছড়িয়েছে বাসিন্দাদের মধ্যে। ওই একই আবাসনে থাকেন সঙ্গীত শিল্পী শ্রাবণী সেন। তিনি বলেন, ‘‘এই আবাসনের বাসিন্দাদের একটা বড় অংশই বয়স্ক মানুষ। ৬০ বছরের বেশি বয়সী তাঁরা। আমার মায়েরই বয়স ৮৭ বছর। অধিকাংশই কোনও না কোনও রোগে ভুগছেন। তার মধ্যে এই ভাইরাস কোনও ভাবে সংক্রামিত হলে তা তো ভয়ঙ্কর আকার নেবে।”

এ রকম ভাবেই মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র থেকে ফিরে হোম আইসোলেশনে থাকার বদলে রীতিমতো পাড়ায় ঘুরে বেড়াচ্ছিলেন গড়িয়াহাট থানা এলাকার এক যুবক। বাবা এলাকার নামী ব্যবসায়ী। এলাকার মানুষের কাছ থেকে খবর পেয়ে পুলিশ যুবকের বাবাকে নির্দেশ দেয় ছেলেকে ঘর বন্দি করে পর্যবেক্ষণে রাখতে। এক পুলিশ কর্মী বলেন, মহামারী আইন বলবৎ হওয়ায়, প্রশাসন বাধ্য করতে পারে এ ধরনের নিয়ম ভঙ্গকারীকে ঘর বন্দি করতে।

আরও পড়ুন: পঞ্চসায়রে করোনা আক্রান্তের আবাসনে ত্রাস, বেরোচ্ছেন না বাসিন্দারা

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement
Advertisement