Coronavirus

করোনাভাইরাসের সংক্রমণ এড়াতে বাজার-দোকানে ‘সুরক্ষারেখা’ টানল কলকাতা পুলিশ

নারকেলডাঙা মেন রোডে ন্যায্য মূল্যের দোকানে চক দিয়ে বৃত্ত এঁকে দেন পুলিশকর্মীরা। একই ছবি ধরা পড়েছে পাটুলিতেও।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ২৫ মার্চ ২০২০ ১৪:২৯
Share:

বেলেঘাটায় ওষুধের দোকানের সামনে ‘সুরক্ষারেখা’র ভিতরে ক্রেতারা। নিজস্ব চিত্র

করোনাভাইরাসের মোকাবিলায় দেশ জুড়ে লকডাউন। জরুরি প্রয়োজন ছাড়া বাড়ি থেকে বেরোতে নিষেধ করা হয়েছে। বারে বারেই বলা হয়েছে ‘সামাজিক দূরত্ব’ তৈরি করতে। ছাড় রয়েছে জরুরি পরিষেবায়। শাক-সব্জি, মাছ-মাংস, মুদির দোকান-সহ অত্যাবশ্যকীয় পণ্য সামগ্রীর ক্ষেত্রেও রয়েছে ছাড়। দোকানপাট খোলা। বাজারে তাই উপচে পড়া ভিড়। সেই সময় যাতে সামাজিক দূরত্ব বজায় থাকে, সে বিষয়ে এ বার উদ্যোগী হল এ রাজ্যের পুলিশ-প্রশাসন। ক্রেতাদের মধ্যে কম করে এক মিটার দূরত্ব রাখতে চক দিয়ে রাস্তার উপরেই বৃত্ত এঁকে সুরক্ষারেখা টেনে দেওয়া হচ্ছে। বুধবার কলকাতার বেশ কিছু এলাকার বাজারে ওই সুরক্ষারেখা টানার কাজ করেছে পুলিশ।

Advertisement

তবে সর্বত্র এমন হচ্ছে না। এখনও খাবার মজুত করার হিড়িক দেখা যাচ্ছে মুদি থেকে ওষুধের দোকানে। কাঁচা সব্জি কিনতেও ভিড় হচ্ছে বাজারগুলিতে। চিকিৎসকরা তো বটেই প্রশাসনের সর্বোচ্চ স্তর থেকেও করোনাভাইরাসের মোকাবিলায় ভিড় এড়ানোর পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে। কিন্তু লকডাউন থাকা অবস্থাতেই যে ভাবে জনতার একাংশ নিয়মের তোয়াক্কা করছেন না, তাতে বিপদের আশঙ্কা তৈরি হচ্ছে।

উল্টোডাঙায় মুদিখানা দোকানের সামনে ক্রেতারা। নিজস্ব চিত্র

Advertisement

যেমন ট্যাংরা এলাকার শ্যামস্টোরে এ দিন যাঁরা জিনিসপত্র কিনতে এসেছিলেন, তাঁদের মধ্যে যাতে দূরত্ব বজায় থাকে, সে জন্য চক দিয়ে গোল চিহ্ন করে দেওয়া হয়। ওই গোল চিহ্নের মধ্যে দাঁড়িয়ে থাকছেন ক্রেতারা। একটি বৃত্ত ফাঁকা হলেই পরের জন এগিয়ে যাচ্ছেন। এ ভাবেই এক এক করে দোকানে ঢুকছেন সকলে। একই ছবি ধরে পড়েছে উল্টোডাঙার গুরুদাস দত্ত গার্ডেন লেনে। সেখানেও মানুষ দূরত্ব বজায় রেখে জিনিসপত্র কিনছেন। ফুলবাগানেও একই চিত্র। চক ছাড়াও কোথাও কোথাও চুন দিয়েও টানা হচ্ছে ‘সুরক্ষারেখা’। নারকেলডাঙার কয়েকটি দোকানেও একই ভাবে সামাজিক দূরত্ব রেখে যাতে বেচাকেনা হয়, তার চেষ্টা হচ্ছে।

পাটুলিতে ‘সুরক্ষারেখা’র ভিতরে দাঁড়িয়ে ক্রেতারা। নিজস্ব চিত্র

আরও পড়ুন: ফ্লিপকার্ট, বিগবাস্কেটের পরিষেবা বন্ধ, লকডাউনের গেরোয় শিকেয় অনলাইন ব্যবসা

নারকেলডাঙা মেন রোডে যেমন ন্যায্য মূল্যের দোকানেও একই ভাবে চক দিয়ে বৃত্ত এঁকে দেন পুলিশকর্মীরা। একই ছবি ধরা পড়েছে পাটুলিতেও। কিছু কিছু রেশন দোকানেও একই বন্দোবস্ত হয়েছে। গোবিন্দ খটিক রোডে একটি রেশন দোকানের বাইরেও বৃত্ত এঁকে দেওয়া হয়েছে। শহরে এমন উদ্যোগে খুশি ক্রেতারাও। কলকাতার পুলিশ কমিশনার অনুজ শর্মা এ দিন বিকেলের দিকে টুইট করে জানিয়েছেন, ‘অনুগ্রহ করে বাজারে পারস্পরিক দূরত্ব বজায় রাখুন। কলকাতা পুলিশের তরফে বাজারে-দোকানে ক্রেতাদের মধ্যে ‘সুরক্ষারেখা’ চালু হয়েছে।’

আরও পড়ুন: করোনা প্রতিরোধী হাইড্রক্সি ক্লোরোকুইনের রফতানি নিষিদ্ধ করল কেন্দ্র

এ প্রসঙ্গে কলকাতা পুলিশের ডিসি (পূর্ব শহরতলি) অজয় প্রসাদ বলেন, “করোনা সংক্রমণ রুখতে দূরত্ব বজায় রাখা উচিত। আমরা ক্রেতাদের ভালর জন্যই এটা করছি। সাধারণ মানুষের সহযোগিতা পেলে তবেই করোনা মোকাবিলায় এগোতে পারব।” কিন্তু, সর্বত্র কেন এমন উদ্যোগ দেখা যাচ্ছে না? কলকাতা পুলিশ সূত্রে খবর, কয়েক দিনের মধ্যে শহরের গুরুত্বপূর্ণ বাজারগুলিতে যাতে এমন নিয়ম মেনে বেচা-কেনা হয়, সে দিকেই নজর দিচ্ছে পুলিশ।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন