প্রতীকী ছবি।
রাজারহাটের সিএনসিআইয়ে ভর্তি ছিলেন চারু মার্কেট থানার কনস্টেবল দেবেন্দ্রনাথ তিরকি। তাঁর অবস্থার অবনতি হলে কাউকে কিছু না জানিয়েই সেখান থেকে তাঁকে সাগর দত্ত মেডিক্যাল কলেজে হাসপাতালে স্থানান্তরিত করা হয় বলে অভিযোগ। গত মঙ্গলবার সেখানেই তাঁর মৃত্যু হয়। পরে সহকর্মী ও পুলিশ আধিকারিকেরা জানতে পারেন তাঁকে দু’দিন আগেই স্থানান্তরিত করা হয়েছিল।
এমন ঘটনা ঠেকাতে এ বার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন কর্মীদের বিষয়ে প্রতিদিন খোঁজখবর নেওয়ার জন্য থানার আধিকারিকদের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। একই সঙ্গে কলকাতা পুলিশের প্রতিটি ইউনিটকে বলা হয়েছে কর্মীদের খোঁজ নিয়ে দু’বেলা ডিসিদের রিপোর্ট দেওয়ার জন্য। থানার কোনও পুলিশকর্মী অনুপস্থিত থাকলে তাঁর বিষয়েও খোঁজ নিতে বলা হয়েছে ওসিদের। কেউ যদি কাজে এসে অসুস্থ বোধ করেন, তাঁর চিকিৎসার ব্যবস্থাও করতে বলা হয়েছে ওসিদেরই।
লালবাজারের এক কর্তা শনিবার বলেন, ‘‘কারও জ্বর বা উপসর্গ থাকলে দ্রুত তাঁকে করোনা পরীক্ষা করাতে বলা হয়েছে। এবং সব কিছুই ডিসির নজরে নিয়ে আসার জন্য বলা হয়েছে।’’
কলকাতা পুলিশের আর এক কর্তা জানান, তিনি তাঁর অধীনস্থ সব ওসি এবং এসিদের নির্দেশ দিয়েছেন অসুস্থদের সম্পর্কে দিনে দু’বার রিপোর্ট দিতে। লালবাজার জানিয়েছে, সব থানা এবং ইউনিট নিজের ডিসিদের কাছে সহকর্মীরা কেমন আছেন, এই বিষয়ে নিয়মিত জানাতে শুরু করেছে।
করোনায় ইতিমধ্যে কলকাতা পুলিশের সাত জন মারা গিয়েছেন। এ দিন রাত পর্যন্ত করোনায় আক্রান্তের সংখ্যা ১২৬৪ জন। শনিবার নতুন করে ৪৩ জন আক্রান্ত হয়েছেন বলে খবর। এ দিন সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন ৩৪ জন। সব মিলিয়ে সাড়ে ন’শোর বেশি কর্মী-অফিসার সুস্থ হয়ে উঠেছেন বলেই লালবাজারের দাবি।
সুস্থতার হার বেশি থাকলেও যে ভাবে বাহিনীর মধ্যে সংক্রমণ ছড়াচ্ছে, তাতে চিন্তিত লালবাজার। এর মধ্যে দেবেন্দ্রনাথবাবুর মতো ঘটনা যাতে না ঘটে, তার জন্য স্বাস্থ্য দফতরের সঙ্গে যোগাযোগ আরও বাড়ানো হয়েছে। কলকাতা পুলিশের ওয়েলফেয়ার সেল সব চিকিৎসা সংক্রান্ত বিষয়ের দেখভাল করছে। থানার অধিকারিকদের ওই সেলের সঙ্গে যোগাযোগ রাখতে বলা হয়েছে। কারও অবস্থা গুরুতর হলে দ্রুত কথা বলে ব্যবস্থা নেওয়া যাবে বলে মনে করছেন পুলিশের আধিকারিকেরা।
কলকাতা পুলিশের একটি অংশের অভিযোগ, ইতিমধ্যে হাসপাতালে শয্যা খালি নেই বলে করোনায় আক্রান্ত হওয়ার পরে ভর্তি হতে দেরি হচ্ছে বাহিনীর সদস্যদের।
(জরুরি ঘোষণা: কোভিড-১৯ আক্রান্ত রোগীদের জন্য কয়েকটি বিশেষ হেল্পলাইন চালু করেছে পশ্চিমবঙ্গ সরকার। এই হেল্পলাইন নম্বরগুলিতে ফোন করলে অ্যাম্বুল্যান্স বা টেলিমেডিসিন সংক্রান্ত পরিষেবা নিয়ে সহায়তা মিলবে। পাশাপাশি থাকছে একটি সার্বিক হেল্পলাইন নম্বরও।
• সার্বিক হেল্পলাইন নম্বর: ১৮০০ ৩১৩ ৪৪৪ ২২২
• টেলিমেডিসিন সংক্রান্ত হেল্পলাইন নম্বর: ০৩৩-২৩৫৭৬০০১
• কোভিড-১৯ আক্রান্তদের অ্যাম্বুল্যান্স পরিষেবা সংক্রান্ত হেল্পলাইন নম্বর: ০৩৩-৪০৯০২৯২৯)