লাগামছাড়া: বিধি উড়িয়ে এ ভাবেই বাড়ছে ভিড়। বৃহস্পতিবার, নিউ মার্কেটে। ছবি: সুমন বল্লভ
কলকাতা পুরসভার তথ্য বলছে, ৮৩৬। স্বাস্থ্য দফতরের বুলেটিনের দাবি, সংখ্যাটা ৬৭২। যার জেরে বুধবার কলকাতা পুর এলাকায় এক দিনে আক্রান্তের প্রকৃত সংখ্যা কত, তা নিয়ে ধন্দ তৈরি হয়েছে।
পুরসভা সূত্রের খবর, কন্ট্যাক্ট ট্রেসিংয়ের সুবিধার্থে প্রতিদিন কোন বরোয় কত জন আক্রান্ত হয়েছেন, তার একটি তালিকা তৈরি করেন পুর কর্তৃপক্ষ। সেই তালিকা বরোর আধিকারিকদের পাশাপাশি মেডিক্যাল অফিসারদের কাছেও পৌঁছে যায়। বুধবারের তালিকায় থাকা ৮৩৬ জনের মধ্যে ১৩৬ জনই ১০ নম্বর বরোর। আক্রান্তের সংখ্যার নিরিখে দ্বিতীয় ও তৃতীয় স্থানে রয়েছে ১২ (৮৯) এবং ১৩ নম্বর বরো (৮৪)। আক্রান্তদের মধ্যে ৬৫২ জনই উপসর্গহীন। উপসর্গযুক্ত আক্রান্তের সংখ্যা ১৮৪। আক্রান্তদের মধ্যে ৬২ জনের সঙ্গে যোগাযোগ করে তাঁরা কোন ওয়ার্ডের, তা জানা যায়নি। এই পরিস্থিতিতে স্বাস্থ্য দফতরের বুলেটিনের সঙ্গে পুর তালিকার এতটা ফারাক কেন, তা নিয়ে পুর আধিকারিকেরাই ধন্দে।
ধন্দ কাটানোর সূত্র স্বাস্থ্য দফতরের বুলেটিনেই রয়েছে বলে মত জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞদের একাংশের। গত ১৪ জুলাই বঙ্গে এক দিনে আক্রান্তের সংখ্যা তিন হাজার পেরোয়। সেই থেকে ৩৩০০-র মধ্যেই আক্রান্তের সংখ্যা বেঁধে রেখেছে স্বাস্থ্য দফতর। এক দিনে নমুনা পরীক্ষার সংখ্যা ওঠানামা করলেও পজ়িটিভের হার আট শতাংশের নীচেই রয়েছে।
আরও পড়ুন: উৎসবের আগে ‘করোনা-ক্লান্তি’ ডাকছে বিপদ
দক্ষিণবঙ্গের একটি জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক বলেন, ‘‘প্রতিদিন কত নমুনা পরীক্ষা হবে, আক্রান্তের সংখ্যা কত রাখতে হবে, সে বিষয়ে অলিখিত নির্দেশিকা রয়েছে।’’ পুর চিকিৎসকদের একাংশের দাবি, রাজ্যের বুলেটিনে এক দিনে আক্রান্তের সংখ্যা তিন হাজারের ঘরে রাখতে গিয়ে জেলার পরিসংখ্যানে হেরফের ঘটানো হচ্ছে। পুরসভার মঙ্গলবারের তালিকাতেই বিষয়টি স্পষ্ট। ওই দিন পুরসভার নিজস্ব তালিকায় ২৪ ঘণ্টায় আক্রান্তের সংখ্যা ছিল ৬৭৬। কিন্তু স্বাস্থ্য দফতরের বুলেটিনে তা ৬৯১।
আরও পড়ুন: ফুলবাগান পর্যন্ত মেট্রো হয়তো আগামী সপ্তাহেই
এক পুর আধিকারিক বলেন, ‘‘আমাদের তালিকার পাশাপাশি স্বাস্থ্য দফতর থেকে কন্ট্যাক্ট ট্রেসিংয়ের একটি তালিকা আসে। দু’টি তালিকার মধ্যে কমবেশি ফারাক থাকে। কিন্তু এত ফারাক কেন!’’ স্বাস্থ্যসচিব নারায়ণস্বরূপ নিগম বলেন, ‘‘তথ্যের ফারাক রয়েছে কি না, যাচাই করা প্রয়োজন। পুরসভার সঙ্গে এ নিয়ে কথা বলা হবে।’’
এক পুরকর্তা জানান, কন্ট্যাক্ট ট্রেসিংয়ের কাজে গতি আনতে আইসিএমআরের পোর্টালের তথ্যের ভিত্তিতে ওই তালিকা তৈরি হয়। আক্রান্তেরা সুস্থ না হওয়া পর্যন্ত একাধিক বার নমুনা পরীক্ষা করাতে পারেন। পুর তালিকায় একই ব্যক্তির নাম দু’বার নথিভুক্ত হল কি না, তা দেখা হয় না। কিন্তু স্বাস্থ্য ভবনের তালিকায় সেই ধরনের নাম বাদ যায়।
(জরুরি ঘোষণা: কোভিড-১৯ আক্রান্ত রোগীদের জন্য কয়েকটি বিশেষ হেল্পলাইন চালু করেছে পশ্চিমবঙ্গ সরকার। এই হেল্পলাইন নম্বরগুলিতে ফোন করলে অ্যাম্বুল্যান্স বা টেলিমেডিসিন সংক্রান্ত পরিষেবা নিয়ে সহায়তা মিলবে। পাশাপাশি থাকছে একটি সার্বিক হেল্পলাইন নম্বরও
• সার্বিক হেল্পলাইন নম্বর: ১৮০০ ৩১৩ ৪৪৪ ২২২
• টেলিমেডিসিন সংক্রান্ত হেল্পলাইন নম্বর: ০৩৩-২৩৫৭৬০০১
• কোভিড-১৯ আক্রান্তদের অ্যাম্বুল্যান্স পরিষেবা সংক্রান্ত হেল্পলাইন নম্বর: ০৩৩-৪০৯০২৯২৯)