Calcutta News

এখনও ঘেরাওমুক্ত নন উপাচার্য, প্রবেশিকার দাবিতে উত্তাল যাদবপুর

বুধবারই কর্মসমিতির বৈঠকের পর বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার জানিয়ে দিয়েছিলেন, কলা বিভাগের ছ’টি বিষয়ে প্রবেশিকার মাধ্যমে ভর্তি নেওয়া হবে না। তার বদলে উচ্চ মাধ্যমিক বা সমতুল্য পরীক্ষায় প্রাপ্ত নম্বরের ভিত্তিতেই পড়ুয়ারা ভর্তি হওয়ার সুযোগ পাবেন।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ০৫ জুলাই ২০১৮ ১২:০৪
Share:

যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের বিক্ষোভ চলছেই।—নিজস্ব চিত্র।

প্রবেশিকা পরীক্ষার মাধ্যমেই কলা বিভাগে ভর্তি নিতে হবে। এই দাবিতেই রাতভর ঘেরাও হয়ে রইলেন যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য সুরঞ্জন দাস। বুধবার বিকেল থেকে শুরু হওয়া বিক্ষোভ চলে বৃহস্পতিবার বিকেলেও।

Advertisement

এ দিন পড়ুয়াদের বিক্ষোভেই মাঝেই শুরু হয়েছে কর্মসমিতির বৈঠক। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী নম্বরের ভিত্তিতে ভর্তি নেওয়া হবে। ভর্তির যোগ্যতামান স্থির করতেই এ দিন বৈঠকে বসেন কর্মসমিতির সদস্যরা।

গত কাল বিকেল ৫টা থেকে উপাচার্যকে ঘেরাও করে অবস্থান শুরু করেন অনড় পড়ুয়ারা। যাদবপুরের ছাত্র-ছাত্রীদের দাবি, যত ক্ষণ না বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ তাঁদের সিদ্ধান্ত বদল করছেন, এই ঘেরাও কর্মসূচি চলবে।

Advertisement

বুধবারই কর্মসমিতির বৈঠকের পর বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার জানিয়ে দিয়েছিলেন, কলা বিভাগের ছ’টি বিষয়ে প্রবেশিকার মাধ্যমে ভর্তি নেওয়া হবে না। তার বদলে উচ্চ মাধ্যমিক বা সমতুল্য পরীক্ষায় প্রাপ্ত নম্বরের ভিত্তিতেই পড়ুয়ারা ভর্তি হওয়ার সুযোগ পাবেন। তার সঙ্গে তিনি এ-ও জানিয়ে দেন, বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি প্রক্রিয়া নিয়ে ছাত্র-ছাত্রীদের কোনও মতামত থাকতে পারে না।

দেখুন ভিডিয়ো

বিশ্ববিদ্যালয়ের এই সিদ্ধান্ত জানার পরেই ক্ষোভে ফেটে পড়েন যাদবপুরের পড়ুয়ারা। দীর্ঘ দিন ধরেই বিশ্ববিদ্যালয়ের কলা বিভাগে প্রবেশিকার মাধ্যমে ভর্তি নেওয়ার রীতি চলে আসছে। পরীক্ষার মাধ্যমেই যাচাই করে নেওয়া হয় সেই শিক্ষার্থীদের গুণগত মানও। হঠাৎ করে দীর্ঘ দিনের রীতি বদলে ফেলাতেই এই ক্ষোভের বহিঃপ্রকাশ। এমনটাই মনে করছে ওয়াকিবহাল মহল।

আরও পড়ুন: সুরেন্দ্রনাথে তুলকালাম, হাজির পুলিশ কমিশনার

আরও পড়ুন: সরকারের চাপে মাথা নোয়ালো যাদবপুর, ভর্তি নম্বরের ভিত্তিতেই

প্রবেশিকা পরীক্ষার মাধ্যমে ভর্তি নেওয়ার পক্ষেই রয়েছেন যাদবপুরের অধ্যাপকদের একাংশও। তাঁদের পাশে দাঁড়িয়েছেন শঙ্খ ঘোষ-সহ সমাজের ১২ জন বিশিষ্ট ব্যক্তি। তাঁদেরও বক্তব্য, যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালের উৎকর্ষ ধরে রাখতে হলে পরীক্ষার মাধ্যমে কলা বিভাগে ভর্তি নেওয়া উচিত। কিন্তু শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় বরাবরই বলে এসেছেন, একই বিশ্ববিদ্যালয়ে কিছু বিষয়ের নম্বরের ভিত্তিতে এবং কিছু বিষয়ে পরীক্ষার মাধ্যমে ভর্তি— তা চলতে পারে না। যে কোনও একটি পদ্ধতি মেনে চলা উচিত। দু’দিন আগেও শিক্ষামন্ত্রী তাঁর এই মনোভাবের কথা সংবাদমাধ্যমকে জানিয়েছিলেন। এর ২৪ ঘণ্টা কাটতে না কাটতেই বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মসমিতির বৈঠকে সিদ্ধান্ত হয়ে যায়, প্রবেশিকা নয়, এ বছর প্রাপ্ত নম্বরের ভিত্তিতেই স্নাতক স্তরে কলা বিভাগে ভর্তি নেওয়া হবে। পড়ুয়া, বিদ্বজ্জন থেকে শুরু করে শিক্ষাবিদ-সহ বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন উপাচার্যদের মত, শিক্ষামন্ত্রীর ইচ্ছেকেই গুরুত্ব দিতে গিয়ে সরকারের চাপানো সিদ্ধান্ত মেনে নিল যাদবপুর। আর এর বিরুদ্ধেই উত্তাল যাদবপুর ক্যাম্পাস। পড়ুয়াদের বিক্ষোভ কর্মসূচিতে সামিল হবেন বলে জানিয়েছেন বহু প্রাক্তনী।

নিজেদের অবস্থানে অনড় যাদবপুরের পড়ুয়ারা। —নিজস্ব চিত্র।

গত ৯ জুন পরীক্ষার দিন ঘোষণা করে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় কতৃপক্ষ কলা বিভাগের ছ’টি বিষয়ে প্রবেশিকা পরীক্ষা নেওয়া হবে বলে বিজ্ঞপ্তি জারি করেছিলেন। সেই হিসেবেই বিভিন্ন ছাত্রছাত্রীরা পরীক্ষার প্রস্তুতি নিতে শুরু করেছেন। হঠাৎ বিজ্ঞপ্তি প্রত্যাহার করে বিশ্ববিদ্যালয়। এর পরেই চরম বিভ্রান্তি শুরু হয়। সিদ্ধান্ত প্রত্যাহারের দাবিতে সে সময় ৪৪ ঘণ্টা উপাচার্যকে ঘেরাও করে রাখেন যাদবপুরের পড়ুয়ারা। পরে সমাধানের আশ্বাস মেলায় ঘেরাও উঠে গিয়েছিল। কিন্তু ফের শিক্ষামন্ত্রীর সিদ্ধান্তকেই মেনে নেওয়ায় শুরু হয়েছে অনির্দিষ্ট কালের বিক্ষোভ।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন