দুপুরের পরেই তালা আইডি-র প্যাথলজিতে

স্বাস্থ্য ভবন জানাচ্ছে, এমতাবস্থায় পরিস্থিতি সামাল দিতে গত ১৪ অগস্ট শহরের বিভিন্ন মেডিক্যাল কলেজ থেকে চার জন মেডিক্যাল টেকনোলজিস্টকে (ল্যাব) অবিলম্বে বেলেঘাটা আইডি-তে যোগ দেওয়ার জন্য বিজ্ঞপ্তি জারি করা হয়েছে। কিন্তু কলকাতা মেডিক্যাল, এন‌ আর‌ এস, আর জি কর এবং ন্যাশনাল মেডিক্যাল কলেজ থেকে ওই চার জন এখনও পর্যন্ত কাজে যোগ দেননি। মাত্র আট জন কর্মী নিয়ে চলছে প্যাথলজি বিভাগ। ফলে বেহাল পরিষেবার‌ও বদল ঘটেনি।

Advertisement

সৌরভ দত্ত

কলকাতা শেষ আপডেট: ৩১ অগস্ট ২০১৯ ০২:২৭
Share:

ভিড়: বেলেঘাটা আইডি-তে রোগীদের লাইন। ফাইল চিত্র

যদি হয় সূর্যাস্ত, বেলেঘাটা আইডি হাসপাতালে রক্ত পরীক্ষা দূর অস্ত্‌! কর্মী-সঙ্কটের জেরে ডেঙ্গি ও ডায়রিয়ার মরসুমে খাস কলকাতার সরকারি হাসপাতালে এমন‌ই বেহাল পরিষেবার সম্মুখীন হচ্ছেন রোগীরা।

Advertisement

স্বাস্থ্য ভবন সূত্রের খবর, মঙ্গলবার পর্যন্ত বেলেঘাটা আইডি হাসপাতালে ডায়রিয়ায় আক্রান্ত রোগীরসংখ্যা ছিল ৮৫। ডেঙ্গিতে আক্রান্ত হয়ে ভর্তি ছিলেন ২৭ জন। ডেঙ্গি সংক্রমণে যাতে প্রাণহানির ঘটনা না ঘটে, সে জন্য চিকিৎসায় প্রোটোকল বেঁধে দিয়েছে স্বাস্থ্য ভবন। তাতে

বলা হয়েছে, চিকিৎসাধীন রোগীর দিনে দু’বার প্লেটলেট পরীক্ষা করতে হবে। রক্ত পরীক্ষা প্রয়োজন ডায়রিয়ায় আক্রান্ত রোগীর‌ও। কিন্তু

Advertisement

হাসপাতালের চিকিৎসকদের একাংশের বক্তব্য, পর্যাপ্ত মেডিক্যাল টেকনোলজিস্ট (ল্যাব) না থাকায় সন্ধ্যা ছ’টার পরে প্যাথলজি বিভাগ বন্ধ হয়ে যায়। অধিকাংশ দিন দুপুর দুটোর পরে রক্তের নমুনা নেওয়া হয় না। স্বাভাবিক ভাবেই সরকারি হাসপাতালে ২৪ ঘণ্টা রক্ত

পরীক্ষার সুযোগ না পাওয়ায় রোগীদের সুষ্ঠু পরিষেবা দেওয়া সম্ভব হচ্ছে না। এক চিকিৎসক জানান, সঙ্কটজনক অবস্থায় কোন‌ও রোগী সন্ধ্যার পরে ভর্তি হলে তাঁরা বাইরে থেকে রক্ত পরীক্ষা করানোর পরামর্শ দিতে বাধ্য হচ্ছেন। ওই চিকিৎসকের

কথায়, “ডেঙ্গি বা ডায়রিয়ায় আক্রান্ত কোনও রোগী সঙ্কটজনক অবস্থায় মাঝরাতেও ভর্তি হতে পারেন। তখন রক্ত পরীক্ষার প্রয়োজন হলে কোথায় পাঠাব?”

বাইরে রক্ত পরীক্ষা করানোর পরামর্শ দেওয়ার বিড়ম্বনাও আছে। সরকারি হাসপাতালে সব পরিষেবা যে বিনামূল্যে মেলে, তা নিয়ে নিরন্তর প্রচার চলছে। তা হলে রক্ত পরীক্ষা করানোর জন্য কেন হাসপাতালের বাইরে যেতে হবে, সেই প্রশ্ন তুলছেন রোগীর পরিজনেরা। চিকিৎসকদের একাংশ জানান, রোগীর বাড়ির লোকজন হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের কোন‌ও কারচুপি রয়েছে বলে অভিযোগ পর্যন্ত করতেও ছাড়ছেন না।

আইডি হাসপাতাল সূত্রের খবর, রাতেও প্যাথলজি বিভাগ চালু রাখার জন্য এক সময়ে চুক্তির ভিত্তিতে দু’জন মেডিক্যাল টেকনোলজিস্ট নেওয়া হয়েছিল। কিন্তু তাঁদের পারিশ্রমিক সংক্রান্ত বিলে স্বাস্থ্য ভবন সিলমোহর না দেওয়ায় তাঁরা কাজ ছেড়ে দেন।

স্বাস্থ্য ভবন জানাচ্ছে, এমতাবস্থায় পরিস্থিতি সামাল দিতে গত ১৪ অগস্ট শহরের বিভিন্ন মেডিক্যাল কলেজ থেকে চার জন মেডিক্যাল টেকনোলজিস্টকে (ল্যাব) অবিলম্বে বেলেঘাটা আইডি-তে যোগ দেওয়ার জন্য বিজ্ঞপ্তি জারি করা হয়েছে। কিন্তু কলকাতা মেডিক্যাল, এন‌ আর‌ এস, আর জি কর এবং ন্যাশনাল মেডিক্যাল কলেজ থেকে ওই চার জন এখনও পর্যন্ত কাজে যোগ দেননি। মাত্র আট জন কর্মী নিয়ে চলছে প্যাথলজি বিভাগ। ফলে বেহাল পরিষেবার‌ও বদল ঘটেনি।

যদিও বেলেঘাটা আইডি হাসপাতালের অধ্যক্ষা অণিমা হালদার বলেন, “এ নিয়ে অযথা জলঘোলা করা হচ্ছে। রোগীর পরিষেবায় যাতে ঘাটতি না হয়, সে ব্যাপারে স্বাস্থ্য ভবন সব সময়ে সক্রিয়। সরকারি ব্যবস্থায় এ ধরনের ছোটখাটো সমস্যা হয়, আবার মিটেও যায়।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন