শোকার্ত বরদানের (ডান দিকে) মা রীতা শর্মা। সোমবার। নিজস্ব চিত্র
রাস্তার ধারে খেলতে খেলতে পিছলে পড়ে গিয়েছিল শিশুটি। ওঠার সময়ে আঁকড়ে ধরেছিল পাশে থাকা ফ্রিজের তার। তাতেই ঘটে গেল চরম বিপত্তি! সোমবার দুপুর পৌনে দু’টো নাগাদ কালীঘাটের সদানন্দ রোডের ধোবিতলা বস্তিতে ফ্রিজের তারে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে মৃত্যু হয়েছে বছর দুয়েকের শিশুটির। পুলিশ জানায়, মৃতের নাম বরদান শর্মা ওরফে চিকু। ঘটনার পরে তাকে পরিবারের লোকেরা এসএসকেএম হাসপাতালে নিয়ে যান। সেখানেই চিকিৎসকেরা তাকে মৃত বলে ঘোষণা করেন। দেহটি ময়না-তদন্তে পাঠানো হয়েছে।
এই ঘটনায় গাফিলতির অভিযোগ উঠেছে বরদানের জেঠা মিথিলেশ শর্মার বিরুদ্ধে। স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, বাড়ির পাশেই মিথিলেশের একটি দর্জির দোকান রয়েছে। সেখানে তিনি ঠান্ডা পানীয়ের ব্যবসাও করেন। ঠান্ডা পানীয়ের ফ্রিজটি দীর্ঘদিন ধরেই ফুটপাতে রাখা ছিল। তা নিয়ে আপত্তি উঠলেও কান দেননি তিনি। এ দিন ওই ফ্রিজের তার থেকেই বিপদ ঘটেছে। সন্ধ্যায় বরদানের বাবা সুশীল শর্মা থানায় অভিযোগ জানাতে যান। মিথিলেশকে আটক করে নিয়ে যায় পুলিশ। বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে ফ্রিজটিও।
ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী বরদানের সাত বছরের দিদি সোনাক্ষী। সে জানায়, ভাইয়ের সঙ্গে সে ফুটপাতে খেলছিল। এমনই সময়ে ফুটপাতের ধারে গিয়ে হঠাৎ জলে পিছলে পড়ে যায় বরদান। পাশে থাকা ফ্রিজের তার ধরে উঠতে গেলে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয় সে। সোনাক্ষীর চিৎকার শুনে তার জেঠার মেয়ে রানি এসে ফ্রিজের সুইচ বন্ধ করে দেয়। সঙ্গে সঙ্গে বরদানকে একটি অটোয় চাপিয়ে হাসপাতালে নিয়ে যান তাদের মা রীতাদেবী। সঙ্গে যান কয়েক জন পড়শিও। বরদানের বাবা সুশীলের বাঁশদ্রোণী এলাকায় একটি সাইকেল সারাইয়ের দোকান রয়েছে। এ দিন ঘটনার পরে তিনি বলেন, ‘‘ফোনে ঘটনাটি শুনে আমি ফিরে আসি। কিন্তু তত ক্ষণে সব শেষ!’’ বিহার থেকে ভাইদের রাখি পরাতে এসেছিলেন বরদানের পিসি রেখাদেবী। তিনি বলেন, ‘‘রাখিতে আনন্দ করব বলে এলাম। কিন্তু কী ঘটে গেল!’’