সচেতনতায় ফাঁক, ডেঙ্গির বিপদ বাড়ছে নিউ টাউনে

এনকেডিএ সূত্রের খবর, এক ব্যক্তির বাড়িতে রাখা ঘটের জলেও লার্ভা পেয়েছে এনকেডিএ-র পতঙ্গ নিয়ন্ত্রণ দল। বস্তুত, সেখানে জলা জমির উপরে একাধিক পরিবার যে ভাবে থাকছে, তাতে লার্ভা পেতে বিশেষ অসুবিধে হওয়ার কথা নয়। জল জমানোর অভ্যাস তো আছেই, সঙ্গে বাড়ির তলার জলা জমিতেই ফেলা হয় আবর্জনা। স্থানীয় বাসিন্দা প্রিয়লাল বারুই বলেন, ‘‘পঞ্চায়েতের তরফে আবর্জনা সংগ্রহের ব্যবস্থা নেই। এনকেডিএ-ও আমাদের আবর্জনা নেয় না। আবর্জনা ফেলব কোথায়?’’

Advertisement

সৌরভ দত্ত

শেষ আপডেট: ১৩ অগস্ট ২০১৮ ০৩:৫৬
Share:

ডাস্টবিনের জমা জলে লার্ভা। নিউ টাউনে। নিজস্ব চিত্র।

নিউ টাউনে গোকুলে বাড়ছে এডিস ইজিপ্টাইয়ের লার্ভা!

Advertisement

গোকুলই বটে। তালিকা অনুযায়ী বাগজোলা খাল সংলগ্ন রামকৃষ্ণ পল্লি, বিবেকানন্দ পল্লির বাসিন্দারা জ্যাংড়া-হাতিয়াড়া দু’নম্বর পঞ্চায়েতের ভোটার। সেই পল্লির বাসিন্দাদের বাড়ির বেড়া যেখানে শেষ হচ্ছে, সেটিই আবার নিউ টাউন কলকাতা ডেভেলপমেন্ট অথরিটির (এনকেডিএ) অন্তর্গত এবি ব্লক। সেই ব্লকে স্ট্রিট নম্বর একশোয় সন্ধান মিলল ডেঙ্গি সংক্রমণের জীবাণু বহনকারী এডিস ইজিপ্টাই ও ম্যালেরিয়ার বাহক কিউলেক্সের লার্ভার। সেখানে এক ব্যক্তির মোবাইল ফোনের দোকানের কোণায় রাখা ডাস্টবিন বৃষ্টির জমা জলে একেবারে টইটম্বুর। সেই জলেই নিশ্চিন্তে ঘুরে বেড়াচ্ছে মশার লার্ভা!

এনকেডিএ সূত্রের খবর, এক ব্যক্তির বাড়িতে রাখা ঘটের জলেও লার্ভা পেয়েছে এনকেডিএ-র পতঙ্গ নিয়ন্ত্রণ দল। বস্তুত, সেখানে জলা জমির উপরে একাধিক পরিবার যে ভাবে থাকছে, তাতে লার্ভা পেতে বিশেষ অসুবিধে হওয়ার কথা নয়। জল জমানোর অভ্যাস তো আছেই, সঙ্গে বাড়ির তলার জলা জমিতেই ফেলা হয় আবর্জনা। স্থানীয় বাসিন্দা প্রিয়লাল বারুই বলেন, ‘‘পঞ্চায়েতের তরফে আবর্জনা সংগ্রহের ব্যবস্থা নেই। এনকেডিএ-ও আমাদের আবর্জনা নেয় না। আবর্জনা ফেলব কোথায়?’’

Advertisement

জঞ্জাল সংগ্রহের পরিকাঠামো যে অপ্রতুল, তা মেনে নিয়েছেন স্বাস্থ্য ভবনের কর্তারা। কিন্তু তাঁদের বক্তব্য, সে জন্যই বছরের শুরু থেকে ডেঙ্গি নিয়ন্ত্রণে বাড়ি বাড়ি সমীক্ষার কাজে জোর দেওয়া হয়েছে। এখানেও এনকেডিএ সমস্যায় জর্জরিত বলে জেলা স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে খবর। স্বাস্থ্য ভবনের আধিকারিকদের দাবি, বাড়ি বাড়ি সমীক্ষার কাজে যে টাকা দেওয়া হয়, তাতে নিউ টাউনে কর্মী মিলছে না। ফলে নজরদারিতে ফাঁক থাকছে। স্বাস্থ্য ভবন সূত্রের খবর, এনকেডিএ এলাকায় অগস্টের প্রথম সপ্তাহে ৮.৯৩ শতাংশ ঘর সমীক্ষার আওতার বাইরে থেকেছে। নিউ টাউনের আবাসনগুলিতে ঢোকার ক্ষেত্রেও কর্মীরা বাধা পাচ্ছেন বলে অভিযোগ। যদিও একাধিক আবাসনের সম্পাদক-সভাপতিরা তা মানতে নারাজ।

এক স্বাস্থ্যকর্তা বলেন, ‘‘জ্যাংড়া-হাতিয়াড়া পঞ্চায়েতের পরিস্থিতি রাজারহাটের বিডিও-কে জেলাশাসক দেখতে বলেছেন। আবাসনগুলিতে ঢোকার সমস্যা মেটাতে জেলাশাসকের তরফে চিঠি দেওয়া হতে পারে।’’

ঘরে ঘরে সমীক্ষায় কর্মীর অপ্রতুলতার কথা অস্বীকার করে এনকেডিএ-র এক কর্তা বলেন, ‘‘ডেঙ্গি নিয়ন্ত্রণ কর্মসূচিতে আমাদের কোনও সমস্যা নেই।’’ হিডকো-র চেয়ারম্যান দেবাশিস সেনের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি ফোন ধরেননি। মেসেজেরও জবাব দেননি।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন