ডায়মন্ড হারবার রোড

রাজপথ যেন নরক, দায় নিয়ে চাপান-উতোর

গোটা বর্ষাকালটা জুড়েই জলে হাবুডুবু। কাদা প্যাচপ্যাচে এই রাস্তায় পা হড়কে পড়ার ঘটনা যেমন বিরল নয়, তেমনই ভরা জলে খানাখন্দে পড়ে গাড়ি খারাপের ঘটনাও প্রায় রোজকার ব্যাপার। রাস্তার পাশেই জঞ্জালের স্তূপে অবাধে ঘুরে বেড়ায় শুয়োর। এমনই হাল মাঝেরহাট সেতু লাগোয়া ডায়মন্ড হারবার রোডের। এই রাস্তার শেষেই রয়েছে একটি বেসরকারি স্কুল।

Advertisement

কৌশিক ঘোষ

শেষ আপডেট: ১৭ জুলাই ২০১৫ ০০:৫৫
Share:

খন্দপথেই যাতায়াত। ছবি: অরুণ লোধ।

গোটা বর্ষাকালটা জুড়েই জলে হাবুডুবু। কাদা প্যাচপ্যাচে এই রাস্তায় পা হড়কে পড়ার ঘটনা যেমন বিরল নয়, তেমনই ভরা জলে খানাখন্দে পড়ে গাড়ি খারাপের ঘটনাও প্রায় রোজকার ব্যাপার। রাস্তার পাশেই জঞ্জালের স্তূপে অবাধে ঘুরে বেড়ায় শুয়োর। এমনই হাল মাঝেরহাট সেতু লাগোয়া ডায়মন্ড হারবার রোডের। এই রাস্তার শেষেই রয়েছে একটি বেসরকারি স্কুল।

Advertisement

রয়েছে কয়েকটি অফিসও। ফলে, যাতায়াতের পথে অসুবিধায় পড়তে হয় ছাত্রছাত্রী, তাদের অভিভাবক-সহ অফিস যাত্রীদেরও।

কলকাতা পুর-কর্তৃপক্ষের সাফ জবাব, এই রাস্তা কলকাতা বন্দর কর্তৃপক্ষের। কাজেই, রাস্তা সারানো ও তার মেরামতির যাবতীয় কাজ তাঁদেরই করতে হবে। কলকাতা পুরসভার রাস্তা দফতরের মেয়র পারিষদ রতন দে বলেন, ‘‘এই রাস্তা বন্দর দফতরের। নিয়মানুযায়ী এই রাস্তা তাদেরই দেখার কথা। সে ক্ষেত্রে, যদি বন্দর কর্তৃপক্ষ পুরসভাকে রাস্তা মেরামতি করতে নির্দেশ দেন, তা হলে পুরসভা এই রাস্তা মেরামতি করবে।’’

Advertisement

মাঝেরহাট সেতুর পাশ দিয়ে এই রাস্তা সরাসরি এসে মিশেছে মোমিনপুরে। সেতুর নীচে রাস্তার উপরেই রাখা বড় বড় ক্রেন। স্কুলের অভিভাবকদের অধিকাংশের বক্তব্য, বর্ষাকাল ছাড়া অন্য সময়েও এই রাস্তায় গাড়ি চালানো কার্যত অসম্ভব। ওই এলাকার এক স্কুলের এক অভিভাবক বিকাশ জৈন বলেন, ‘‘গত কয়েক দিন আগের বৃষ্টিতে এই রাস্তায় এতটাই জল জমে গিয়েছিল যে আমার গাড়ি জলে ডুবে যাওয়ার উপক্রম হয়। বাধ্য হয়েই অর্ধেক রাস্তা থেকে গাড়ি ঘুরিয়ে চলে যেতে হয়েছিল।’’

ওই স্কুলেরই অন্য এক অভিভাবক বিপাশা কুমার বলেন, ‘‘রাস্তা খারাপের সঙ্গে রয়েছে জঞ্জাল আর অবাধ শুয়োর বিচরণ। ফলে, এখানে স্কুলের কচিকাঁচাদের অসুস্থ হওয়ার আশঙ্কাও উড়িয়ে দেওয়া যায় না।’’ যদিও ওই স্কুল কর্তৃপক্ষ এই ব্যাপারে কোনও মন্তব্য করতে চাননি।

স্থানীয় কাউন্সিলর তথা কলকাতা পুরসভার মেয়র পারিষদ (শহর রোজগার যোজনা) রাম পিয়ারি রাম জানান, এই এলাকা বন্দরের হওয়ায় রাস্তা মেরামতির ব্যাপারে একটি তালিকা তৈরি করে বন্দর কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছিল। সেই মোতাবেক বন্দরের এই রাস্তা মেরামতির কথা। কিন্তু এই অংশে এখনও পর্যন্ত কাজ হয়নি। এমনকী, জঞ্জাল পরিষ্কারের দায়িত্বও আইনত বন্দরের উপরেই বর্তায়। রামবাবু জানান, এই রাস্তার আশপাশে যে অফিস রয়েছে, তারা নিজেরাই এই জঞ্জাল পরিষ্কার করে। পুরসভাও এই ব্যাপারে তাদের সাহায্য করে। পুরসভা সূত্রে খবর, কিছু দিন আগে শুয়োর সরানোর ব্যবস্থাও হয়েছিল। কিন্তু তার পরেও অবস্থার কোনও পরিবর্তন হয়নি।

কলকাতা বন্দর কর্তৃপক্ষ কী ব্যবস্থা নিয়েছেন? তাঁদের বক্তব্য, মাঝেরহাট স্টেশনের পাশের রাস্তায় ইতিমধ্যেই কাজ শুরু হয়েছে। ব্রিজের পাশের রাস্তার মেরামতির ক্ষেত্রেও আলোচনা হয়েছে। তবে, জঞ্জাল অপসারণ নিয়ে কর্তৃপক্ষ কোনও মন্তব্য করতে নারাজ।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন