Coronavirus Third Wave

COVID-19: তৃতীয় ঢেউ ভাঙবে কে? জিনের উপর নজরদারি আর টিকাতেই জোর দিচ্ছেন চিকিৎসকরা

করোনার বিভিন্ন ‘রূপের’ উপর কঠোর নজরদারি প্রয়োজন। সঙ্গে টিকা করণের মাধ্যমে শরীরে তৈরি করতে হবে করোনার প্রতিরোধ ক্ষমতা।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ১০ জুলাই ২০২১ ১৯:০৮
Share:

প্রতীকী ছবি।

যে কোনও সময় করোনার তৃতীয় ঢেউ আছড়ে পড়তে পারে রাজ্যে। সেই ঢেউয়ের উচ্চতা নিয়ে প্রশ্ন থাকলেও প্রস্তুতি খামতি দিতে চাইছে না স্বাস্থ্য দফতর। করোনার দ্বিতীয় ঢেউয়ের প্রায় ২৬ হাজার বেড করোনা চিকিৎসার জন্য বরাদ্দ ছিল। তৃতীয় ঢেউ মোকাবিলায় বেড সংখ্যা বাড়িয়ে ৩০ থেকে ৩২ হাজার করা হবে বলে জানান স্বাস্থ্য অধিকর্তা অজয় চক্রবর্তী। শুধু ওষুধ আর বেডের সংখ্যা বাড়িয়ে করোনার সঙ্গে যুদ্ধ বেশি দিন চালানো সম্ভব নয় বলে মনে করছেন বিষেশজ্ঞরা। বিশ্বের বিভিন্ন কোনায় যে ভাবে করোনা তার নতুন প্রজাতি বা রূপে দেখা দিচ্ছে তাতে তৃতীয় ঢেউ মোকাবিলায় গোয়েন্দার মতো করোনার বিভিন্ন ‘রূপের’ উপর কঠোর নজরদারি প্রয়োজন। সঙ্গে ‘সিন্থেটিক এবং টেম্পোরারি ইমিউনিটি’ বা টিকাকরণের মাধ্যমে শরীরে তৈরি করতে হবে করোনার প্রতিরোধ ক্ষমতা।

Advertisement

রাজ্যের করোনা মোকাবিলায় গঠিত গ্লোবাল অ্যাডভাইসারি বোর্ডের সদস্য সুকুমার মুখোপাধ্যায়ের মতে দৈনিক আরও বেশি টিকাকরণ করতে হবে। ‘‘ জিন সিকোয়েন্সিং বা জিন বিশ্লেষণের তথ্য এবং কোভিড টিকাকে ঢাল করেই আমাদের করোনার সঙ্গে তৃতীয় বার যুদ্ধে নামতে হবে। গ্লোবাল বোর্ডের বৈঠকেও করোনার তৃতীয় ঢেউ নিয়ে আলোচনা করোছি আমরা। দ্রুত প্রেগন্যান্ট মহিলাদের টিকাকরণ সহ জেলায় জেলায় দু’টি টিকা নিশ্চিত করতে হবে।’’

স্বাস্থ্য দফতরের তথ্য অনুযায়ী শুক্রবার পর্যন্ত রাজ্যে ২ কোটি ৩৮ লক্ষ ৪৮ হাজার টিকাকরণ হয়েছে। টিকার দু’টি ডোজ যেমন করোনার বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তোলার পাশাপাশি অনেক ক্ষেত্রে করোনা আক্রমণ করলেও তা রোগীকে কাবু করতে পারে নি। চিকিৎসক দীপ্তেন্দ্র সরকারের মতে, দেশের জনসংখ্যার ৭০ থেকে ৮০ শতাংশ করোনা টিকা পেলে করোনার আগামী ঢেউকে আটকানো যেতে পারে। ‘‘একটি ঢেউয়ের ৩ থেকে ৪ মাসের মাথায় পরের ঢেউ আসার সম্ভাবনা প্রবল।’’ মাঝের এই সময়ের জোরদার টিকাকরণ প্রক্রিয়া চালাতে টিকার যোগান বাড়াতে হবে কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রককে। টিকাকরণ ছাড়া করোনা থেকে দ্রুত মুক্তির পথ নেই বলেও মনে করেন দীপ্তেন্দ্র। যত দ্রুত এবং বেশি মানুষ করোনার টিকা পাবেন তত তাড়াতাড়ি করোনার জাল ছিঁড়ে মুক্তি পাওয়া যাবে।

Advertisement

মৃদু উপসর্গ বা উপসর্গহীন করোনা রোগীদের ক্ষেত্রে ৩ মাস পর্যন্ত করোনার বিরুদ্ধে অ্যান্টিবডি মিলেছে বলে টোকিওর এক গবেষণায় উঠে এসেছে। উপসর্গ যুক্ত এবং গুরুতর অসুস্থদের ৯০ শতাংশ ক্ষেত্রে সেই সময় বেড়ে ১০ থেকে ১১ মাস পর্যন্ত হতে পারে। ভাইরাস অল্প সময় মাথা নীচু করে থাকছে তা বলে পালিয়ে গেছে ভাবা ভুল হবে বলে মনে করেন চিকিৎসক কুণাল সরকার। দেশের ৫ শতাংশ করোনা পরীক্ষা সেম্পেলের জিন সিকোয়েন্সিঙের কথা বলা হলেও বাস্তব চিত্র নিয়ে প্রশ্ন তোলেন তিনি। তাঁর অভিযোগ, ‘‘ মোট সেম্পেলের .১ শতাংশ ও জিন সিকোয়েন্সিং করা হচ্ছে না। আমাদের রাজ্যে কল্যাণীতেই শুধু জিন বিশ্লেষণের কাজ হচ্ছে। জিন বিশ্লেষণ ছাড়া করোনার নতুন কোনও প্রজাতি দেশেবাসীর শরীরে বাসা বাধছে কী না তা বোঝার উপায় নেই। করোনার সঙ্গে লড়তে হলে করোনার সব রূপের উপর নজারদারি চালাতে হবে।’’ করোনার মিউটেশন নিয়ে অযথা আতঙ্কিত না হয়ে গ্রামেও জিন সিকোন্সিং-য়ের উপর জোর দিতে হবে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন